Inqilab Logo

সোমবার, ০১ জুলাই ২০২৪, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, ২৪ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

৬ সিটিতে ভোটের হাওয়া

এসিড টেস্ট হিসেবে কাজ করবে সবার জন্য

স্টালিন সরকার | প্রকাশের সময় : ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

উত্তরের জনপদ রংপুর সিটিতে নির্বাচনের নামে হয়ে গেল ভোট উৎসব ; কিন্তু দেশের অন্য ৬ সিটিতে এখনো বইছে ভোটের হাওয়া। দরজায় দরজায় কড়া নাড়ছে ভোট প্রার্থীরা। নির্বাচন কমিশন এখনো তফসিল ঘোষণা করেনি; কিন্তু নির্বাচনী আবহ চলছে ঢাকা উত্তর, গাজীপুর, রাজশাহী, সিলেট, খুলনা ও বরিশাল সিটিতে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে এই সব সিটিতে নির্বাচন হওয়ার কথা। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ এসব সিটির ‘ভোটে’ নির্বাচন কমিশন কুমিল্লা ও রংপুরের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে চায়। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ‘উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে মানুষ নৌকায় ভোট দেবে’; অন্যদিকে বিএনপির নেতাকর্মীরা ‘জুলুম-নির্যাতনের প্রতিবাদে জনগণ ধানের শীষে ভোট দেবে’ বিশ্বাস নিয়েই সাংগঠনিক প্রচারণা চালাচ্ছেন। শহরময় শোভা পাচ্ছে সম্ভাব্য প্রার্থীদের পোষ্টার-লিফলেট-ব্যানার। ৬ সিটির নাগরিকরা ভোট দেয়ার জন্য আছেন মুখিয়ে। স্থানীয় সরকার গবেষক ও নির্বাচন বিশেষজ্ঞ সুজনের সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার মনে করেন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ৬ সিটির নির্বাচন আওয়ামী লীগ-বিএনপি-ইসি সবার জন্য কঠিন পরীক্ষা। এই পরীক্ষায় সবাই উত্তীর্ণ হতে চাইবে। তিনি বলেন, ইসি চাইবে রংপুরের মতোই আস্থা ধরে রাখতে। আওয়ামী লীগ চাইবে ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে। আর বিএনপি তাদের জনপ্রিয়তা প্রমাণ করে ক্ষমতায় আসতে চাইবে। ৬ সিটির নির্বাচন এসিড টেস্ট হিসেবে কাজ করবে সবার জন্য।
রংপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের পর নির্বাচন কমিশন বেশ ফুরফুরে। শান্তিপূর্ণ ভাবে স্থানীয় এই নির্বাচন জাতিকে উপহার দেয়ায় বিশেষজ্ঞরাও ইসিকে ‘পরীক্ষায় উত্তীর্ণ’ সার্টিফিকেট দিচ্ছেন। কুমিল্লা সিটির নির্বাচনের ধারাবাহিকতায় রংপুর সিটির শান্তিপূর্ণ নির্বাচন ইসির প্রতি কিছুটা হলেও মানুষের আস্থার সৃষ্টি করেছে। ঢাকা উত্তর, রাজশাহী, খুলনা, সিলেট, বরিশাল ও গাজীপুর সিটিতে পা ফেললেই বোঝা যায় মানুষ নির্বাচনের জন্য মুখিয়ে আছে। এখনো ইসি নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা এবং রাজনৈতিক দলগুলো আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রচারণা শুরু না করলেও ৬ সিটিতে বসবাসরত নাগরিকদের মধ্যে সর্বত্রই নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। মেয়র ও কাউন্সিলর পদে সম্ভাব্য প্রার্থীরাও জনসংযোগ করছেন; ধর্মীয়, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানাদিতে উপস্থিতি বাড়িয়ে দিয়েছেন। স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. তোফায়েল আহমদ মনে করেন যথা সময়ে ৬ সিটির নির্বাচন হওয়া প্রয়োজন। তিনি বলেন, শুধু নির্বাচন নয়; একই সঙ্গে স্থানীয় সরকারগুলোকে শক্তিশালী করে জনগণের ক্ষমতা জনগণের হাতে ছেড়ে দেয়াই স্বেয়। