নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
স্পোর্টস রিপোর্টার : প্রধান কোচ চন্ডিকা হাতুরুসিংহে না থাকায় ত্রিদেশীয় ও শ্রীলঙ্কা সিরিজে টেকনিক্যাল ডিরেক্টরের আদলে দল পরিচালনার দায়িত্ব পান খালেদ মাহমুদ সুজন। তার অধীনে ঘরের মাঠে ফেভারিট থেকেও ত্রিদেশীয় সিরিজে চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি বাংলাদেশ। হেরে যায় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজও। গতকাল টি-টোয়েন্টি দলের অনুশীলনের শুরুর দিন কথা বলতে এসে সব বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে আবেগী হয়ে যান জাতীয় দলের সাবেক এই অধিনায়ক। মাঠের বাইরের ইস্যুতে তাকে নিয়ে গণমাধ্যম ও সোশ্যাল মাধ্যমে কথা উঠায় ক্ষোভ জানিয়েছেন বাংলাদেশ সুজন। সেই সঙ্গে আবেগ মিশ্রিত সুরে তিনি আর বাংলাদেশের ক্রিকেটের সঙ্গে কাজ করার অনাগ্রহের কথাও জানিয়েছেন।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মিরপুর টেস্টে দুই ইনিংসেই ব্যাটিং ধস নামে বাংলাদেশের। দুই ইনিংস মিলিয়েই দল খেলতে পারেনি ৮০ ওভারও। ত্রিদেশীয় কাপেও লঙ্কানদের বিপক্ষে একশো রানের নিচে অলআউট হয়েছিল। ফাইনালে ২২২ রান তাড়া করতেও জিততে পারেনি। সব মিলিয়ে ব্যর্থতার সিরিজের পর কি তিনি আর দায়িত্বে থাকবেন? এমন প্রশ্নে মাহমুদের জবাব, ‘ব্যক্তিগতভাবে আমি আর আগ্রহী না। আমার আসলে বাংলাদেশ ক্রিকেটের সঙ্গেই কাজ করতে ইচ্ছে করছে না। আমার আসলে নোংরা লাগছে সত্যি কথা বলতে গেলে। এতবছর বাংলাদেশ ক্রিকেটের সঙ্গে কাজ করছি, বাংলাদেশের উন্নতির জন্যই কাজ করছি। এখানে আমার কোন স্বার্থ নাই।’
গণমাধ্যম সন্দেহপ্রবণ হয়ে পড়েছে কিনা, গণমাধ্যমের কারণে দেশের ক্রিকেট আটকে আছে কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন মাহমুদ, ‘মিডিয়াতে যেভাবে লেখা হয়। আমাদের ক্রিকেটের বড় অন্তরায় হচ্ছে...মিডিয়ারও একটা ব্যাপার আছে যে আমরা এত সন্দেহপ্রবণ হয়ে যাচ্ছি আসলে। এখন মিডিয়া সন্দেহপ্রবণ। মিডিয়ার কারণে আমাদের ক্রিকেট আটকায়ে আছে কিনা সেটাও কিন্তু প্রশ্ন। ক্রিকেট আমরা এতবছর ধরে খেলতেছি। এখন এত গালগপ্পো। মিডিয়াতে ভাল খারাপ সবই হবে। কিন্তু কিছু কিছু জিনিস নেতিবাচক হয়ে যাচ্ছি। ক্রিকেটের জন্য খুব কঠিন।’
চট্টগ্রাম টেস্টে ৫৩ বলে ৮ রান করে দলের ড্র করায় ভূমিকা রেখেছিলেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। ঢাকায় তাকে না রেখে খেলানো হয় সাব্বির রহমানকে। টেস্ট চলাকালীন স্কোয়াডে থাকলেও তিন ক্রিকেটার মোসাদ্দেক, কামরুল ইসলাম ও নাঈম হাসানকে প্রিমিয়ার লিগ খেলার জন্য ছেড়ে দেওয়া হয়। কয়েকটি গণমাধ্যমে প্রশ্ন উঠে আবাহনীর হয়ে খেলানোর জন্যই কী ঢাকা টেস্টে রাখা হয়নি মোসাদ্দেককে। এই প্রসঙ্গ টেনে