Inqilab Logo

সোমবার, ০১ জুলাই ২০২৪, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, ২৪ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

ট্রাম্পের প্রতি ঘৃর্ণা জানালেন এরশাদ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১১ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

জেরুজালেমকে ইহুদি রাষ্ট্র ইসরাইলের রাজধানী ঘোষণা করায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি ঘৃর্ণা জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান সাবেক প্রেসিডেন্ট এইচ এম এরশাদ। তিনি বলেন, ৬ ডিসেম্বর ট্রাম্প ইসরাইলের দখলকৃত পবিত্র জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। আমরা তার এই ঘৃণ্য ঘোষণার তীব্র নিন্দা, ক্ষোভ ও প্রতিবাদ জানাই। এই ঘোষণা জাতিসংঘের সিদ্ধান্তের পরিপন্থি। গতকাল গুলশানের এক হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। রংপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী প্রসঙ্গে বলেন, ভাই-ভাতিজার চেয়ে আমার কাছে দল বড়। দলীয় শৃংখলা ভঙ্গ করায় আসিফ সাহরিয়ারকে দল থেকে বহিস্কার করা হয়েছে।
এই সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় পার্টির মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার, প্রেসিডিয়াম সদস্য মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, জিয়াউদ্দিন আহমদ বাবলু, খন্দকার দেলোয়ার হোসেন, মীর আবদুস সবুর আসুদ প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
এইচ এম এরশাদ বলেন, ১৯৪৮ সালে ফিলিস্তিনীদের বিতারিত করে ইসরাইল নামের এই ইহুদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে। তখন থেকে ইহুদিরা আরবীয় ফিলিস্তিনী জনগোষ্ঠির উপর নির্মম নির্যাতন-অত্যাচার ও দখলদারিত্ব করেছে। দিনদিন তাদের অত্যাচারের মাত্রা বেড়েই চলছে। ১৯৬৭ সালে আরব-ইসরাইল যুদ্ধের আগে পূর্ব জেরুজালেম জর্ডানের অংশ ছিল। ১৯৬৭ সালে আরব-ইসরাইল যুদ্ধের পরে ইসরাইল জেরুজালেম সহ সিনাই ও গোলান উপত্যকা অস্ত্রের জোরে দখল করে নেয়। তখন জাতিসংঘ সহ সারাবিশ্ব ইসরাইলের এই দখলদারিত্বের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। তিনি বলেন, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ জেরুজালেম, সিনাই ও গোলান দখলের বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব গ্রহণ করে। সেই সময় জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ইসরাইলকে জেরুজালেমসহ দখলকৃত সকল আরব ভ‚খন্ড ছেড়ে দেওয়ার দাবী জানায়। এই প্রস্তাবে উল্লেখ আছে- ইসরাইলকে জেরুজালেম, সিনাই ও গোলান উপত্যকা ছেড়ে দিতে হবে এবং ১৯৬৭ সালের আগের সীমানায় তাদের ফিরে যেতে হবে। পরবর্তীকালে পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে প্যালেস্টাইনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব করা হয়। এব্যাপারে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ক্লিনটনের উদ্যোগে ইসরাইল ও প্যালেস্টাইনের মধ্যে নরওয়ের রাজধানী অসলোতে চুক্তিও স্বাক্ষরিত হয়। এই অসলো চুক্তি ছিল মধ্য প্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার মূল ভিত্তি। যুক্তরাষ্ট্র সহ সব পরাশক্তি অসলো চুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছিল। তখন পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন প্যালেস্টাইন রাষ্ট্র ঘোষণা করা সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু দূভার্গজনকভাবে ৯০ দশকে ইসরাইল জেরুজালেমকে রাজধানি ঘোষণা করে। তা সত্তে¡ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ কোনো রাষ্ট্রই ইসরাইলে তাদের দূতাবাস জেরুজালেমে স্থানান্তর করেনি। কারণ, ২৪২ নং প্রস্তাবে বলা ছিল ইসরাইল জেরুজালেমকে রাজধানী করতে পারবেনা। যেহেতু এটা দখলকৃত এলাকা। তাই আমরা জাতীয় পার্টি এবং আমাদের সম্মিলিত জাতীয় জোট মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একতরফাভাবে জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী ঘোষণার স্বীকৃতি দেওয়ার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবী জানাচ্ছি। জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী ঘোষণার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা না হলে কোনোভাবেই মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ফিরে আসবে না।
এরশাদ বলেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই ঘোষণার প্রতিবাদে সারাবিশ্বে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বিশেষ অধিবেশন বসেছে। আমরাও গোটা বিশ্বের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে অবিলম্বে জেরুজালেমকে ইসরাইলের দখলমুক্ত করার আহŸান জানাচ্ছি। আমরা প্যালেস্টাইনের জনগণের সাথে আছি, স্বাধীন প্যালেস্টাইন রাষ্ট্রের পাশে আছি, মুসলিম উম্মাহর সাথে আছি। ইসলামের প্রথম কেবলা আল আকসা মসজিদসহ জেরুজালেম মুক্ত রাখতে গোটা মুসলিম বিশ্বের প্রতি আমরা ইসরাইলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহŸান জানাচ্ছি। আমরা ট্রাম্পের এই ঘোষণার প্রতিবাদে আগামী ১২ ডিসেম্বর মঙ্গলবার রাজধানী ঢাকা বিক্ষোভ কর্মসূচী পালন করবো। আমরা আপনাদের মাধ্যমে আপামর জনগোষ্ঠিকে এই বিক্ষোভ কর্মসূচীতে অংশগ্রহণের আহŸান জানাই।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: এরশাদ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