পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
হঠাৎ বদলে গেল আবহাওয়া। গতকাল (বৃহস্পতিবার) পৌষের হাঁড় কনকনে উত্তুরের হিমেল হাওয়ার সাথে শুরু হয়েছে তীব্র শীতের কাঁপন। সারাদেশে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা কাবু হয়ে পড়েছে। গতকাল সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল চুয়াডাঙ্গায় ৬.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
রাজধানী ঢাকায়ও তাপমাপক পারদ নেমে আসে ১০.৫ ডিগ্রিতে। রাতের সর্বনিম্ন তাপমাত্রার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রাও অধিকাংশ স্থানে নেমে গেছে ২২ থেকে ২৪-এ। কিছু এলাকা বাদে প্রায় সমগ্র দেশে মাঝারি থেকে মৃদু ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায় পৌষের তৃতীয় সপ্তাহ পার হতেই তীব্র শীতের কবলে পড়েছে দেশ। গত তিন দিনে চট্টগ্রাম, সিলেটসহ দেশের কয়েক জায়গায় বিক্ষিপ্ত থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের পর বর্তমানে মেঘমুক্ত শুষ্ক আবহাওয়ায় শীত জেঁকে বসেছে।
আজ (শুক্রবার) উত্তরাঞ্চল, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল, ঢাকাসহ মধ্যাঞ্চল মিলিয়ে দেশের অধিকাংশ জায়গায় বেড়ে যেতে পারে শীতের তীব্রতা। একজন আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ জানান, বর্তমানে যে শীত পড়ছে তা মওসুমের এ সময়ের জন্য স্বাভাবিক আবহাওয়া। এখন উত্তরের হিমশীতল বায়ু বাংলাদেশের দিকে এসে গেছে। সেই সাথে ঊর্ধ্বাকাশের জেটবায়ু নিচে স্থলভাগের দিকে নামছে। সাগরে অস্বাভাবিক কোনো চাপও নেই। ফলে শৈত্যপ্রবাহের আবহ তৈরি হয়েছে। শৈত্যপ্রবাহের সাথে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশায় জনজীবনে সৃষ্টি হয়েছে অচলদশা। সড়ক-মহাসড়ক আঞ্চলিক সড়কসমূহে ও নৌপথে চলাচলে বিলম্ব ঘটছে। মাঝরাত থেকে সকাল, কোথাও কোথাও দুপুর অবধি পড়ছে কুয়াশা। এতে যানবাহন চলাচলে ঝুঁকিও বৃদ্ধি পেয়েছে। হাজারো যাত্রীর ভোগান্তি বেড়েছে। বেশ কিছুদিন তাপমাত্রা চড়া থাকার পর হঠাৎ করে শীত আর ঘন কুয়াশার কারণে শীতজনিত রোগব্যাধির প্রকোপ দেখা দিয়েছে। এরমধ্যে শ্বাসকষ্ট, কাশি, জ্বর, ডায়রিয়া, রক্তচাপে তারতম্যসহ বিভিন্ন রোগে বিশেষত বৃদ্ধ ও শিশুরা অসুস্থ হয়ে অনেকেই হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। বেড়েছে রোগীর চাপও। দেশের সর্বত্র শীতবস্ত্রের অভাবে চরম দুর্ভোগে দিনাতিপাত করছেন সমাজের হতদরিদ্র মানুষজন। বিগত বছরে বন্যাসহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তরা শীতকষ্টে পড়েছেন। গরীব জনগণের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণের মতো মানবিক কার্যক্রম এখনও চোখে পড়ছে না।
এদিকে আবহাওয়া পরিস্থিতি সম্পর্কে জানা গেছে, উপ-মহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও এর সংলগ্ন এলাকা পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমি লঘুচাপ (স্বাভাবিক) দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। আজ শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘèার পূর্বাভাসে জানা গেছে, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের কোথাও কোথাও মাঝাারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। শ্রীমঙ্গল সিলেট অঞ্চলসহ রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও খুলনা বিভাগের উপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। তা অব্যাহত থাকতে পারে। এ শৈত্যপ্রবাহ আরও সংলগ্ন এলাকায় বিস্তার লাভ করতে পারে। সারাদেশে রাত ও দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। পরবর্তী ৪৮ ঘন্টায় আবহাওয়ার সামান্য পরিবর্তন হতে পারে। এর পরের ৫ দিনে আবহাওয়ার উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই।
গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশের নিম্নতম তাপমাত্রা ছিল ঈশ্বরদীতে ৭.৫ ডিগ্রি সে., যশোরে ৭.৬ ডিগ্রি সে., রাজশাহীতে ৮ ডিগ্রি সে., গোপালগঞ্জে ৮.৪ ডিগ্রি সে., টাঙ্গাইলে ৮.৫ ডিগ্রি সে., শ্রীমঙ্গলে ৮.৬ ডিগ্রি সে., রংপুরে ৯ ডিগ্রি সে., খুলনায় ১০ ডিগ্রি সে., বরিশালে ১০.৪ ডিগ্রি সে.। গতকাল ঢাকায় সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২১.৮ এবং ১০.৫ ডিগ্রি সে.।
দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে জানা গেছে, চলতি জানুয়ারি (পৌষ-মাঘ) মাসে দেশের উত্তরাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে একটি মাঝারি থেকে তীব্র ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। তীব্র শৈত্যপ্রবাহের সময় তাপমাত্রার পারদ নেমে যাবে ৪ থেকে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। আর মাঝারি শৈত্যপ্রবাহে তাপমাত্রা নেমে আসতে পারে ৬ থেকে ৮ ডিগ্রি সে.। তাছাড়া দেশের অন্যত্র ২-৩টি মৃদু (৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সে.) থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। বর্তমানে বয়ে চলেছে মাঝারি থেকে মৃদু ধরনের শৈত্যপ্রবাহ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।