বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
মানিকগঞ্জ জেলা সংবাদদাতা : ২০১৪ সালের ভয়াবহ বন্যায় মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার কুস্তা সড়কটি ধসে নদী গর্ভে বিলীন হওয়ায় সড়কটি দিয়ে যাতায়াতকারী হাজারো পথযাত্রীর দুর্ভোগের সীমা নেই। এ কুস্তা সড়কটি মেরামত না করায় ৬ টি ইউনিয়নের শত শত মানুষের যাতায়াতে প্রতিদিন পোহাতে হচ্ছে চরম ভোগান্তি। ইউনিয়নগুলো হচ্ছে ঘিওর উপজেলার ঘিওর, পয়লা এবং পাশ্ববর্তী দৌলতপুর উপজেলার জিয়নপুর, খলসি, চড়কাটারিয়া ও বাঘুটিয়া ইউনিয়ন। ঘিওর-দৌলতপুর সড়কের কুস্তাগ্রামের কিছু অংশ ওই বন্যায় ঘিওর উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত কালিগঙ্গা নদীতে ধসে যাওয়ার পর ৪ বছরে পেরিয়ে গেলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সংস্কার না করায় এই দুই উপজেলার মধ্যকার সংযোগ সড়কটি বিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছে। এ দুটি উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের বাসিন্দারা কোন যান্ত্রিক যানবাহন ব্যবহার করতে না পারায় চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন। মানিকগঞ্জ জেলা সদর ও রাজধানী ঢাকা যেতে সড়কের ওঠার একমাত্র সড়ক এটি। ফলে হাজার হাজার পথচারীদের সীমাহিন দুর্ভোগে পোহাতে হচ্ছে। এ সড়ক দিয়ে কৃষকের উৎপাদিত কৃষি পণ্য হাট বাজারে নিতে এবং রাজধঘানী ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় পাঠানোর কাজে বিঘœ ঘটছে। তাছাড়াও কৃষকের অতিরিক্ত টাকা খরচ হচ্ছে।
স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, ঘিওর-দৌলতপুর সড়কের কুস্তাগ্রামের পাশ দিয়েই বয়ে গেছে কালিগঙ্গা নদী। ২০১৪ সালের বন্যায় প্রায় ৫শত মিটার পাকা সড়ক সম্প‚র্ণ নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এর পর থেকেই সড়কটি দিয়ে যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হওয়ায় সব ধরনের যানবাহন দুই পাড়ে থাকতে বাধ্য হয়। ঐ ভাঙা স্থান দিয়ে পায়ে হেটে পাড় হয়ে যানবাহনে চড়তে দুই উপজেলার মানুষের।
ঘিওর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. অহিদুল ইসলাম টুটুল জানান, এলজিইডির আওতায় ঘিওর- দৌলতপুর উপজেলার এ সড়কের কুস্তা গ্রামে যেটুকু সড়ক কালিগঙ্গা নদীতে বিলীন হয়েছে। সংশ্লিষ্ট দপ্তর কে একাধিকবার জানালেও কোন কাজ হয় নি। তিনি আরো জানান, ২০১৭ সালে এ স্থানটি মেরামত করার জন্য এডিপি থেকে ৭ লাখ টাকা বরাদ্দ চাইলে তা পাস হয়। কিন্তু স্থানীয় জাতীয় সংসদ সদস্য এটি কেটে দেন। ৪ বছর ধরে দুই উপজেলার ৬ টি গ্রামের প্রতিদিন গড়ে পনের বিশ হাজার পথচারি কষ্ট করলেও আমরা কিছুই করতে পারছি না। কোন মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়লে হসপিটালে নেবার জন্য এম্বুলেন্সও আসে না এ সড়কে।
এ সড়ক দিয়ে চলাচলকারী মোঃ জাকির হোসেন জানান, আমি চাকরি করার সুবাদে দৌলতপুর উপজেলায় জিয়নপুর যাই। সরাসরি কোন যানবাহন নেই। মানিকগঞ্জ থেকে ঘিওরে আসি। এর পর সিএনজি করে কুস্তাগ্রামের ভাঙার আগে নামি। পায়ে হেটে ভাঙা অংশ পার হওয়ার পর আবার সিএনজি করে গন্তব্য স্থলে যেতে হয়। এই ইউনিয়নের বাসিন্দা মানিকগঞ্জ দেবেন্দ্রে বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ছাত্র মোঃ শামিম জানান, এই সড়কদিয়ে ৫ টি প্রাথমিক বিদ্যায়ল, ২ টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১টি কলেজ সহ ৬টি ইউনিয়নের অন্তত ৩০ টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকগণ এই সড়ক দিয়েই যাতায়াত করে। বর্তমান সরকার শিক্ষা বান্ধব হলেও এ সড়কটি দেখে তা বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়। এতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর ছাত্রছাত্রীবৃন্দ ও শিক্ষকদের স্কুল প্রতিষ্ঠানে যেয়ে কাজ করতে অসুবিধা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে ঘিওর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীমা খন্দকার বলেন, স্থানীয় এমপি এ, এম নাইমুর রহমান দুর্জয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে ২০১৭তে ৯০ লাখ টাকার কাজ করেছিলেন। কিন্তু সে কাজ করাতেও কোন কাজ হয় নি। এখানে আরও বড় প্রজেক্ট আনলে সড়কটি আবার তৈরি করা সম্ভব।
ঘিওর উপজেলা চেয়ারম্যান খন্দকার লিয়াকত হোসেন জানান, এ সড়কটি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের। ৪বছর ধরে চলাচলের অযোগ্য থাকাতে একাধিকবার লিখিত ভাবে জানিয়েছি। এলজিইডি জানিয়েছে এটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাজ। তাদেরকে চিঠি দিলে দ্রæত কাজ শুরু করা হবে জানালেও ৪ বছরে কাজ শুরু হয় নি। ঘিওর উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী সাজ্জাকুর রহমান জানান, সড়কটি আমাদের হলেও কলিগঙ্গা নদীতে তা বিলীন হয়ে গেছে। নদীতে বাধ না দিলে কোনভাবেই সড়কটি রাখা সম্ভব নয়। এ ব্যাপারে মানিকগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী প্রৌকশলী মো. আব্দুল হামিদ মিয়া জানান, আমরা এ সড়কের অস্থায়ী কাজ করেছিলাম। স্থীয়ভাবে ৬ কোটি টাকার একটি প্রকল্প পাশ হয়ে গেছে। যা কিছু দিনের মধ্যে অর্থবরাদ্ধের জন্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। অভিজ্ঞ মহল মনে করেন ঘিওর উপজেলার ঘিওর, পয়লা এবং দৌলতপুর উপজেলার জিয়নপুর, খলসি, চড়কাটারিয়া ও বাঘুটিয়া ইউনিয়নের মানুষজনের উপজেলা, জেলা সদর ও রাজধানী ঢাকা যেতে সড়ক যোগাযোগ স্বাভাবিক রাখতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অতিসত্তর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।