হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির খড়গ : আসামের এনআরসি এবং বাংলাদেশ
কিশোর শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়ক দাবীর আন্দোলনে ঢাকাসহ সারাদেশে তীব্র রাজনৈতিক উত্তেজনা ও অনিশ্চয়তা দেখা যাচ্ছিল,
দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ ও লোকসানি ১৩টি রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন টেক্সটাইল ও কটনমিল পিপিপি (সরকারি-বেসকারি অংশীদারিত্ব) ভিত্তিতে চালু করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। অর্থনৈতিক বিষয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ জন্য ব্যয় হবে ১৫ হাজার ২০০ কোটি টাকা। খবর হিসাবে এটি ভালো খবর, উৎসাহজনক খবর। বন্ধ ও লোকসানি মিলগুলো রাষ্ট্রের ঘাড়ে বোঝা হয়ে আছে। সেগুলো ঠিকঠাক করে চালু করা গেলে রাষ্ট্রের বোঝা যেমন নেমে যাবে তেমনি মিলগুলোতে নতুন নতুন লোকের কর্মসংস্থান হবে, উৎপাদন হবে, সব মিলে দেশ ও মানুষ লাভবান হবে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, মিলগুলো এতদিনে ঠিকঠাক করার পর্যায়ে আছে কিনা। যদি থাকে, ভালো। যদি না থাকে তবে তাদের পেছনে টাকা ঢালা কি ঠিক হবে? তার চেয়ে নতুনভাবে মিল স্থাপন করাই কি যৌক্তিক নয়? আমরা জানি না, মিলগুলো সংস্কার করে, প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সংযোজন করে চালু করার পর্যায়ে আছে কিনা। এ ব্যাপারে যাচাই-বাছাই বা সম্ভব্যতা নিরূপিত হয়েছে কিনা। এ ক্ষেত্রে অতীতের অভিজ্ঞতা খুব সুখকর নয়। অতীতে বহু মিল-কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কিংবা লোকসানের কারণে বেসরকারী খাতে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। সেসব মিল-কারখানার অধিকাংশেরই এখন কোনো হদিস নেই। মিল-কারখানার জমি, স্থাপনা, যন্ত্রপাতি এমন কি গাছপালা পর্যন্ত উধাও হয়ে গেছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে মিল-কারখানার জায়গায় বাণিজ্যিকভাবে বসতবাড়ি, দোকানপাট ও বিপনী বিতান ইত্যাদি গড়ে উঠেছে। মিল-কারখানাও গেছে, জমি-জিরাতও বেহাত হয়ে গেছে।
রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোনো শিল্প বা প্রতিষ্ঠানই ভালো অবস্থায় নেই। ব্যতিক্রম বাদে সবই চলছে লোকসানে। এ জন্য প্রতিবছর সরকারকে বিপুল অংকের ভর্তুকি দিতে হচ্ছে। জনগণের ট্যাক্সের টাকার এই অপচয় কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। অথচ এই অবস্থাকে টিকিয়ে রাখা হয়েছে কিছু মানুষের সুবিধা দেওয়ার জন্য। সরকারের কাজ শিল্প-কারখানা চালানো বা ব্যবসা করা নয়। যদি তা করতেই হয় তাহলে ভালোভাবে করতে হবে, লাভজনকভাবে করতে হবে। না হলে বেসরকারী খাতে ছেড়ে দিতে হবে। ছেড়ে দিতে হবে সেই সব উদ্যোক্তার কাছে যারা অভিজ্ঞ, দক্ষ ও বিশ্বাসী। শর্ত করে দিতে হবে, মিল-কারখানা বা প্রতিষ্ঠান তাদের চালাতে হবে, লাভজনক করতে হবে এবং কোনো অজুহাতেই তা বন্ধ করা কিংবা জমিজমা, সম্পদ অন্য কাজে ব্যবহার করা যাবে না। যদি এরকম হয়, তবে উপযুক্ত জরিমানা বা শান্তি ভোগ করতে হবে। এ ধরনের শর্ত, সেইসঙ্গে নিয়মিত মনিটারিং ও জবাবদিহিতা থাকলে বেসরকারীখাতে ছেড়ে দেয়া মিল-কারখানা ও প্রতিষ্ঠান বেহদিস হয়ে যেতে পারতো না।