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ‘আস্থার’ পরীক্ষা দিতে হচ্ছে নির্বাচন কমিশনকে। আর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এবং দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপিকে দিতে হচ্ছে ‘জনপ্রিয়তার’ পরীক্ষা। দেশের ছয়টি গুরুত্বপূর্ণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের মাধ্যমে দল দুটির গ্রহণযোগ্যতা ও জনপ্রিয়তা যাচাইয়ের পর তাদের মুখোমুখি হতে হবে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসার কঠিন পরীক্ষায়। তাই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন নিয়ে চির প্রতিদ্ব›িদ্ব দল দুটির ভেতরে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি। বড় বড় শহরে বসবাসরত তৃর্ণমূলের নেতাকর্মীরা আগাম প্রচারণা শুরু করে দিয়েছেন। বসে নেই নির্বাচন কমিশনও। দায়িত্ব গ্রহণের পর বর্তমান কমিশনের অধীনে কুমিল্লা ও রংপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন হয়েছে। ছোট্ট পরিসরে ওই দুটি নির্বাচনে সাফল্য দেখিয়েছে ইসি। কিন্তু জাতীয় পরিসরে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনে ইসি কতটুকু আন্তরিক, মাঠ পর্যায়ে তাদের প্রভাব কতটুকু, তাও যাচাই হবে ৬ সিটির আসন্ন নির্বাচনে। তাই সবার দৃষ্টি এখন আলোচিত ওইসব সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের দিকে।
৬ সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের জন্য খুবই স্পর্শকাতর। কারণ তাদের পক্ষ্যে আরেকবার ৫ জানুয়ারীর মতো বিতর্কিত নির্বাচন করা সম্ভব নয়। আগাম না হলেও সংবিধান অনুযায়ী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন করতে হবে সব দলের অংশগ্রহণে। অথচ মাঠের বিরোধী দল বিএনপি ‘নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের’ দাবিতে সোচ্চার। এ অবস্থায় সিটি কর্পোশেন নির্বাচনগুলোতে বিগত ঢাকা উত্তর-ঢাকা দক্ষিণ-চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনের মতো কেন্দ্র দখলের ভোট করা সম্ভব নয়। এ ধরণের ঘটনা ঘটলে বিএনপির ‘নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি’র প্রাসাঙ্গিকতা আরো জোড়ালো হবে। অন্যদিকে ৬ সিটিতে আওয়ামী লীগের দলীয় অবস্থা রংপুর সিটির চেয়েও খারাপ। রংপুর সিটিকে প্রায় এক লাখ ভোটের ব্যবধানে নৌকার প্রার্থী পরাজিত হয়েছে। সেখানে বিএনপির অবস্থা বেহাল। বিজয়ী হয়েছে গৃহপালিত বিরোধী দল জাতীয় পার্টির প্রার্থী। কিন্তু অনুষ্ঠিতব্য ৬ সিটিতে প্রধান প্রতিপক্ষ বিএনপির অবস্থা অনেক ভাল। ঢাকা উত্তরের মেয়র আনিসুল হক ব্যাক্তিগত ভাবে পরিচ্ছন্ন এবং তার কিছু কর্মকাÐে মানুষ জনসন্তুষ্টি ছিল। কিন্তু বিগত মেয়র নির্বাচনে জনগণকে ভোট দেয়ার সুযোগ না দেয়া এবং রাজধানীতে নানামুখী ভোগান্তির কারণে জনগণ সরকারের ওপর চরম অসন্তুষ্ট। আবার ২০১৩ সালে রাজশাহী, খুলনা, সিলেট, বরিশাল সিটির নির্বাচনে বিপুল ভোটের ব্যাবধানে পরাজিত হয়েছে আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা। ভোটের পর ‘নির্বাচিত মেয়রদের’ মামলায় জর্জরিত করে দফায় দফায় করাবন্দী এবং প্রশাসনিক ক্ষমতাবলে মেয়রদের সাময়িক বরখাস্ত সিটি কর্পোরেশনগুলোতে বসবাসকারী ভোটাররা স্বাভাবিক ভাবে মেনে নেননি। তাদের ধারণা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণেই নির্বাচিত মেয়রদের কাজ করতে দেয়া হয়নি। সরকারের ওপর ক্ষুব্ধ ভোটাররা আরো বেশি বেশি করে এবার নির্যাতিত ব্যাক্তিদের ভোট দিতে পারে। এই ‘ভীতি’ সরকারের নীতি নির্ধারকদের পেয়ে বসেছে। তবে নির্বাচন বিশেষজ্ঞ সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব) সাখাওয়াত হোসেন বলেন, রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন এবং জাতীয় নির্বাচনকে সমাস্তারালে নেওয়া যাবে না। তবে স্থানীয় নির্বাচনগুলো সময়মতো হওয়া অত্যাবশ্যক। সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার মনে করেন রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ হয়েছে। এজন্য আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে তিনি আশা প্রকাশ করে বলেছেন, নির্বাচন কশিনার, সরকার, নাগরিক সমাজ এবং গণমাধ্যমও সবাই তাদের ভূমিকা যথাযথভাবে পালন করবেন। