নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
আযান হলো মুসলমানদেরর বিজয় ধ্বনি। আযানের ধ্বনি মোমিনের হৃদয় আলোড়িত করে। আযানের বিজয় ধ্বনি মোমিন মুসলমানের হৃদয়ে কম্পন তৈরী করে। আযান মানুষকে দুনিয়া বর্জনের দিকে আহŸান করে। আযান মানুষকে ইহকালিন ও পরোকালিন কল্যাণের পথে আহŸান করে। আযান মানুষকে আল্লাহর সাথে মেরাজ তথা দীদারে আহŸান করে। মুযাজ্জিনের সুমধুর কন্ঠের আযানের ধ্বনি ঐ স্থানে বা এলাকায় মুসলমানদের উপস্থিতি শ্নরণ করিয়ে দেয়। এরশাদ হয়েছে,‘ হে মুমিনগণ! যখন জুমু‘আর দিনে নামাযের জন্য আহŸান করা হয়, তখন তোমরা আল্লাহর শ্নরণের দিকে ধাবিত হও। আর বেচা-কেনা বর্জন কর। এটাই তোমাদেও জন্য সর্বোত্তম, যদি তোমরা জানতে।’ ( সূরা জুমু‘আ:০৯)।
শয়তান মানুষের প্রকাশ্যে শক্রু। শয়তান মানুষের ইহকালিন ও পরোকালিন কলাণের পথে শয়তান বাধা সৃষ্টি করে। এ ইবলিছ শয়তান আযানের ধ্বনিকে ভয় পায়। আযানের ধ্বনি শুনা মাত্রই শয়তান দৌড়ে পালাতে থাকে। আযানের ধ্বনি শয়তানের গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। হযরত জাবির (রা) থেকে বর্ণিত হয়েছে, হযরত রাসূল (সাঃ) এরশাদ করেছেন, শয়তান যখন নামাযের আযান শুনে তখন রাওহা নামক স্থানে পালিয়ে যায়। হযরত সুলাইমান (রা) বলেন, আমি হযরত জাবির (রা)কে রাওহা নামক স্থানের দূরত্ব জিজ্ঞাসা করেছিলাম। তিনি বলেছেন, রাওহা মদিনা থেকে ৩০ মাইল দূরে অবস্থিত। (মুসলিম শরীফ:৮৫৪)।
দুনিয়ার জিন্দেগীতে ইসলামের বিজয় ধ্বনি যার কন্ঠে প্রচারিত হবে; কিয়ামত দিবসে সৃষ্টি জগতের পাহাড়-পর্বত, নদ-নদী, পশু-পাখি, সাপ-বিচ্ছু, চন্দ্র-সূর্য, তরুলতা, আকাশ-বাতাস সাক্ষ্য প্রদান করতে থাকবে। যিনি বিজয় ধ্বনি প্রচার করেন কিংবা আযান দেন তাকে মুয়াজ্জিন বলা হয়। হযরত আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত হয়েছে, হযরত রাসূল (সাঃ) এরশাদ করেছেন, মুয়াজ্জিনের গোনাহ ঐ পর্যন্ত মাফ করে দেয়া হয়, যে পর্যন্ত তার আযানের আওয়াজ পৌছে। আর প্রত্যেক প্রাণী এবং নিষ্প্রাণ যারাই মুয়াজ্জিনের আযান শুনতে পাবে সকলেই তার জন্য সাক্ষ্য দিবে। মুয়াজ্জিনের আযান শুনে যারা নামায পড়তে আসে তাদের সাওয়াব ২৫ গুণ বৃদ্ধি করে দেয়া হয়। এবং এক নামায থেকে বিগত নামাযের মধ্যবর্তী সময়ের সমস্ত গোনাহ মাফ করে দেয়াহয়। (আবু দাউদ শরীফ:৫১৫)। হযরত বারা ইবনে আযিব (রা) থেকে বর্ণিত হয়েছে, হযরত রাসূল (সাঃ) এরশাদ করেছেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা এবং তাঁর ফেরেশতাগণ প্রথম কাতারে নামায আদায়কারীদের উপর রহমত নাযিল করেন। আর মুয়াজ্জিনের আযানের ধ্বনি যত বেশী হয় সে অনুযায়ী তার গোনাহ ক্ষমা করে দেয়া হয়। যে সকল প্রাণী এবং নিষ্প্রাণ বস্তু তার আওয়াজ শুনতে পায় সকলে তার সত্যতার সাক্ষ্য প্রদান করে। আর মুয়াজ্জিন সেসব নামাযিদের সমপরিমান সাওয়াব লাভ করে যারা তার সাথে জামা‘আতে নামায আদায় করে। ( নাসাঈ শরীফ:২৫৪)। হযরত মুয়াবিয়া (রা) বর্ণিত হয়েছে, হযরত রাসূল (সাঃ) এরশাদ করেছেন, কিয়ামতের দিন মুয়াজ্জিনগণ সর্বাপেক্ষা দীর্ঘ গর্দান বিশিষ্ট হবেন। (মুসলিম শরীফ:৮৫২)।
আযানের ফজিলত বলে কিংবা লিখে শেষ করা যাবে না। মানুষ যদি আযানের ফজিলত সম্পর্কে পুরোপুরি জানতো; তাহলে আযান দেয়ার জন্যে লটারী করার প্রয়োজন হতো। আযানের দেয়ার সৌভাগ্যে যে কারো হয় না। হযরত আবু হোরায়ারা (রা) থেকে বর্ণিত, হযরত রাসূল (সা) এরশাদ করেছেন, যদি লোকেরা বিষয়টি জানতো যে, আযান দেয়া এবং নামাযে প্রথম কাতারে দাঁড়ানো কতো সওয়াব এবং সাথে সাথে এটাও জানতো যে লটারী ব্যতীত তা লাভ করা সম্ভব নয়, তবে অবশ্যই মানুষ লটারীর সাহায্য নিতো। (বুখারী: ৫৮৮)। হযরত উকবা ইবনে আমির (রা) থেকে বর্ণিত হযরত রাসূল (সা) এরশাদ করেছেন, তোমরা প্রভূ ঐ বকরী চারক রাখালের প্রতি অত্যন্ত খুশি হন । যখন সে পাহাড়ের চুড়ায় একাকী আযান দিয়ে নামায আদায় করে। তখন আল্লাহ তা‘আলা ফেরেশতাদের ডেকে বলেন, তোমরা আমার ঐ বান্দার দিকে লক্ষ করো, সে আযান দিয়ে নামায আদায় করছে, সে আমার ভয়েই এরূপ করছে। তোমরা সাক্ষী থাকো আমি আমার বান্দাকে ক্ষমা করে দিলাম এবং আমি তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবো।( নাসাঈ, আবূ দাউদ:১২০৩)।
দোয়া কবুল হওয়ার যে কয়েকটি উত্তম মুহুর্ত বা সময়ের কথা কিতাবে বর্ণনা এসেছে। ইহার মধ্যে আযানের সময় দোয়া কবুলের একটি উত্তম সময়। হযরত সাহল ইবনে সা’দ (রা) থেকে বর্ণিত হয়েছে, হযরত রাসূল (সা) এরশাদ করেছেন, দুই সময়ের দোয়া ফেরৎ দেয়া হয় না।১. আযানের সময় এবং২. যখন যুদ্ধ প্রচন্ড আকার ধারণ করে।( আবূ দাউদ:২৫৪)। হযরত আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত হয়েছে, হযরত রাসূল (সা) এরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি সওয়াবের আশায় ৭ বছর আযান দিবে, জাহান্নামের আগুন থেকে ঐ ব্যক্তির মুক্তির পরোয়ানা লিখে দিবে। ( আবূ দাউদ, তিরমিযি: ৬৫পৃ.)। আল্লাহ তা‘আলা সকলকে আযানের কল্যাণ ও ফজিলত দান করুক । আমীন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।