Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

৫ জানুয়ারির নির্বাচনে জাপা না গেলে রাজনীতির ইতিহাস অন্যরকম হতো -এরশাদ

| প্রকাশের সময় : ২ জানুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারীর নির্বাচনে জাপা না গেলে বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাস অন্যরকম হতো বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ তিনবার আমাদের সহযোগিতায় ক্ষমতায় এসেছে। বিনিময়ে কিছুই পাইনি। ১৯৯৬ সালে বিএনপির দেয়া প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাব প্রত্যাখান করে তাদেরকে সমর্থন দেয়ার বিনিময়ে তারা আমার দলের মহাসচিব আনোয়ার হোসেন মঞ্জুকে দিয়ে দল ভাঙ্গালেন, আমাদের ১৪জন এমপিকে কিনে নিলেন। আমাকে পাঁচ কোটি টাকা জরিমানাসহ নির্বাচনে অযোগ্য করা হলো। ২০০৮ সালে মহাজোট করা হলো। কথা ছিলো ৪৮টি আসন দিবে, কিন্তু দেয়া হলো মাত্র ৩৩টি। জয়ী হলাম ২৯টিতে। বিএনপি পেলো ৩০টি। আমাদের কাছ থেকে যদি সেই ১৭টি আসন কেড়ে না নিতো তাহলে আমরা তখনই প্রধান বিরোধীদল হই। কিন্তু আওয়ামী লীগ তা হতে দিলো না। আর ২০১৪ সালে ৫ জানুয়ারীর নির্বাচনে জাপা যদি না যেতো তাহলে হয়তো বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাস অন্যভাবে লেখা হতো। গতকাল দলের ৩২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে র‌্যালীপূর্বক এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সীমাহীন অত্যাচারের মাধ্যমে বিএনপি আমাদের নিঃশেষ করে দিতেত চেয়েছিলো। আল্লাহ আছেন, বিচার আছে। আমাকে এবং আমার পরিবারকে বিনা দোষে কারাগারে নিক্ষেপ করেছিলেন। আজ আপনার (বেগম জিয়া) কারাগার অতি সন্নিকটে। আমার প্রতি অনেক অন্যায় কাজ করেছেন, আজ তার প্রতিফল পাচ্ছেন। রওশন এরশাদের সভাপতিত্বে সভায় আরো বক্তব্য রাখেন পানিসম্পদ মন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, কো-চেয়ারম্যান জিএম কাদের, মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার এমপি, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, সাহিদুর রহমান টেপা, নাসির উদ্দিন মামুন, ইসহাক ভূইয়া, একেএম আসরাফুজ্জামান খান প্রমুখ।
এইচ এম এরশাদ বলেন, মানুষের মাঝে প্রতিনিয়ত খুন আর গুমের ভীতি, অস্থির রাজনীতি। কিন্তু আমাদের মাঝে আর হতাশা নেই। বিজয়ের মাসে রংপুরে অভ‚তপূর্ব বিজয় প্রমান করেছে জাতীয় পার্টি আছে এবং থাকবে। রাষ্ট্রপধান হতে চাইনি। তৎকালীন বিএনপির সরকারের মন্ত্রী সভা দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়লে সাত্তার সাহেবেরে অনুরোধে সেদিন ক্ষমতা নিয়ে ছিলাম। ক্ষমতা নিয়ে নির্বাচন দিয়ে ছিলাম। কেউ আসলেন না। পরবর্তীতে ১৯৮৬ সালের ১ জানুয়ারীতে জাতীয় পার্টি প্রতিষ্ঠা করে সামরিক শাসন বিলুপ্ত করি। তার চার মাস পর নির্বাচন হলো। সে নির্বাচনে আওয়ালী লীগ, জামায়াত, সিপিবি, জাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টিসহ ২৮টি দল অংশ নিলো। চার মাসের এই দল ১৭৪টি আসন পেয়ে জয়ী হলো। আমাদের শাসনামলকে কেউ অবৈধ বলতে পারবে না। কারণ, হাইকোর্ট ১৯৮৬ সাল থেকে জাতীয় পার্টির শাসনামল বৈধ ঘোষণা করেছে।
প্রধানমন্ত্রীর এই বিশেষ দূত বলেন, আমি দেশের জন্য অনেক কিছু করেছি। আমার হাতে রক্তের দাগ নেই। ডা. মিলনকে কে হত্যা করেছে আমি জানিনা। হত্যাকারীদের গ্রেফতারও করা হলোনা। নুর হোসেনকে পিছন থেকে গুলি করা হলো, তার হত্যারও বিচার কোনো সরকার করলো না। আমি ক্ষমতায় আসতে পারলে এই হত্যার বিচার করে প্রমান করবো আসলে এই হত্যার পিছনে কারা দায়ী। আর কেনো তাদের হত্যা করা হলো।
নিজ দলের ভবিষৎত উত্তারধিকারী প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জাপার ভবিষৎত দায়িত্ব কে পাবেন তা একটি বিরাট প্রশ্ন। এ বিষয়ে আমি সিদ্ধান্ত দিবো। আর যদি কোনো কারণে আমি ঘোষণা না করে যেতে পারি, তাহলে প্রেসিডিয়াম সিদ্ধান্ত নেবে কে হবে জাপার ভবিষৎ চেয়ারম্যান।
র‌্যালীতে জাপার শোডাউন ঃ এদিকে দলের ৩২তম প্রতিষ্টা বার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত র‌্যালীর নামে রাজধানীতে ব্যাপক শোডাউন করেছে জাতীয় পার্টির নেতারা। র‌্যালিতে অংশ নেওয়ার জন্য সোমবার সকাল থেকেই রাজধানীর প্রায় সকল থানা ও ওয়ার্ড থেকে খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে জাপার নেতাকর্মীরা জড়ো হতে থাকে ইঞ্জিনির্য়াস ইনস্টিটিউট এর সমানে। আনুষ্ঠানিক ভাবে র‌্যালী শুরু হওয়ার আগেই ইঞ্জিনির্য়াস ইনস্টিটিউট এর বাইরের অংশ নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে সৈয়দ আবু হোসেন বাবলার নির্বাচনী এলাকা শ্যামপুর কদমতলি থানা জাতীয় পার্টির চার থেকে পাঁচ হাজার নেতাকর্মীর একটি বিশাল মিছিল মৎস্য ভবনের সামনে আসলে পুরো সড়কে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। নেতাকর্মীদের হাতে হাতে শত শত লাঙ্গল, এরশাদ, রওশন ও বাবলার বিশাল আকৃতির ছবি, শত শত ব্যানার ফেস্টুন, ব্যান্ড পার্টির তালে তালে নান্দনিক সাজে সজ্জিত বাবলার এই মিছিল অনুষ্ঠান স্থলে আসার সঙ্গে সঙ্গে পুরো এলাকা উৎসব মুখর হয়ে উঠে। এই মিছিলের নেতৃত্ব দেন জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা সুজন দে, শেখ মাসুক রহমান, কাওসার আহমেদ ও ইব্রাহিম মোল্লা। এছাড়া র‌্যালীতে জাতীয় ছাত্র সমাজ, জাতীয় যুব সংহতির ও জাতীয় স্বেচ্ছাসেবক পার্টি, কৃষক পার্টি, মহিলা পার্টির নেতাকর্মীদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। র‌্যালীটি ইঞ্জিনির্য়াস ইনস্টিটিউট এর সমানে থেকে শুরু হয়ে মৎস ভবন, জাতীয় প্রেস ক্লাব, পল্টন মোড়, বিজয় নগর হয়ে কাকরাইলের পার্টি অফিসে এসে শেষ হয়।