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় জাতীয় নির্বাচন ভালোভাবেই হবে। তবে তা না হলে আরেকটি বির্তকিত নির্বাচন আমাদের জন্য কাল হয়ে দাঁড়াতে পারে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক যোগাযোগ ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘রংপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী পরাজিত হলেও গণতন্ত্রের বিজয় হয়েছে। সরকারের সহায়তায় নির্বাচন কমিশন সেখানে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করতে পেরেছে’। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘রংপুরে নির্বাচন সামগ্রীক ভাবে নিরপেক্ষ হয়েছে; তবে ইসির প্রতি আস্থার সৃষ্টি হয়নি’। কে এম নুরুল হুদার নের্তৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশনের প্রতি বিএনপির যাতে আস্থার সষ্টি হয় সে লক্ষ্যে ৬ সিটির নির্বাচনী তফসীল ঘোষণা করে সেখানে নিরপেক্ষ নির্বাচন করা জরুরী।
স্থানীয় সরকার নির্বাচনের বিধান অনুযায়ী সিটি করপোরেশনের প্রথম সভা থেকে করপোরেশনের মেয়াদ গণনা শুরু হয়। ৫ বছর মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগের ৬ মাসের মধ্যে যে কোনো দিন ভোট গ্রহণ করা যায়। এই হিসাবে ২০১৮ সালের ৮ মার্চ থেকে ৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে গাজীপুর, ১৩ মার্চ থেকে ৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সিলেট, ৩০ মার্চ থেকে ২৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে খুলনা, ৯ এপ্রিল থেকে ৫ অক্টোবরের মধ্যে রাজশাহী, ২৭ এপ্রিল থেকে ২৩ অক্টোবরের মধ্যে বরিশাল সিটি করপোরেশনের নির্বাচন হওয়ার কথা। আনিসুল হকের মৃত্যুর পর ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন আগামী বছরের ফেব্রæয়ারী মাসে করার ঘোষণা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। রংপুরে পরাজিত হলেও ৬ সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে দলের ভেতরে প্রস্তুতি শুরু করেছে আওয়ামী লীগ। নির্বাচনকে সামনে রেখেই গত ১ নভেম্বর রাজশাহী, ৮ নভেম্বর রংপুর, ১১ নভেম্বর গাজীপুর ও ২৫ নভেম্বর খুলনা সিটি কর্পোরেশন এলাকায় দলের সদস্যপদ নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহ অভিযান পরিচালনা করা হয়। ৬ সিটির সাংগঠনিক দায়িত্ব পালন করেন চার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ছয় সাংগঠনিক সম্পাদক। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ সিলেটে, ডা. দীপু মনি গাজীপুরে, অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক রাজশাহী ও রংপুরে, আবদুর রহমান বরিশাল ও খুলনা সিটি কর্পোরেশনের দায়িত্ব পালন করেন। আওয়ামী লীগপন্থী বুদ্ধিজীবীরা মনে করছেন সরকারের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতেই সিটির জনগণ নৌকায় ভোট দেবে। রংপুর সিটি কর্পোরেশনের নৌকার প্রার্থীর পরাজয় এবং জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে গতকাল অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পরাজয়ের কোনো প্রভাব আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পড়বে না। সিটি করপোরেশন নির্বাচন একটি স্থানীয় নির্বাচন। এর সঙ্গে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কোনো সম্পর্ক নেই। একেক জায়গায় একেক দলের প্রার্থী নির্বাচিত হবেন এটা খুবই স্বাভাবিক। তবে দেশের নির্বাচন পদ্ধতিতে যে নিরপেক্ষ তা প্রমাণ হয়েছে। একই ধরনের কথা বলেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ। তিনি বলেন, সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের ফলাফলের প্রভাব জাতীয় নির্বাচনে পড়ে না।
