পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নিয়ম অনুযারী বিচারপতি এস কে সিনহা’র অবসর আজ
কে হচ্ছেন প্রধান বিচারপতি। এ নিয়ে আদালত অঙ্গণ থেকে শুরু করে সর্বত্রই চলছে নানামুখী আলোচনা। প্রধান বিচারপতি সাংবিধানিক একটি পদ। রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ এই পদটিতে কে দায়িত্বে আসছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি নাকি আপিল বিভাগের অন্য বিচারপতি তা জানতে কম বেশি সবার মধ্যে এক ধরনের কৌতুহল রয়েছে। সবাই দৃষ্টি রাখছেন বঙ্গভবন, আইন মন্ত্রনালয় এবং সুপ্রিম কোর্টের দিকে। প্রধান বিচারপতি পদের আলোচনায় রয়েছেন (আপিল বিভাগের তিন বিচারপতি) দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি আবদুল ওয়াহহাব মিঞা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন এবং বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। এই তিন বিচারপতির মধ্যে থেকে নতুন প্রধান বিচারপতি নিয়োগ হতে পারে বলে সূত্রে জানা যায়। কবে নাগাদ নিয়োগ হতে পারে তা কেউ সঠিকভাবে বলতে পারছে না। তবে একটি সূত্রে শোনা যাচ্ছে ফেব্রয়ারির শুরুতেই প্রধান বিচারপতি নিয়োগ হতে পারে। যদিও আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, শিগগিরই প্রধান বিচারপতি নিয়োগ করা হবে। তবে কবে নাগাদ হবে এ বিষয়ে সুস্পষ্ট কোন বক্তব্য দেননি। তিনি বলেছেন, এটা প্রেসিডেন্ট জানেন।
সরকারের সঙ্গে বিরোধের জের ধরে ৮১ দিন আগেই বিদেশ থেকে পত্রযোগে পত্র পাঠিয়ে পদত্যাগ করেন প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা। সদ্য পদত্যাগকারী প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা স্বাভাবিক নিয়মে আজ ৩১ জানুযারী অবসরে যেতেন। তার পদত্যাগের পর ২ মাস ২১ দিন অতিক্রম করলেও নতুন করে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দেয়া সম্ভব হয়নি। রাষ্ট্রের গুরুত্বপূন পদটি খালি রাখা একটি অস্বাভাবিক ঘটনা মনে করছেন আইনজ্ঞরা। তাদের মতে, ইতিহাসের বিরল ঘটনা।
প্রধান বিচারপতি নিয়োগ বিশ্লেষণে দেয়া যায়, আপিল বিভাগের সিনিয়র বিচারপতিকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ করার প্রথা যেমন রয়েছে তেমনি তাঁকে ডিঙিয়ে অপেক্ষাকৃত কনিষ্ঠ বিচারপতিকে নিয়োগ দেয়ারও নজির রয়েছে। সূত্রে জানা যায়, প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার ছুটিতে যাওয়ার পর থেকেই আপিল বিভাগের কর্মে প্রবীণতম বিচারপতি আবদুল ওয়াহ্্হাব মিঞা প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালন করছেন। ওই সময় থেকেই প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগের ক্ষেত্রে বিচারপতি আবদুল ওয়াহ্্হাব মিঞার পাশাপাশি বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নাম আসে। তিন জনের মধে থেকে নতুন প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দিতে পারেন সরকার। বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞা ২০১৮ সালের ১০ নভেম্বর অবসরে যাবেন। বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর এবং বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ২০২৩ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর অবসরে যাবেন। এছাড়াও বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলী ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর এবং বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দায় ২০২১ সালের ২৮ ফেব্রæয়ারি অবসরে যাবেন।
বর্তমানে আপিল বিভাগে পাঁচজন বিচারপতি রয়েছেন। ক্রম অনুযায়ী দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মো, আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞা এক নম্বরে, দ্বিতীয় সিনিয়র বিচারক হলেন বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন এবং তৃতীয় অবস্থানে আছেন বিচারপতি মো. ইমান আলী। এছাড়া ক্রম অনুযায়ী আছেন বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার। বিচারপতি আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞা ১৯৮৮-৮৯ এবং ১৯৮৯-৯০ সালে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচিত সম্পাদক ছিলেন। তিনি ১৯৯৯ সালের ২৪ অক্টোবর হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। এর পর ২০০১ সালের ২৪ অক্টোবর তিনি একই বিভাগের স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। ২০১১ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান তিনি। বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ২০০১ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারপতি হন। আর বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট আমলে ২০০৩ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি তিনি একই বিভাগে স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। এর পর ২০১১ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর ২০০৯ সালের ২৫ মার্চ হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি এবং ২০১৩ সালের ৩১ মার্চ আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান।