 

Show all comments
  • দিদার ২ জানুয়ারি, ২০১৮, ৩:০৩ এএম says : 0
    এতো দিন পরে বুঝলেন ?
    Total Reply(0) Reply
  • Ashraf ২ জানুয়ারি, ২০১৮, ৪:১০ এএম says : 0
    "আওয়ামী লীগ তিনবার আমাদের সহযোগিতায় ক্ষমতায় এসেছে। বিনিময়ে কিছুই পাইনি" - জেলের ভাত খেয়ে বাকি জীবন কাটানোর হাত থেকে রেহাই পেয়েছেন। শুধু তাই নয়, রাজা না হয়েও রাজার হলে আছেন, সরকারের সমালোচনা করছেন যখন মন চায় তখন।
    Total Reply(0) Reply
  • মাসুদ ২ জানুয়ারি, ২০১৮, ১০:১১ এএম says : 0
    ইতিহাস চর্চা করেন তাহলে ?
    Total Reply(0) Reply
  • MD Hasan ২ জানুয়ারি, ২০১৮, ১২:০৮ পিএম says : 0
    ৫ জানুয়ারী নিবাচনে আপনে না গেলে অন্য রকম হত আপনে এত দিনে বুজতে পারলেন সেই জন্য ধনবাদ।
    Total Reply(0) Reply
  • Zakaria Al Helal ২ জানুয়ারি, ২০১৮, ১২:১৫ পিএম says : 0
    তাহলে হাসপাতালে গেলেন কেন?
    Total Reply(0) Reply
  • Ripon Khan ২ জানুয়ারি, ২০১৮, ১২:২০ পিএম says : 0
    এই জাতি কোনদিন আপনাদের ক্ষমা করবে না
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: এরশাদ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