বিএনপির সূত্রগুলো জানিয়েছে, সংগঠনিক দুর্বলতায় রংপুরে এ ধরণের ফলাফল হবে সেটা জানাই ছিল। অন্যান্য সিটিতে বিএনপির অবস্থান মজবুত। সেখানে নেতাকর্মীরা বেশ চাঙ্গা। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মতোই ৬ সিটিতে বিএনপির সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীরাও মাঠ সরগরম করে রাখছেন। ঘরোয়া বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছেন ভোট চাইছেন। এছাড়া দলের মনোনয়ন পেতে লবিং বেড়ে গেছে। চেয়াপারসনের গুলশানের অফিসে এখন প্রার্থীদের আনাগোনা বেড়েছে। বিএনপির স্থানীয় কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, বিএনপি মাঠে থাকার দল। সবসময় সংগ্রাম আন্দোলনে থাকে। দলটির নেতাকর্মীরা সব সময় চাঙ্গা।
২০১৩ সালের ৬ জুলাই অনুষ্ঠিত হয় গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন। আয়োতনে দেশের সবচেয়ে বড় এই সিটিতে বিপুল ভোটের ব্যাবধানে বিজয়ী হন বিএনপির প্রার্থী অধ্যাপক এম এ মান্নান। আইন শৃংখলা বাহিনী থেকে শুরু করে প্রশাসন যন্ত্র মান্নানের বিপক্ষ্যে ছিল। সরকারের দুই ডজন মন্ত্রী আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর পক্ষ্যে নির্বাচনী প্রচারণায় ছিলেন। এতো প্রতিকূলতার মধ্যেও প্রায় সোয়া লাখ ভোটের ব্যবধানে মেয়র নির্বাচিত হন এম এ মান্নান। মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর তার ওপর নেমে আসে নানা জুলুম নির্যাতন। একের পর এক মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের ক্ষমতাবলে তাকে একাধিকবার মেয়র পদ থেকে ‘সাময়িক বরখাস্ত’ করা হয়। আদালতের মাধ্যমে তিনি আবার সেই পদে ফিরে আসেন। দফায় দফায় বরখাস্ত এবং মাসের পর মাস কারাবন্দী থাকায় মেয়াদের অধিকাংশ সময় ‘মেয়র’ পদে দায়িত্ব পালন করতে পারেননি। গাজীপুর সিটির আগে ২০১৩ সালের ১৫ জুন অনুষ্ঠিত হয় রাজশাহী, সিলেট, খুলনা ও বরিশাল সিটির নির্বাচন। ওই নির্বাচনেও চারটিতেই বিএনপির প্রার্থীরা বিপুল ভোটে বিজয়ী হন। সিলেটের মেয়র আরিফুর হক চৌধুরীকে সাবেক অর্থমন্ত্রী কিবরিয়া হত্যা মামলাসহ বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার এবং দফায় দফায় বরখাস্ত, রাজশাহীর মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলকে মামলায় গ্রেফতার এবং বরখাস্ত, খুলনার মেয়র মনিরুজ্জামান মনিকে গ্রেফতার এবং বরখাস্ত করে কারাবন্দী করা হয়। মামলায় গ্রেফতার করে কারাবন্দী এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের ক্ষমতাবলে মেয়র পদ থেকে সাময়িক বরখাস্তের ঘটনা সাধারণ ভোটাররা ভালভাবে নেয়নি। ভোটাররা মনে করেন রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে সরকার প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের মেয়রকে বরখাস্ত করে ভোটারদের অপমান করেছেন। তবে রংপুর সিটির মানুষের মতোই ৬ সিটির নাগরিকরা ভোট উৎসব করার জন্য মুখিয়ে রয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর সম্ভাব্য প্রার্থীরা দৌঁড়ঝাপ করছেন; প্রচারণা চালাচ্ছেন। এখন অপেক্ষা শুধু নির্বাচনের।



 

Show all comments
  • শংকর ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৭, ৩:১৭ এএম says : 0
    সব চেয়ে বড় কথা হলো মানুষ কী পারবে তাদের প্রিয় প্রাথীকে বেছে নিতে ?
    Total Reply(0) Reply
  • খোরশেদ আলম ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৭, ৩:১৮ এএম says : 0
    সুষ্ঠ ভোট হলে একটিতেও আওয়ামীলীগ জিততে পারবে না।
    Total Reply(0) Reply
  • টিনা ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৭, ৩:১৯ এএম says : 0
    কি ঘটে বা ঘটতে যাচ্ছে এখন সেটাই দেখার বিষয়, কারণ দেখা ছাড়া তো আর আমাদের কোন কিছু করার নাই।
    Total Reply(0) Reply
  • আবদুর রহমান ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:২১ পিএম says : 0
    শুধু নির্বাচন নয়; একই সঙ্গে স্থানীয় সরকারগুলোকে শক্তিশালী করে জনগণের ক্ষমতা জনগণের হাতে ছেড়ে দেয়াই শ্রেয়।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভোট

১৫ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