নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
মধ্য জানুয়ারীর তীব্র শীতে কাঁবু গোটা দেশ। সেই শীত আরো ঝেঁকে বসেছে শৈত্যপ্রবাহের উপর ভর করে। চারিদিকে কুয়াশার ঘেরাটোপ। তারই মধ্যে সাত সকালেই মিরপুরে হাজির শ্রীলঙ্কান ক্রিকেট দল। বিসিবি একাডেমি মাঠে যখন প্রস্তুতির প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন ম্যাথ্যুজ-চান্ডিমালরা তাদের দিকে নজর তখন বশে কিছু সাংবাদিকের চোখ। দলটাকে নিয়ে সাংবাদিকদের যে বিপুল আগ্রহ। অবশ্য যতটা না শ্রীলঙ্কা, আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে তার চেয়ে বেশি চন্ডিকা হাতুরুসিংহে। এবারের ত্রিদেশীয় সিরিজে সবচেয়ে আলোচিত নাম যে তিনিই! কয়েক মাস আগেও যিনি ছিলেন বাংলাদেশের কোচ, তিনি এখন মাশরাফি-সাকিবদের ঘোর প্রতিপক্ষ। তবে আজকের ম্যাচে জিম্বাবুয়েকে ছাপিয়ে তাই নতুন যুগ শুরু করার আগে শ্রীলঙ্কান কোচকেই ‘স্যালুট’ দিচ্ছেন মাশরাফি।
২০১৪ সালের জুনে বাংলাদেশ দলের দায়িত্ব নেওয়ার পরপর ভারতের বিপক্ষে তিন ওয়ানডের সিরিজে শুরুটা ভালো হয়নি হাতুরুর। তবে ২০১৪ সালের নভেম্বরে দেশের মাঠে টেস্ট-ওয়ানডে সিরিজে জিম্বাবুয়েকে ধবলধোলাই করে শুরু, বাংলাদেশ জেতে টানা পাঁচটা ওয়ানডে সিরিজ। ২০১৫ বিশ্বকাপে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স, ঘরের মাঠে ধারাবাহিক সাফল্য, এমনকি বিদেশে, বিশেষ করে শ্রীলঙ্কা, আয়ারল্যান্ড ও চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ভালো করায় অনেকে কৃতিত্ব দেন হাতুরুকে। অধিনায়ক মাশরাফিও শ্রীলঙ্কান এই কোচের অবদানকে বড় করেই দেখছেন, ‘খেলোয়াড়দের পক্ষ থেকে আমি হাতুরুসিংহকে স্যালুট জানাই। অবশ্যই তার অধীনে খেলে আমরা ভালো ফল পেয়েছি। কৃতিত্ব তাকে দিতে আমাদের বিন্দুমাত্র সংকোচ নেই। এমন না যে তাকে কৃতিত্ব দিতে চাই না।’
তবে এখানে কথা আছে। গতকাল সংবাদ সম্মেলনে সেটিই মনে করিয়ে দিলেন মাশরাফি, ‘২২ গজে আমরা (খেলোয়াড়েরা) সব বাস্তবায়ন করেছি। তামিম-মুশফিকের রেকর্ড যদি দেখেন, সাকিবের ক্যারিয়ার যদি দেখেন, মুস্তাফিজ...। সব যদি আলাদা আলাদা করে দেখেন ২২ গজে কোচ খেলোয়াড়দের বিশেষ কিছু করে দেয়নি। তাদের নিজেদের করতে হয়েছে। সবচেয়ে বেশি চাপ তাদেরই নিতে হয়েছে, তারাই সেরাটা দিয়েছে। যে-ই কোচ থাকুন, তাকে আমরা খেলোয়াড়েরা শতভাগ সমর্থন করেছি। কৃতিত্ব খেলোয়াড়দের দিতে হবে যেভাবে তারা খেলেছে। এখন যারা কোচিং স্টাফ আছেন, (রিচার্ড) হ্যালসল, সুজন চাচা (খালেদ মাহমুদ) তাদেরও শতভাগ সমর্থন দেওয়ার চেষ্টা করব। হাতুরুর জন্য শুভকামনা। এই মুহূর্তে আমরা আমাদের নিয়েই বেশি চিন্তা করছি।’
