পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
গাজায় ফিলিস্তিনি সামরিক ঘাঁটিকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। রবিবার সকালে এই হামলায় কোনও হতাহতের কথা জানা যায়নি। মধ্যপ্রাচ্য ভিত্তিক সংবাদ পর্যবেক্ষণের ব্রিটিশ সংস্থা মিডল ইস্ট মনিটরের এক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা যায়। ফিলিস্তিনি নিরাপত্তা সূত্রের বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরাইলি বিমানগুলো গাজার উত্তর পশ্চিমাঞ্চলে হামাসের আল কাশেম ব্রিগেডের তিনটি স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা চালায়।
ইসরাইলি পুলিশ জানায়, শনিবার গাজা থেকে দুটো রকেট হামলা করা হয়েছে। রকেটগুলো ইসরাইলের প্রত্যন্ত অঞ্চল আশকেলনে আঘাত এনেছে।
গত ৬ ডিসেম্বর জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানীর স্বীকৃতি দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি জানান, খুব শিগগিরই জেরুজালেমে সরিয়ে নেওয়া হবে মার্কিন দূতাবাস। এরপর থেকেই সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। এখন পর্যন্ত সহিংসতায় ৮ জন ফিলিস্তিনি মারা গেছেন। সেই সময়ও প্রতিরোধ আন্দোলনে হামলা চালিয়েছিলো ইসরাইল। গুলি ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে পুলিশ।
এদিকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জেরুজালেমনীতি ঘোষণার পর থেকে চলমান বিক্ষোভের মধ্যে শনিবার পর্যন্ত ৪৩০ জনকে গ্রেফতার করেছে দখলদার ইসরাইলি বাহিনী। আর পশ্চিম তীর ও গাজায় তাদের হামলায় ৩ হাজার ৪০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি আহত হয়েছে। কুদস প্রেসের বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডলইস্ট মনিটর।
ফিলিস্তিনি কারাবন্দীদের সংগঠন প্রিজনার ক্নাব জানিয়েছে, পশ্চিম তীর ও জেরুজালেম থেকে ৪৩০ জন ফিলিস্তিনিকে গ্রেফতার করেছে ইসরাইল। এক বিবৃতিতে সংগঠনটি জানায়, গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে ২৩১ জন শিশু, ৯ জন নারী ও তিন জন আহত ফিলিস্তিনি রয়েছে।
ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্টের বরাত দিয়ে কুদস প্রেসের খবরে বলা হয়, ৬ ডিসেম্বরের পর থেকে শনিবার পর্যন্ত পশ্চিম তীরে দ্ইু হাজার ৮০৯ জন আহত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। একই সময়ে গাজা উপত্যকায় চিকিৎসা নিয়েছেন ৬২৪ জন।
রেড ক্রিসেন্টের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, আহতদের মধ্যে পশ্চিম তীরে ৭৭ জন ও গাজায় ১৮৭ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আর দুই জায়গায় রাবার বুলেটের আঘাতে আহত হয়েছেন ৬২৪ জন। দুই হাজার ৩০৯ জন কাঁদানে গ্যাসের কারণে শ্বাসকষ্টের শিকার হয়েছেন। কাঁদানে গ্যাসে আহতদের বেশিরভাগই দখলকৃত পশ্চিম তীর ও জেরুজালেমে হামলার শিকার হয়েছেন। বাকিরা পশ্চিম তীরে ইসরাইলি দখলদার বাহিনীর পিটুনি ও গাজায় বিমান হামলায় আহত হয়েছেন।
ইসরাইল-ফিলিস্তিনি সংকটের সবচেয়ে স্পর্শকাতর বিষয় জেরুজালেম। ১৯৮০ সালে জেরুজালেমকে রাজধানী ঘোষণা করেছিল ইসরাইল। তবে আন্তর্জাতিক স¤প্রদায় এর সমর্থন দেয়নি। আর ফিলিস্তিনিরা চায় দখলকৃত পূর্ব জেরুজালেম যেন তাদের রাজধানী হয়। এ কারণে সেখানে কোনও দেশ দূতাবাস স্থাপন করেনি। সবগুলো দূতাবাসই তেল আবিবে অবস্থিত। আর মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন নীতির বাইরে গিয়ে গত ৬ ডিসেম্বর জেরুজালেমকেই ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরপর থেকেই বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় বইছে। আর ফিলিস্তিনে শুরু হয়েছে তীব্র বিক্ষোভ। ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীর, পূর্ব জেরুজালেম ও গাজা উপত্যকায় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষ হচ্ছে ইসরাইলি বাহিনীর। এরপরও প্রতিদিনই তীব্রতর হচ্ছে বিক্ষোভ। ইসরাইলি বাহিনীর হামলার প্রতিবাদে ফিলিস্তিনিরা ইন্তিফাদার অন্যতম হাতিয়ার পাথর আর গুলতি নিয়ে রাস্তায় নেমে পড়েছে। তারা ইসারায়েলি বাহিনীর উপর পাথর ছুড়ে মারছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।