সূত্রে জানা যায়, প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালনরত বিচারপতি আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞা বিচার বিভাগের সংকটকালিন সময়ে তার ভূমিকা কম নয়। বিশেষ করে সদ্য পদত্যাগী প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার বিরুদ্ধে দুর্নীতিসহ ১১ অভিযোগের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের বিজ্ঞপ্তির বিষয়েও তিনি ভূমিকা পালন করেছেন। এসব বিষয় বিবেচনায় বিচারপতি ওয়াহ্হাব মিঞাকেই দেশের ২২তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে কোনো কারণে বিচারপতি ওয়াহ্হাব মিঞাকে প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেয়া না হলে আপিল বিভাগের দ্বিতীয় সিনিয়র বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনকেই দেশের প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেয়া হতে পারে বলে। তবে নাগাদ প্রধান বিচারপতি নিয়োগ হতে পারে এমন প্রশ্নের আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকদের বলেছেন, শিগগিরই প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দেয়া হবে বলে। গতকাল সচিবালয়ে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান। তবে কবে নাগাদ নিয়োগ দেয়া হচ্ছে- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, যতটুকু বুঝি শিগগিরই হবে। এ সপ্তাহের মধ্যে হবে কি-না জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, এটা প্রেসিডেন্ট জানেন।
২০০৯ সালের ২২ ডিসেম্বর দেশের ১৬তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে অবসরে যান বিচারপতি এম এম রুহুল আমিন। এরপর আপিল বিভাগের সবচেয়ে সিনিযর বিচারপতি মোহাম্মদ ফজলুল করীমকে ডিঙ্গিয়ে বিচারপতি মো. তাফাজ্জাল ইসলামকে দেশের ১৭তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছিল। এরপর ১৮তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয় বিচারপতি মোহাম্মদ ফজলুল করীমকে। তিনি অবসরে যাওয়ার পর আপিল বিভাগের সিনিয়র বিচারপতি এম এ মতিন ও বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মোমিনুর রহমানকে ডিঙ্গিয়ে বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হককে দেশের ১৯তম প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দেয়া হয়। ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলেও বিচারপতি মোহাম্মদ ফজলুল করিমকে ডিঙ্গিয়ে বিচারপতি এম এম রুহুল আমিনকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ করা হয়েছিল। তারও আগে চারদলীয় জোট সরকারের আমলে আপিল বিভাগের সিনিয়র বিচারপতি মো. রুহুল আমিন ও বিচারপতি মোহাম্মদ ফজলুল করিমকে ডিঙ্গিয়ে বিচারপতি কে এম হাসান ও বিচারপতি সৈয়দ জে আর মোদাচ্ছির হোসেনকে পর্যায়ক্রমে দেশের প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দেয়া হয়।
বিচারপতি এস কে সিনহা অবসরে যেতেন আজ : আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেন অবসরে যাওয়ার আপিল বিভাগের সিনিয়র বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাকে সরকার ২১তম প্রধান বিচারপতি পদে নিয়োগ দেন। নিয়ম অনুযারী আজ (৩১ জানুয়ারী) অবসরে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সরকারের সঙ্গ বিলোধের জের ধরে ৮১ দিন আগেই তিনি পদত্যাগ করেন। বর্তমানে তিনি কানাডায় অবস্থান করছেন। এর আগে গত বছরে ৩ জুলাই ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে হাইকোর্টের দেয়া রায় বহাল রেখে সর্বসম্মতিক্রমে চূড়ান্ত রায় দেন পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ। তোপের মুখে থাকা এসকে সিনহা ছুটি নিয়ে দেশত্যাগের ২৮ দিনের মাথায় সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশের হাইকমিশনে ১০ নভেম্বর প্রেসিডেন্ট বরাবর পদত্যাগপত্র জমা দেন। ১৪ নভেম্বর প্রেসিডেন্ট পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।