পিপিপি ভিত্তিতে ১৩টি টেক্সটাইল ও কটনমিল চালুর যে সিদ্ধান্ত হয়েছে শেষ পর্যন্ত সেগুলো চালু করা সম্ভব হবে কিনা সেটা কম বড় প্রশ্ন নয়। পিপিপি ভিত্তিক প্রকল্প বাস্তবায়নের অভিজ্ঞতা মোটেই আশাপ্রদ নয়। এখানে নানা উপসর্গ ও প্রতিবন্ধকতা বিদ্যমান। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে বলা হয়েছে, পিপিপি ভিত্তিক প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রধান বাধা দুর্নীতি। এছাড়া অস্বাভাবিক ব্যয়, সময় মত প্রকল্প বাস্তবায়ন না হওয়া, অসম্পূর্ণ সম্ভাব্যতা যাচাই, সরকারের নজরদারির অভাব এবং সক্ষমতার ঘাটতি থাকায় পিপিপিভিত্তিক প্রকল্প বাস্তবায়ন চ্যালেঞ্জের মুখে। পিপিপি সংক্রান্ত ওই সেমিনারে বক্তরা বলেছেন, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে যত অবকাঠামো সংক্রান্ত প্রকল্প বাস্তবায়ন প্রয়োজন সরকারের একার পক্ষে তা করা সম্ভব না হওয়ায় পিপিপি ভিত্তিতে বিভিন্ন প্রকল্প নেওয়া হয়। এর মধ্যে রয়েছে রেল, টেলিকম, বিদ্যুৎসহ নানাখাতে ৪৭টি প্রকল্প। এসব প্রকল্প ঠিকমত যাচাই বাছাই করে, সম্ভব্যতা নিরীক্ষণ করে নেয়া হয়েছে কিনা সে প্রশ্নের পাশাপাশি প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়নে অর্থের যথেষ্ট অভাব রয়েছে। এতে বাস্তবায়ন বিলম্বিত হচ্ছে, ব্যয়ও বাড়ছে। ব্যাংকগুলোর আর্থিক অবস্থা শোচনীয়। এখাত থেকে পর্যাপ্ত অর্থ সংস্থানের আশা কম। এমতাবস্থায়, প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন বড় রকমের ঝুঁকিতে পড়েছে।
এডিবির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় বিভিন্ন দেশে পিপিপিতে বিনিয়োগ বাড়লেও কমেছে বাংলাদেশে। বাংলাদেশ, চীন, ভারত ইন্দোনেশিয়া, কাজাখিস্তান পাপুয়া নিউগিনি, ফিলিপাইন, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামে পিপিপি উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপের ওপর তথ্য যাচাই করে প্রণীত ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, পিপিপি ভিত্তিক প্রকল্প বাস্তবায়নে চীন অনেক দূর এগিয়েছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের চিত্র ভিন্ন। বিদ্যুৎ খাতের ওপর বাংলাদেশ বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার পরও এখাতে পিপিপিভিত্তিক প্রকল্প বাস্তবায়নের অগ্রগতি সামান্যই। পরিবহন খাতে ১৩টি প্রকল্প হাতে নেয়া হলেও সেগুলোর বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি। ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পটি পিপিপির আওতায় করার কথা থাকলেও বিনিয়োগকারী পাওয়া যায়নি। এরপর এটি নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এডিবির ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেছেন, এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলোর উন্নয়নে পিপিপি খাতের গুরুত্ব অপরিসীম। এক্ষেত্রে কোনো কোনো দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, কোনো কোনো দেশ পড়ছে পিছিয়ে। এখাতে নেওয়া প্রকল্পের সফলতার জন্য সক্রিয়তার পরিবেশ দরকার।
এই সক্রিয়তার পরিবেশ যে বাংলাদেশে কম, সেটা পিপিপি খাতে পিছিয়ে পড়া থেকেই প্রমাণিত হয়। দুর্নীতি যেখানে প্রধান বাধা, যেখানে অর্থাভাব প্রকট, দক্ষতা নি¤œপর্যায়ে এবং অস্বভাবিক ব্যয়, সময়হরন, মনিটারিংয়ের অভাব বিদ্যমান সেখানে এরচেয়ে বেশি আশা করা যায়না। এই প্রেক্ষাপটে পিপিপি ভিত্তিতে বন্ধ ও লোকসানি টেক্সটাইল ও কটন মিলগুলো চালু করা কতদূর সম্ভব হবে সে প্রশ্ন খুবই স্বাভাবিক। দুর্নীতি নিরোধ ও সক্ষমতা না বাড়ালে তা অর্থলোপাটের কারণে পরিণত হবে এবং শেষ পর্যন্ত তা ব্যর্থতা ও হতাশা ছাড়া কিছুই ডেকে আনবে না।
