পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ম্যানহাটানের ব্যর্থ সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় আমি বিস্মিত যে কেন যুক্তরাষ্ট্র কেন উন্মাদদের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে উস্কানি যোগানোর পথে হাঁটছে। অথচ সন্ত্রাসীদের উত্তেজিত করার মত ভুল কাজ যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধ করা উচিত।
আমরা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ঘোষণার কথা জানতাম না যে তিনি জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেবেন এবং আমেরিকার দূতাবাস তেলআবিব থেকে সেখানে সরিয়ে নেয়ার কথা বলবেন। কিন্তু আমরা জানি যে বিল ক্লিনটন থেকে সকল প্রেসিডেন্টই সন্ত্রাসবাদের ভয়ে দূতাবাস স্থানান্তরের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছেন।
মধ্যপ্রাচ্য বিশেষজ্ঞ ও কূটনীতিকরা কয়েক বছর ধরে বলে আসছেন যে তিনটি ধর্মের পবিত্র স্থান জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী (যেখানে ফিলিস্তিনিদের অধিকার স্বীকৃত নয়) হিসেবে স্বীকৃতির ঘোষণা বিশ^ব্যাপী বিস্ফোরণ ঘটাবে। ইতোমধ্যেই খোদ ইসরাইলের উপর হামলা হয়েছে। আমাদের বেপরোয়া প্রেসিডেন্টের কথা বিবেচনা করলে, যিনি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এবং এর সম্ভাব্য বিরোধিতাকারীদের উপর তার সিদ্ধান্ত সেঁটে দেয়ার জন্য তা গর্বের সাথে টেলিভিশনে ঘোষণা করেছেন, এ হামলা অনিবার্য ছিল।
বেসামরিক লোকদের বিরুদ্ধে সহিংসতার কোনো ক্ষমা হয় না। কোনো ক্ষমাই নয়। আমেরিকার যাত্রীদের সে কাজের মাশুল দেয়া উচিত নয় খুব কম লোক্ই যার গুরুত্ব দেয়। কিন্তু বাস্তবতা বাস্তবতাই। আমরা ভাবতে পারি যে জেরুজালেম বিষয়ে মার্কিন ঘোষণার জবাব হিসেবে কারো নিরীহ লোকদের হত্যার চেষ্টা করা উচিত কিনা , আমরা জানি কেউ তা করবে। তার সন্ত্রাসবাদী, সর্বোপরি বিকৃতমস্তিষ্ক। অথবা একেবারেই ক্ষিপ্ত উন্মাদ। আমরা যখন নীতিগুলো গ্রহণ করি, আমার বলতে ঘৃণা হয়, যা সন্ত্রাসকে আমন্ত্রণের মত মনে হয়Ñ যে কোনো ঘটনায়ই তাদের প্রতিক্রিয়া আমাদের বিবেচনা করা দরকার।
তার মানে এই নয় যে মৌলবাদী মূল্যবোধ বা নীতির কাছে আমাদের আত্মসমর্পণ করতে হবে। কারণ আমরা তাদের প্রতিক্রিয়ার ভয় করি যারা তাদের দ্বারা হেনস্থা হয়েছেন। এটার অর্থ এই যে আমেরিকার স্বার্থ, মূল্যবোধ অথবা জাতীয় ঐকমত্যের অনুক‚ল নয়, শুধু অভ্যন্তরীণ কিছু নির্বাচনকেন্দ্রের স্বার্থ হাসিলের জন্য, এমন নীতি গ্রহণ বন্ধ করতে হবে।
ট্রাম্প গত সপ্তাহে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সেই জেরুজালেম দূতাবাস আইন হচ্ছে শতকরা একশ’ ভাগ ইসরাইল লবি কর্তৃক, বিশেষ করে আমেরিকান-ইসরাইল পাবলিক এফেয়ারস কমিটির (এআইপিএসি) চাপের ফল। এ সংগঠনই আইনটি লিখেছে এবং কংগ্রেস যাতে তা অনুমোদন করে সে জন্য তার ভান্ডারে থাকা সকল চাপ প্রদানের কৌশল প্রয়োগ করেছে।
এআইপিএসিতে কয়েক বছর কাজ করার প্রেক্ষিতে আমি সঠিক জানি তারা জেরুজালেম নিয়ে দাবার এ চাপ দিয়েছে। অন্য সব লবির মতই দাতাদের অর্থ প্রদান যাতে অব্যাহত থাকে সে জন্য তাদেরও একটি সাংগঠনিক কর্মকৌশল থাকা দরকার। সে জন্যই তারা জেরুজালেমকে বেছে নেয়। তাদের দাতাদের চাপে কংগ্রেস সদস্যরা বরাবরের মতই এগিয়ে যান এবং এ বিলকে দ্রæত আইনে পরিণত করেন।
এআইপিএসির এটা করার সকল প্রকার অধিকার আছে। প্রকৃত আমেরিকানদের উপর এ আইনের প্রভাব বিষয়ে উদ্বেগের কথা ভাবলে এটা নির্র্দিষ্টভাবে দেশের সকল নাগরিককে অস্ত্র প্রদানের আইন পাশ করলে ন্যাশনাল রাইফেল এসোসিয়েশন (এনআরএ) -এর উপর তার প্রভাবের মত হবে। এনআরএ-র মত এআইপিএসি তার সাংগঠনিক স্বার্থে যা প্রয়োজন তাই করে। আমাদের সরকার তাই করে যা আমাদের স্বার্থে প্রয়োজন।
ট্রাম্পের ঘোষণার পিছনে রয়েছে রাজনীতি, নীতি নয়। এটা যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থে নয় এবং কোনো আমেরিকানই কোনো ভাবেই তা কেয়ার করে না। (ধর্মীয় বা জাতীয়তাবাদী অধিকার ছাড়া, অল্পসংখ্যক ইসরাইলিই দূতাবাস/রাজধানী নিয়ে মাথা ঘামায়।) ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত ইসরাইলের সাথে আমাদের সম্পর্ক সুদৃঢ় করবে না যা যে কোনো দেশের চেয়ে শক্তিশালী, তা আমাদের দূতাবাস যেখানেই হোক না কেন। ইসরাইলের প্রতি আমাদের সীমাহীন পক্ষপাতিত্ব তা সে মার্কিন স্বার্থ থাক আর না থাক।
এসব কাজ কোনো কারণ ছাড়াই ধর্মপ্রাণ ক্ষুব্ধ করবে, আর বিপদাপন্ন হবে আমেরিকান, ইসরাইলি, ফিলিস্তিনি ও বিশ^ব্যাপী অন্যরা।
কিছু নীতি মৃত্যুপথে। এসব কাজ যা রাজনীতি, মোটেই কোনো নীতি নয়। এ ব্যাপারে পরবর্তীতে কীভাবে বিবেচনা করতে হবে? আমাদের নীতি যখন ঝুঁকির মুখে তখন কখনোই সন্ত্রাসের কাছে নতি স্বীকার করব না। তবে এটা যখন রাজনীতি, তখন ব্যাপারটা ভুলে যাওয়াই ভালো।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।