পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
গ্রামীণ জনপদে সেতু নির্মাণে জনগুরুত্বের বিষয়টি প্রাধান্য দিয়ে থাকে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। সাধারণত হাটবাজার, স্কুল-কলেজ ও হাসপাতালে যাওয়ার পথে সেতু নির্মাণে অগ্রাধিকার দেয়া হয়। এর বাইরে স্থানীয় এমপিদের সুপারিশেও সেতু নির্মাণ করে এলজিইডি। নির্বাচনকে সামনে রেখে এরকম প্রায় দুই হাজার সেতু নির্মাণের সুপারিশ জমা পড়েছে এলজিইডিতে। কিন্তু প্রাথমিক মূল্যায়নে এসব সুপারিশের প্রায় অর্ধেক সেতুই অপ্রয়োজনীয় বলে চিহ্নিত করেছে এলজিইডি। এলজিইডির প্রাথমিক মূল্যায়নে দেখা গেছে, আশপাশে কোনো হাটবাজার, স্কুল-কলেজ বা হাসপাতাল নেই এমন স্থানে সেতু নির্মাণের সুপারিশ এসেছে, আবার পাশে একটি সেতু থাকার পরও আরেকটি সেতু চেয়ে সুপারিশও করেছেন অনেক এমপি। কখনো কখনো শুধু বিশেষ কোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি স্বার্থসংশ্লিষ্ট উদ্দেশ্যেও সেতু নির্মাণের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। একজন এমপি একই এলাকার জন্য একাধিক অপ্রয়োজনীয় সেতু চেয়েছেন এমন নজিরও আছে। এলজিইডির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা মনে করছেন, অপ্রয়োজনীয় এসব সেতু নির্মাণ করা হলে সরকারি অর্থ অপচয়ের পাশাপাশি জনগণের ভোগান্তিও বাড়বে। এসব সেতুর ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে পরিবেশ ও প্রতিবেশের ওপরও। বাধাগ্রস্ত হবে নদীর স্বাভাবিক পানিপ্রবাহ। তবে এলজিইডির পরিকল্পনা বিভাগের একজন প্রকৌশলী বলেন, প্রতিদিনই এমপিদের সুপারিশ আসছে। আগে প্রয়োজনীয় সমীক্ষা ছাড়াই সেতু নির্মাণ করা হতো। এখন প্রয়োজনীয় সমীক্ষা ছাড়া কেবল সুপারিশের ভিত্তিতে কোনো ধরনের অবকাঠামো নির্মাণের সুযোগ নেই। সমীক্ষা প্রতিবেদন ছাড়া এখন সড়ক বা সেতু কোনো অবকাঠামোই নির্মাণ করে না এলজিইডি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সিরাজগঞ্জের মুরাদপুর-নলছিরা হেলথ সেন্টার সড়কে ১ হাজার ২০০ মিটার চেইনেজে তিন্নন্দিনা পয়েন্টে ফুলজরি নদীর ওপর সেতু নির্মাণের সুপারিশ করেন সিরাজগঞ্জ-৩ আসনের এমপি গাজী ম. ম. আমজাদ হোসেন। তবে পাশেই সড়ক ও জনপথ বিভাগের একটি সেতু রয়েছে। ওই সেতু ছাড়াও আরো দুটি সেতু নির্মাণের সুপারিশ করেছেন এই এমপি। রাঙ্গামাটি উপজেলা সদর থেকে ভান্ডারিপাড়া সড়কে ভান্ডারি ক্যানেলের ওপর একটি সেতু নির্মাণের জন্য সুপারিশ করেছেন এমপি ঊষাতন তালুকদার। তবে সমীক্ষায় অপ্রয়োজনীয় চিহ্নিত হওয়ায় সেতুটি নির্মাণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এলজিইডি। সমীক্ষা শেষে এমপির সুপারিশকৃত এ সেতু সম্পর্কে এলজিইডির বক্তব্য হলো, ওই ক্যানেলের পাশে একটি রিসোর্ট আছে। তবে কাছাকাছি জনগুরুত্বপূর্ণ কোনো সামাজিক, অর্থনৈতিক কিংবা সেবামূলক প্রতিষ্ঠান নেই। শুধু একটি রিসোর্টের জন্য সেতু নির্মাণের প্রয়োজন নেই। সূত্র জানায়, রাঙ্গামাটির এই এমপি আরো চারটি সেতু নির্মাণের সুপারিশ করেছেন। এগুলো হলো, রাঙ্গামাটি সদর হাসপাতাল ও কালিন্দীপুর সংযোগ সড়কের ১ হাজার ৫৫০ মিটার চেইনেজে নীলগঞ্জ ক্যানেলের ওপর একটি, মারিশ্যাবাজার-দুরছড়ি বাজার সড়কে রাঙ্গাদুরছড়ি খালের ওপর একটি, বালুখালী-জুরাছড়ি সড়কের মরিচ্চাবিল খালের ওপর একটি এবং হাজারীবাগ ক্যানেল-শৈলেষ্যরি সড়কের হাজারীবাগ সাধনানন্দ বনবিহারণ শাখার কাছে একটি দীর্ঘ সেতু।
এলজিইডির মূল্যায়ন অনুযায়ী, ২ ও ৩ কোড নম্বরের উপজেলা ও ইউনিয়ন সড়কগুলো সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ হাটবাজার, স্কুল-কলেজসহ গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ রয়েছে এসব সড়কের। তাই এ ধরনের সড়কের সঙ্গে সংযোগ রাখে এমন সেতুই নির্মাণ করতে চায় এলজিইডি। এছাড়া ৪ ও ৫ কোড নম্বরের সড়কগুলোকে বিবেচনা করা হয় গ্রামীণ সড়ক হিসেবে। হাটবাজারের সঙ্গে সংযোগ কম থাকায় এ ধরনের সড়ককে অপ্রয়োজনীয় মনে করছে এলজিইডি। যদিও গ্রামীণ এসব সড়কে সংযোগ স্থাপনের জন্যই সেতু নির্মাণের সুপারিশ করেছেন কোনো কোনো জনপ্রতিনিধি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলজিইডির কয়েকজন প্রকৌশলী বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে এমপিদের সুপারিশ বেড়েছে। কোনো কোনো এমপি নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি রক্ষার জন্য একের পর এক সুপারিশ করে চলেছেন। এলজিইডির প্রকৌশলীরা মনে করেন, নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি রক্ষায় তিন বছর আগে থেকে কাজ শুরু করা উচিত। তা না হলে শেষ মুহূর্তে একের পর এক সুপারিশ করে লাভ হবে না। এতে করে সবগুলো কাজও যেমন করা সম্ভব হবে না, তেমনি কাজ শুরু হলেও শেষ করা যাবে না। আবার সব সেতু জনগণের কাজেও আসবে না। তাতে সুনামের বদলে বদনাম হবে। ###
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।