শুধু পিপিপি ভিত্তিক প্রকল্পেই নয়, যাবতীয় প্রকল্পের ক্ষেত্রেই দুর্নীতি, লুটপাট, সক্ষমতার অভাব প্রধান অনুসঙ্গ। এমন কোনো খাত নেই সেখানে দুর্নীতি ভয়াবহ আকারে বিস্তৃত হয়ে পড়েনি। প্রকল্প আছে, অথচ দুর্নীতি নেই, লুটপাট নেই, সক্ষমতার ঘাটতি নেই এমন নজির বিরল। আর্থিক সক্ষমতার অভাব থাকলেও প্রকল্প ব্যয় কিন্তু অস্বাভাবিকভাবেই দেখানো হয়। সেটা যে ভাগাভাগী করে লুটপাটের জন্য, তা বলাই বাহুল্য। সড়ক নির্মাণ বা উন্নয়নে প্রতি কিলোমিটারে আমাদের দেশে কত খরচ পড়ে? এলাকা ভেদে তা বিভিন্ন রকম হতে পারে। একথা ওয়াকিবহাল মহলের অজানা নেই, সড়ক উন্নয়নে প্রতি কিলোমিটারে আমাদের দেশে ব্যয় অন্যান্য দেশের তুলনায় বেশি। কত বেশি? তার কোনো ঠিক নেই। পত্রিকান্তরে প্রকাশিত এক খবরে জানা গেছে, চট্টগ্রাম শহরে সড়ক উন্নয়নে প্রতি কিলোমিটারের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে তিন কোটি টাকারও বেশী। খবরে উল্লেখ করা হয়েছে, ১০৮ দশমিক ৫০ কিলোমিটার সড়ক উন্নয়নে মোট ব্যয় প্রাক্কলন করা হয়েছে ৩৪২ কোটি ৬১ লাখ ৪৪ হাজার টাকা। ব্যয় বিভাজন থেকে দেখা যায়, প্রতি কিলোমিটার সড়ক উন্নয়নে ব্যয় হবে তিন কোটি ১৫ লাখ ৭৭ হাজার টাকা। ঢাকাই বা কম কিসে? ওই খবরেই বলা হয়েছে, ঢাকা শহরে প্রতি কিলোমিটার সড়ক উন্নয়নে ব্যয় ধরা হয়েছে দুই কোটি ৭৮ লাখ টাকা। এই সড়ক কি দিয়ে এবং কীভাবে উন্নয়ন করা হবে, আমরা জানিনা। যারা এই ব্যয় নির্ধারণ করেছেন, তারাই বলতে পারবেন। বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের মূখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেনের মতে, চীন-ভারত এমনকি ইউরোপীয় দেশগুলোর তুলনায় প্রতি কিলোমিটার সড়ক নির্মাণে বাংলাদেশের ব্যয় অনেক বেশি। এখানে দুর্নীতি একটা মূখ্য ভূমিকা-পালন করে।
প্রকল্প বাস্তবায়ন অসমাপ্ত রেখে টাকা উত্তোলন তো অতি সাধারণ ঘটনা। প্রকল্প অসমাপ্ত, কিন্তু সমাপ্ত হয়েছে বলে দেখিয়ে টাকা তুলে নেয়ার ভুরি ভুরি নজির রয়েছে। একটি দৈনিকে ক’দিন আগে খবর বেরিয়েছে, হাতিয়ার প্রত্যন্ত এলাকার জলাভূমিতে যে হাইব্রিড বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছিল তা শেষ হয়েছে বলে ঘোষণা দেওয়া হলেও আসলে শেষ হয়নি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সমুদয় টাকা খরচ দেখিয়ে দিয়েছে। আরেক খবরে দেখা গেছে, মাগুরা জেলার খয়রাতি সহায়তা ভিত্তিক ১৭৭৬টি প্রকল্পের অধিকাংশই ভূয়া। ভূয়া প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে দেখিয়ে ২৪ কোটি টাকা তুলে ভাগাভাগি করে নিয়েছে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। ওদিকে সিলেট-সুনামগঞ্জে ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো উন্নয়নে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। কাজ না করেই প্রকল্পগুলোর সিংহভাগ টাকা তুলে নেয়া হয়েছে। গত বুধবার একটি দৈনিকে ‘কাজ না করেই টাকা পকেটে’ শিরোনামে একটি খবর প্রকাশিত হয়েছে। খবরে জানা গেছে, ঝিনাইদহের পাঁচটি ইউনিয়নে ৬৪টি প্রকল্পে মোট বরাদ্দ ছিল প্রায় ৬ কোটি টাকা। তার মধ্যে একটি ইউনিয়নে ১৬টি প্রকল্পের একটিতেও কাজ না করে টাকা তুলে নেয়া হয়েছে। বাকীগুলোতে নামকাওয়াস্তে কাজ হয়েছে।
