Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রাজধানীর ন্যাম ভবন থেকে এমপি পুত্রের লাশ উদ্ধার

| প্রকাশের সময় : ২২ জানুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

প্রেমের কারণে আত্মহত্যা ধারণা পুলিশের
স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানীর ন্যাম ভবন থেকে সাতক্ষীরা-১ আসনের সংসদ সদস্য মুস্তফা লুৎফুল্লাহর ছেলে অনিক আজিজের (২৭) লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল রোববার সকাল ৮টার দিকে শেরেবাংলা নগর থানার ৫ নম্বর ন্যাম ভবনের (সংসদ সদস্য ভবন) ৬০৪ নম্বর রুম থেকে পুলিশ তার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে। ধারণা করা হচ্ছে, গত শনিবার দিনগত রাতের কোনো এক সময়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন অনিক। তিনি একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন। ময়নাতদন্ত শেষে সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের অধ্যাপক এ এম সেলিম রেজা সাংবাদিকদের বলেন, সুরতহাল প্রতিবেদনে আত্মহত্যার যে সন্দেহের কথা বলা হয়েছে, ময়নাতদন্তেও আমরা সে রকম লক্ষণ পেয়েছি। তার শরীরে কোনো দাগ নেই। তেজগাঁও জোনের ডিসি বিপ্লব কুমার দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, প্রাথমিক অবস্থায় সার্বিক পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে অনিক আত্মহত্যা করেছে। তবে কেন কি কারণে সে আত্মহত্যা করেছে আমরা তা তদন্ত করে দেখছি।
নাম প্রকাশে অনিশ্চুক পুলিশের একজন কর্মকর্তা জানান, প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে প্রেম ঘটিত কারণে অভিমান করে অনিক আত্মহত্যা করেছে। তিনি মাঝেমধ্যে মাদক গ্রহণ করত বলে জানা গেছে।
নিহত অনীকের চাচা আলী আহম্মদ মোর্তুজা হাসপাতাল প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের বলেন, গতকাল ভোর পাঁচটা-সাড়ে পাঁচটার দিকে সাংসদ মুস্তফা লুৎফুল্লাহ ও তার স্ত্রী এবং সংসদ সদস্যের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা সাতক্ষীরা থেকে বাসায় ফেরেন। দরজা খুলে দেন তাদের মেয়ে। বাসায় অনীক, তার ছোট বোন ও এক কাজের লোক থাকত। গতকাল (শনিবার) কাজের লোকটি ছুটিতে ছিল। সংসদ সদস্য বাসায় ঢুকেই নিজের ঘরে চলে যান। কিন্তু ব্যক্তিগত কর্মকর্তা সবসময় বাসায় অনীকের সঙ্গে একই কক্ষে থাকতেন। তাই তিনি (পিএস) অনীকের ঘরের দরজা খোলার জন্য টোকা দিতে থাকেন। কিন্তু অনীক কোনো সাড়া না দেয়ায় অতিরিক্ত চাবি দিয়ে দরজা খোলা হয়। ঘরে ঢুকে অনীককে ফ্যানের সঙ্গে ইন্টারনেটের কেবলের তার দিয়ে গলায় ফাঁস দেয়া ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। আলী আহম্মদ আরো বলেন, তারাও বিষয়টি আত্মহত্যাই মনে করছেন। তবে কী কারণে এমনটা হয়েছে তারা কিছু আন্দাজ করতে পারছেন না। পুলিশ বাসা থেকে অনীকের ব্যবহৃত ল্যাপটপ ও মোবাইল ফোন নিয়ে গেছে।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, অনিকের প্রিয় ছিল ক্যামেরা দিয়ে ছবি তোলা। সমাজের অসহায়দের ছবি তুলে ফেসবুকে প্রচার করে মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করতেন। জড়িত ছিল গণজাগরণ মঞ্চের সঙ্গেও। মুক্তিযুদ্ধের কাহিনী ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছে প্রতিনিয়ত।
অনীকের ছোটবোন আদৃতা সৃষ্টি সাংবাদিকদের বলেন, বাবা-মার সঙ্গে খুবই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল ভাইয়ের। ছেলে আর বাবা এক জায়াগায় বসে থাকলেও কেউ কখনো বুঝতে পারত তারা বাবা-ছেলে। বাবা কখন বাবার জায়গা থেকে কথা বলেনি। বন্ধুর মতো ইয়ার্কি ফাজলামি করেছে। আত্মহত্যার আগেও আমরা রাত ১১টা পর্যন্ত গল্প করেছি। এরপর কী হয়েছে আমি কিছুই বলতে পারব না।
প্রেমের কারণে আত্মহত্যা?
সকালে ন্যাম ফ্ল্যাট সরেজমিন দেখা যায়, এমপির ফ্ল্যাটটি তালাবদ্ধ। লাশ সুরতহালের জন্য সোহরাওয়ার্দী হাসপাতলে নেয়া হয়েছে। সেখানেই গেছেন সবাই। তবে ফ্ল্যাটের নিচে দায়িত্বরত কর্মচারীরা বলাবলি করছিলেন, একটি মেয়ে প্রায়েই অনীকের কাছে আসত। মেয়েটির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এ প্রেমই নাকি আত্মহত্যার কারণ। তবে এ বিষয়ে তারা আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য দিতে চায়নি। অনিকের লাশ দাফনের জন্য গতকালই বাড়িতে নিয়ে গেছেন স্বজনেরা। অনিকের শেষ ফেসবুক স্ট্যাটাস ছিল তোর জন্য চিঠির দিন। যে স্ট্যাটাসটি অনিক ভোর ৪টা ৫ মিনিটে ফেসবুকে আপডেট করেছেন। কিন্তু সকালেই ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে পাওয়া গেল তার ঝুলন্ত লাশ। অনিক ওয়ার্কার্স পার্টির কর্মী ছিল বলে জানা গেছে।



 

Show all comments
  • সোহেল ২২ জানুয়ারি, ২০১৮, ৩:২৩ এএম says : 0
    আসল কারণ খুঁজে বের করা হোক
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: লাশ উদ্ধার


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