গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতালের ভুল চিকিৎসায় তরুণ সাংবাদিক আবদুর রাকিব আসাদের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। স্বজনদের অভিযোগ, হাসপাতালের গ্যাস্ট্রোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. হাবিবুর রহমানের গাফলতির কারণে সাংবাদিক আসাদের মৃত্যু ঘটেছে। এ বিষয়টি বিচারবিভাগীয় তদন্তের কমিটি গঠনের দাবি সহ দায়ী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রী, স্বাস্থ্যমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, পুলিশের আইজি ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন তার পরিবার।
রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন মিলনায়তনে আসাদের পরিবার এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানায়।
লিখিত বক্তব্যে আসাদের ভগ্নীপতি সিরাজ বেপারি বলেন, আসাদ জন্ডিসে আক্রান্ত হয়ে মুগদা হাসপাতালে ভর্তি হন। মুগদা হাসপাতালে দীর্ঘ ১৫ দিন যাবত চিকিৎসা নেওয়ার পরও তার স্বাস্থ্যের উন্নতি না হলে তিনি শাহজাহানপুরের ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালের কনসালটেন্ট ও মিটফোর্ড হাসপাতালের গ্যাস্ট্রোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. হাবিবুর রহমানের কাছে চিকিৎসা নেন।
ডা. হাবিবুর রহমান তাকে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তার পিত্তস্থলী চিকন হয়ে গেছে এবং ক্যানসারের আশংকা রয়েছে বলে জানান। এর সমাধান হিসেবে তিনি আসাদকে ইআরসিপি নামক সার্জারি করার পরামর্শ দেন এবং মিটফোর্ড হাসপাতালে ভর্তি হতে বলেন। সাংবাদিক আসাদ তার পরামর্শে মিটফোর্ড হাসপাতালে ভর্তি হন। আসাদের সার্জারির চলাকালে জ্ঞান ফিরে আসে। তার প্রধান কারণ ছিলো তাকে সঠিকভাবে এনেস্থিসিয়া না দেয়া। জ্ঞান ফেরার সঙ্গে সঙ্গে সার্জারির যন্ত্রণায় রোগী চিৎকার শুরু করলে অপারেশন থিয়েটারে অবস্থিত ৭/৮ জন নার্স তাকে চেপে ধরে সার্জারির মেশিনারিজ তার শরীর থেকে বের করেন। এরপর ডাক্তার আমাদের কাছে আসাদের চিকিৎসা দিতে অপারগতা স্বীকার করে বেসরকারি হাসপাতাল বিআরবিতে স্থানান্তরের জন্য বলেন। আমরা তাকে ২৯ জানুয়ারি মিটফোর্ড হাসপাতাল থেকে ইবনে সিনা হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে চিকিৎসক তাকে ত্রিপল বাইপাস মেজর অপারেশন করার পরামর্শ দেন। ৪ ফেব্রুয়ারি ইবনে সিনায় অপারেশন করা হয়। এতে দেখা যায় ভুল ইআরসিপির কারণে আসাদের পিত্তথলী, খাদ্যনালী ও অগ্নাশয় পচে গেছে। যার কারণে সেগুলো তাৎক্ষণিক কেটে ফেলতে হয়। পরে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেয়া হয়। সার্জারি চিকিৎসক মলমূত্র ত্যাগের বিকল্প ব্যবস্থা করে দিলেও অপারেশনের ২৩ ঘণ্টা পরে আসাদের নির্মম মৃত্যু হয়।
সিরাজ বেপারি আরও বলেন, আসাদুজ্জামান রাকিব হেঁটে হেঁটে অপারেশন থিয়েটারে ঢুকেছিলেন। সেই অপারেশনের পরে আর নিজেকে নিজের মাঝে ফিরে পাননি আসাদ। মিটফোর্ড হাসপাতালের গ্যাস্ট্রোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. হাবিবুর রহমান ও তার প্রধান সহযোগী ডাক্তার বিমল চন্দ্র শীলসহ কয়েকজনের গাফলতি ও ভুল চিকিৎসায় তার মৃত্যু হয়েছে।
আসাদুজ্জামান রাকিব ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সদস্য ছিলেন এবং সর্বশেষ প্রজন্মনিউজ২৪ ডটকমের সাংবাদিক ছিলেন। এর আগে ভোরের কাগজ, শীর্ষ নিউজ ডটকমের এবং দিনের আলো পত্রিকায় সাংবাদিকতা করেন। তার গ্রামের বাড়ি শরিয়তপুর জেলার পালং থানার চর সিংগারিয়া গ্রামে। ডাক্তারদের ভুল চিকিৎসাই এই মৃত্যুর একমাত্র কারণে আসাদের অকাল মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে একটি বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন আসাদের ছোট ভাই আমির হোসেন, চাচী হাফসু ও চাচাতো ভাই কবির হোসেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।