এনে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালকসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা মাহমুদ এমন গুরুতর অভিযোগে আহতও হওয়ার কথা জানান, ‘টেকনিক্যাল হয়ত খারাপ হতে পারি। কিন্তু অন্য বিষয় নিয়ে যখন কথা বলে তখন এটা আমাকে খুবই আহত করে। আমি আবাহনীর হেড কোচ। আমি মোসাদ্দেককে খেলাই নাই এই কারণে যে আবাহনীতে খেলার জন্য। যখন ন্যাশনাল ইন্টারেস্ট নিয়ে কথা বলে তখনই এটা খুবই আহত করে। আমি মনে করি না বাংলাদেশের থেকে আবাহনী বা অন্য কিছু আমাকে টাচ করতে পারে। জীবনেও ছুঁতে পারবে না, ছুঁতে পারেওনি। আমি তো গড না। আমি তো খালেদ মাহমুদ সুজন। আমি খুবই সামান্য একটা মানুষ। আমি মনে করি আমার সামর্থ্য কম। আমি এখানে দাঁড়িয়ে কাজ করেছি মানুষ স্বীকার করুক না করুক আমি এটা ভালোবাসি।’
আগামী মাসের শ্রীলঙ্কা সফরের ত্রিদেশীয় নিদাহাস ট্রফির আগে বাংলাদেশ দলের প্রধান কোচ পাওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। সেক্ষেত্রে হয়ত টেকনিক্যাল ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ ও সহকারী কোচ রিচার্ড হ্যালসলের ম্যানেজমেন্টকেই রেখে দেবে বিসিবি। মাহমুদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল পরের সিরিজেও তার দায়িত্বে থাকার সম্ভাবনা নিয়ে। কিন্তু নিজের অনাগ্রহের কথা জানিয়ে মাহমুদ উগরে দিলেন ক্ষোভ, ‘নিদাহাস কাপে বোর্ড ঠিক করবে (দায়িত্বে কে থাকবে)। কারণ বোর্ডই আমাকে এই দায়িত্ব দিয়েছে। কাজ করব না, এই কথা আমি কখনোই করতে চাই না। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, বাঙালি কেউ কাজ করলেই সবচেয়ে বড় সমস্যা। দল হেরে যাওয়ার পরও যে আমি এই দেশে আছি, এটাই বড় কথা। চন্ডিকা (হাতুরুসিংহে) যখন প্রথম এলো, আরও বড় বড় কোচ এসেছে, তখনও শুরুতে ফল খারপ হয়েছে। কিন্তু এ রকম হয়নি।’
নিজের দোষের দায় নিতে প্রস্তুত, তবে সমালোচলার জায়গাতে আরো সচেতন হবার দরকার ছিল বলেও মনে করেন সাবেক এই অধিনায়ক, ‘খারাপ ফলের দায় আমি নিতেই পারি। আমাদের পরিকল্পনায় ভুল থাকতে পারে, আরও কিছু থাকতে পারে। কিন্তু আরও অনেক ঘটনা তো আসে (মিডিয়ায়)। আমার ওপরও অনেক দায় আসে। এটা আমি বোর্ডকে বলব। ব্যক্তিগতভাবে আমি একটুও আগ্রহী নই (চালিয়ে যেতে)। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সঙ্গে আমার কাজ করতে ইচ্ছেই করছে না। নোংরা লাগছে জায়গাটা।’ নোংরা জায়গাটা কেমন, সেই ব্যাখ্যা চাওয়া হলে খালেদ মাহমুদ একহাত নিলেন সংবাদমাধ্যমকে, ‘অন্য কিছু নয়। বলার কিছু নেই। আপনারাও জানেন, আমরাও জানি। নোংরা বলতে গেলে যে, মিডিয়ায় যেভাবে বলা হয়, আমাদের ক্রিকেটের একটা বড় অন্তরায় মিডিয়াও। আমরা এত ‘ফিশি’ হয়ে যাচ্ছি আস্তে আস্তে, মিডিয়ার কারণে আমাদের ক্রিকেট আটকে আছে কিনা, সেটাও একটা প্রশ্ন এখন আমার কাছে।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।