কর্মপরিকল্পনা ছাড়া কি কোনো প্রকল্প নেওয়া ও বাস্তবায়ন করা যায়? অতি আশ্চর্যের বিষয়, সেটাও আমাদের দেশে হয়েছে বা হচ্ছে। বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এমন তথ্য। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কর্মপরিকল্পনা ছাড়াই বেশ কিছু প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। ফলে নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পের কাজ শেষ হচ্ছে না। অতিরিক্ত সময় লাগছে। ব্যয়ও বাড়ছে। প্রকল্পের সুফল থেকে বঞ্চিত থাকছে জনগণ। ১০টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগে এমন প্রকল্প রয়েছে। এগুলো হলো : ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ, অর্থে বিভাগ, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, তথ্য ও প্রযুক্তি বিভাগ, বিদ্যুৎ বিভাগ, সেতুবিভাগ, নির্বাচন কমিশন, তথ্য মন্ত্রণালয়, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ, এবং সুরক্ষা ও সেবা বিভাগ। এই তালিকায় পদ্মাসেতু প্রকল্পও রয়েছে। প্রতিবেদন মতে, কর্মপরিকল্পানাহীন প্রকল্পগুলোর অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সাবেক মহাপরিচালক মোস্তফাকে মুজেরি বলেছেন, যে কোনো প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে মূল কাজই হলো কর্মপরিকল্পনা তৈরি করা। কিন্তু এটা খুবই আশ্চর্যের বিষয়, আইএমইডির প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, কর্মপরিকল্পনা ছাড়াই বিভিন্ন প্রকল্পের বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। কর্মপরিকল্পনা না থাকলে কখনই প্রকল্পের বাস্তবায়ন সুষ্ঠু হবে না। এটা দুরাশা ছাড়া আর কিছুই নয়। কর্মপরিকল্পনা থাকলে বুঝা যায় কোন কাজটা কখন করতে হবে। কোনটি আগে, কোনটি পরে। তখন প্রকল্প বাস্তবায়নে একটা সমন্বয় থাকে। কিন্তু কর্মপরিকল্পনা ছাড়া প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে সময় ও অর্থব্যয় বেশি হবে। বলার অপেক্ষা রাখেনা, এ ধরনের কর্মপরিকল্পনাবিহীন প্রকল্পে টাকা মারার সুযোগ থাকে বেশী।
প্রকল্পে দুর্নীতি নতুন কোনো বিষয় নয়। তবে সেটা এখন লাগামহীন হয়ে পড়েছে। টাকা মারার জন্যই প্রকল্প, অবস্থাটা এমনই হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশ্ব ব্যাংকসহ বিভিন্নদাতা সংস্থা তাদের অর্থায়নে গৃহীত প্রকল্পগুলোতে দুর্নীতির অভিযোগ করেছে বহুবার। প্রকল্প বাস্তবায়নে দুর্নীতি ও ধীরগতির কারণে তারা অর্থ ছাড়া যেমন বিলম্ব করেছে তেমনি অনেক প্রকল্প থেকে টাকা ফেরৎ নিয়ে গেছে। প্রকল্প আর দুর্নীতি একাট্টা হয়ে গেছে। যেখানে প্রকল্প সেখানেই দুর্নীতি। এ অবস্থায় প্রত্যাশিত উন্নয়ন কীভাবে হবে? সরকার বেশুমার ছোটবড় উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে বগল বাজাচ্ছে। দেশ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল, এমন দাবিও করছে। কিন্তুু বাস্তবে উন্নয়ন দৃশমান হচ্ছে না। এর প্রধান কারণ যে দুর্নীতি, তা উল্লেখের অপেক্ষা রাখেনা। উন্নয়নের ফানুস উড়িয়ে তলে তলে দুর্নীতি ও লুটপাটের মহোৎসব চলছে। বলে রাখা ভালো, এই দুর্নীতি ও লুটপাটের বেশীর ভাগই করছে সরকারি দলের লোকজন এবং দলবাজ কর্মকর্তারা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।