২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত মোটা হবেন ৪০০ কোটি মানুষ
২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত ওজন বা মোটা হবেন বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ। সংখ্যার বিচারে যা
ডিফথেরিয়া রোগটির কথা আমরা ভুলতেই বসেছিলাম। এটি এতই দুর্লভ হয়ে পড়েছিল যে, আমাদের অনেক নবীন চিকিৎসক এই রোগের রোগী সামনা-সামনি দেখেনইনি। এর জন্য সম্পূর্ণ কৃতিত্ব স¤প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির। কিন্তু বর্তমানে রোহিঙ্গা সংকটের প্রেক্ষিতে অসুখটি আবার মাথাচাড়া দেওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত রোহিঙ্গা শিবিরে ১৩২৬ জন ডিফথেরিয়া আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়েছে এবং মারা গেছে ১৯ জন। এর ৭৬ শতাংশের বয়স অনূর্ধ্ব ১৫ বছর (সূত্র আইওএম)।
করাইনিব্যাকটেরিয়াম ডিফথেরি নামের একটি ব্যাকটেরিয়া দিয়ে ডিফথেরিয়া রোগটি হয়ে থাকে। জীবাণুটি কয়েকভাবে আক্রান্ত ব্যাক্তি থেকে সুস্থ ব্যাক্তিতে ছড়াতে পারে। হাঁচি কাশি, কিংবা শরীরে কোন ঘা, অথবা শরীরের কোন নাজুক স্থানে (যেমন চোখ, যোনি) এই জীবাণু সংস্পর্শে আসলে রোগ করতে পারে। জীবাণু শরীরে প্রবেশের ২ থেকে ৭ দিনের মধ্যে জ্বর, গলায় ঘা, মাথা ব্যাথা, ম্যাজম্যাজ ভাব, বুক ধড়ফড় করা এসব লক্ষন দেখা দিতে পারে। এছাড়া গলার লসিকা গ্রন্থি ফুলে যাওয়া, নাকে ঘা সহ পানি পড়া, চামড়া, চোখ, কান, যোনিতে ঘা (যে জায়গা দিয়ে জীবাণু প্রবেশ করে, সেই স্থানে) হতে পারে। মুখ হা করলে দেখা যায়, একটি পর্দার মত আবরণ গলার ভিতর পর্যন্ত ছেয়ে গেছে, যেটি সরাতে গেলে রক্ত বের হয়। আবার অনেকের ক্ষেত্রে এই জায়গাটা কুঁচকানো চামড়ার মত (চামড়ার জুতো পানিতে ভিজলে যেমন হয়) হয়ে আছে। রোগীর খেতে, পান করতে কষ্ট হয়, শ্বাসকষ্ট হয়। দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে যতদিন যায়, হৃৎপিন্ড অকার্যকর হয়ে যাওয়া, অনিয়মিত স্পন্দন, হাত-পা অসার হয়ে যাওয়া, চোখে দেখতে সমস্যা হতে পারে। চিকিৎসা না করালে শেষ পর্যায়ে শ্বাসতন্ত্রের পেশি শিথিল হয়ে রোগী মারা যেতে পারে।
ডিফথেরিয়া রোগের চিকিৎসার তিনটি স্তর রয়েছে। শরীরে জীবাণু প্রবেশ করেছে পৌছায়নি এমন রোগীর জন্য অ্যান্টি-টক্সিন (উঅঞ) কার্যকর। সাথে পেনিসিলিন জাতীয় ওষুধ লাগতে পারে। পরিবারের বা স্কুলের যারা রোগীর সংস্পর্শে থাকে, তাদের অসুখ হওয়ার আগেই ৭ দিনের জন্য ইরাইথ্রোমাইসিন জাতীয় ওষুধ গ্রহণ করা উচিত। আরেকধরনের ব্যাক্তিরা দীর্ঘদিন নিজের শরীরে জীবাণুটি বয়ে বেড়ান (ঈঅজজওঊজ)। তাদের নিজেদের অসুখ না হলেও, তারা সমাজে অসুখটি ছড়াতে পারেন। তাদেরও ৭ দিনের জন্য ইরাইথ্রোমাইসিন জাতীয় ওষুধ গ্রহণ করতে হবে।
তবে শেষ কথা হচ্ছে, প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ উত্তম। আজ এই রোহিঙ্গাদের ডিফথেরিয়া হচ্ছে, কারণ তারা কোন টিকা পায়নি। আমরা এতদিন সুরক্ষিত ছিলাম কারণ আমাদের শিশুরা জন্মের ৬, ১০, ১৪ সপ্তাহে আরও কয়েকটি টিকার সাথে ডিফথেরিয়া’র টিকাও পেয়ে যায়। ডিফথেরিয়া যাতে ফিরে না আসতে পারে, এজন্য এখনই পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ রয়ে গেছে।
ষ ডাঃ আহাদ আদনান
রেজিস্ট্রার (শিশু বিভাগ)
আইসিএমএইচ, মাতুয়াইল, ঢাকা।
০১৯১২২৪২১৬৮।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।