হাতুরুসিংহের মেয়াদের শেষ এক-দেড় বছরে যেমন চাপ থাকত, বাংলাদেশের ড্রেসিং রুমে এখন সেই চাপ নেই। মাশরাফি জানালেন, ড্রেসিং রুম এখন অনেকটাই নির্ভার, ‘আসলে ‘কমফোর্ট জোন’ নিজের উপর নির্ভর করে। মানসিক চাপ সব সময় থাকে। এটা স্বাভাবিক। অধিনায়ক হিসেবে এটা থাকবেই। এখনও সেটা আছে। নিজস্ব চিন্তা ভাবনা ভেতরে থাকেই যে মাঠে কিভাবে করে দেখাব। আমার ওই জিনিসগুলো এখনও আছে। তবে ড্রেসিং রুম অনেকটাই নির্ভার। যে চাপ সব সময় ড্রেসিং রুমে থাকে, সেই চাপ এখন অনুভব করছি না।’
তবে অতি নির্ভার হয়ে দল যেন আসল কাজে গুরুত্ব কম না দেয়, সেদিকেও সতর্ক অধিনায়ক, ‘ড্রেসিং রুমে আমি যখন আমার খেলোয়াড়দের রিল্যাক্স দেখি কিংবা দেখব, তখন অধিনায়ক হিসেবেও আমার রিল্যাক্স থাকতে সুবিধা হয়। অনেকটা রিল্যাক্স মনে হচ্ছে। পাশাপাশি এটা চাই না অনেক বেশি রিল্যাক্স থাকুক। বেশি রিল্যাক্স থাকল মাঠে নেমে কঠিন পরিস্থিতিতে কী হয়! অনেক সময় নার্ভাসনেস থেকে সেরা পারফরম্যান্স বের হয়ে আসে। আমি আশা করব, আমাদের মূল জায়গাটা যেন ঠিক থাকে। তারপর অন্য কিছু।’
কথাটা ঘুরেফিরেই আসছে। হাতুরু যেহেতু কদিন আগে বাংলাদেশ দলের কোচ ছিলেন, মাশরাফি-তামিমদের ভেতর-বাহির তাঁর ভালো জানা। কয়েক দিন আগে শ্রীলঙ্কায় হাতুরু জানিয়ে এসেছেন, এটি তাকে কিছু বিষয় নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করবে। হাতুরুকে হারাতে হলে বাংলাদেশ কি নতুন কোনো পরিকল্পনা নিয়ে নামবে, যেটি চমকে দেবে শ্রীলঙ্কাকে কিংবা যেটি ভাবনাতেই নেই হাতুরুর? মাশরাফি বলছেন, ‘স্মার্ট’ পরিকল্পনা তারা করছেন, তবে ‘ওভার স্মার্ট’ হতে চান না, ‘আমরা যে পরিকল্পনা করছি না, সেটা নয়। ক্রিকেটে চৌকস হওয়া ভালো। কিন্তু বাড়তি চৌকস হওয়া ভালো না। আমরা অতিবুদ্ধিগিরি ফলাতে চাচ্ছি না। অবশ্যই হাতুরুসিংহে পরিকল্পনা করবেন। আমাদেরও থাকবে। নতুন কিছু করার চেষ্টা করব। ঝুঁকি থাকলেও আমরা সেরকমই কিছু করব। পূর্ণ সহযোগিতা আমরা আমাদের খেলোয়াড়দের করব। তাদের পুরো স্বাধীনতা দেওয়া হবে। তারা যেটা করে আসছে, সেটাই যেন করতে পারে।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।