Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সর্বাত্মক আন্দোলনের প্রস্তুতি বিএনপিতে

প্রকাশের সময় : ৩০ জানুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১২:৫৪ এএম, ৩০ জানুয়ারি, ২০১৮

ফারুক হোসাইন : ৮ ফেব্রুয়ারিতেই এখন সবার চোখ। ওই দিন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার রায় ঘোষণা করবে আদালত। মামলাটিকে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন দাবি করে দলের নেতারা অভিযোগ করেছেন, বিএনপি ও খালেদা জিয়াকে আগামী নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে আওয়ামী লীগ সরকার নিজেদের মতো রায় দিবে। যদিও দলের প্রধান খালাস পাবেন বলে এখনও বিশ্বাস করছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। শুধু বিশ্বাস করেই নয়, যে কোন ধরণের অন্যায়, অনায্য রায় মেনে না নেওয়ার জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন তারা। প্রস্তুতির অংশ হিসেবে দফায় দফায় বৈঠক হচ্ছে বিএনপি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন, স্থায়ী কমিটি, ২০ দলীয় জোটসহ রাজধানী ও সারাদেশের নেতাদের মধ্যে। বিএনপি চেয়াপারসন খালেদা জিয়াও দলের শীর্ষ ও কেন্দ্রীয় নেতা, ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতাদের সাথে বৈঠক করেছেন। কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদারের অংশ হিসেবে আজ বিকেলেই ১০০ দেশের বাংলাদেশে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত, হাই কমিশনার, প্রতিনিধি ও বিভিন্ন সংস্থার প্রধানদের সাথে বৈঠক করবেন। ১ ফেব্রুয়ারি ফের স্থায়ী কমিটি ও ৩ ফেব্রুয়ারি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাথে বৈঠকে বসবেন তিনি। এসব বৈঠকে রায় পরবর্তী কৌশল কি হবে? আন্দোলন সংগ্রামে নেতাকর্মীদের অংশগ্রহণের বিষয়ে নানা দিক নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে।
বিএনপি সূত্রে জানা যায়, ইতোমধ্যে সারা দেশেই বিএনপি নেতাকর্মীদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে বিএনপি প্রধানের রায়ে করণীয় ও আন্দোলনের কৌশল। একইভাবে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ থেকে শুরু করে রাজধানীতে অবস্থানরত দলের নেতা, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদেরকেও বার্তা দিয়েছেন চেয়ারপারসন। আন্দোলনে বিএনপির পাশাপাশি ২০ দলীয় জোটকে সম্পৃক্ত করতে গত রোববার রাতে বৈঠক করেছেন জোট প্রধান সাবেক প্রধানমন্ত্রী। মিথ্যা মামলায় খালেদা জিয়াকে সাজা দিলে সর্বাত্মক আন্দোলনে নামবে বলে জোটের ওই সভায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন শীর্ষ নেতারা। খালেদা জিয়ার বিষয়ে কোন ছাড় না দেওয়ার বিষয়ে একমত হয়েছেন তারা। বৈঠকে উপস্থিত জোটের নেতারা জানান, খালেদা জিয়াকে জেলে নেওয়ার চেষ্টা করা হলে জোটগতভাবে সর্বাত্মক আন্দোলনে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জোটের এক নেতা বলেন, সভায় বেগম জিয়ার মামলার বিষয়টিই বেশি গুরুত্ব পেয়েছে। এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনার পর এই মর্মে সিদ্ধান্ত হয়েছে যে, বেগম জিয়ার কিছু হলে সর্বাত্মক আন্দোলনে যাবে জোট। এ বিষয়ে সবাই একমত হয়ে সম্মতিও দিয়েছেন। বৈঠকে উপস্থিত জোটের অপর এক শীর্ষ নেতা বলেন, খালেদা জিয়া নিজে ঘোষণা করুক বা দলের পক্ষ থেকে যাকেই ঘোষণা দেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হোক তার ঘোষণার সাথে সাথে ২০ দলীয় জোট নেতাকর্মীরা জনগণকে সাথে নিয়ে রাস্তায় নেমে আসবে। আন্দোলনের প্রস্তুতি গ্রহণের পাশাপাশি খালেদা জিয়ার মামলা আইনীভাবে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন বিএনপি প্রধান।
রায় ঘোষণায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে বিএনপি নেতাকর্মীরা। এই মামলায় আসামী বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। রায় ঘোষণার কারণে উত্তপ্ত হয়ে ওঠেছে রাজনৈতিক অঙ্গন। রায়ের দিন থেকেই মাঠে থাকার ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। ৮ ফেব্রুয়ারি বিএনপির নেতারা রাস্তায় না নামলে বাড়িতে গিয়ে চুড়ি পরিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ও কেন্দ্রীয় যুগ্ম-মহাসচিব হাবিব উন নবী সোহেল। খালেদা জিয়ার রায়ের দিন সবাইকে রাজপথে খাকার আহ্বান জানিয়ে সোহেল বলেন, এবার সকলে মাঠে নামার প্রস্তুতি নিন, দেখা হবে রাজপথে। কত শক্তি আছে তাদের, দেখবো আমরা। তিনি বলেন, সম্মান রেখে আমরা বলতে চাই, কেন্দ্রীয় নেতারা যারা সেই দিন রাস্তায় নামবেন না, পরের দিন তাদের বাসায় গিয়ে আমরা চুড়ি পরিয়ে দেব। এদিকে যে কোন ধরনের বিশৃঙ্খলা প্রতিরোধ করতে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। আওয়ামী লীগও নেতাকর্মীদের প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন।
ধারাবাহিক বৈঠকে আন্দোলনের বার্তা: জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় দলীয় প্রধান খালেদা জিয়ার সাজা হতে পারে, এমন আশঙ্কা থেকে আন্দোলনে নামার প্রস্তুতি নিতে সারা দেশে নেতা-কর্মীদের বার্তা দেওয়া হয়েছে দলীয় প্রধানের পক্ষ থেকে। বিএনপি সূত্রে জানা যায়, ইতোমধ্যে সারাদেশে বিএনপি নেতাকর্মীদের আন্দোলনের বার্তা পৌছে দেওয়া হয়েছে। আন্দোলনের কৌশল কি হবে সে বিষয়ে খালেদা জিয়া নির্দেশনা দিয়েছেন। একইভাবে বার্তা দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় ও রাজধানীতে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাদের। সেই বার্তা পেয়ে দফায় নেতাকর্মীদের নিয়ে বৈঠক করছেন ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ, যুবদল, ছাত্রদল, শ্রমিক দল, মহিলা দলসহ সকল অঙ্গসংগঠনের নেতারা। এদিকে আগামীকাল ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠকে মামলার বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হবে। ১ ফেব্রুয়ারি ফের স্থায়ী কমিটির সাথে বৈঠকের পর ৩ ফেব্রুয়ারি ৫০২ সদস্যের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভা হবে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, সামনে নির্বাচন। এই লক্ষ্যে রাজনৈতিক তৎপরতা বাড়ছে। ৮ ফেব্রুয়ারি বিএনপির চেয়ারপারসনের মামলার রায় আছে। সব মিলিয়ে দল গোছানোর প্রস্তুতির বিষয় আছে। সে জন্যই এসব বৈঠক।



 

Show all comments
  • কাসেম ৩০ জানুয়ারি, ২০১৮, ১:৫৩ এএম says : 0
    তাদের সর্বাত্মক আন্দোলনের দেখার অপেক্ষায় রইলাম
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিএনপি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