চরিত্র মানুষের শ্রেষ্ঠতম অলঙ্কার
সৃষ্টির সেরা জীব আশরাফুল মাখলুকাত- মানবজাতি। এ শ্রেষ্ঠত্ব মানুষ তার চরিত্র দিয়ে অর্জন করে নেয়।
\ তিন \
তাই স্ত্রী তার ঋন আদায়ের জন্য স্বামীর সম্পত্তি আটক করার অধিকার রাখে। এ প্রসঙ্গে মুসলিম আইন গ্রন্তে উল্লেখ রয়েছে, “কোন মৃত মুসলমানের উত্তরাধিকারীরা দেনমোহরের ঋণের জন্য ব্যক্তিগতভাবে দায়ী নয়। মৃতের কাছে প্রাপ্য অন্যান্য ঋনের মত দেন মোহর ঋণেও উত্তরাধিকারীর মৃতের সম্পত্তিতে প্রাপ্য অংশের আনুপাতিক হারে প্রত্যেক উত্তরাধিকারী দায়ী হবে। কোন মহিলার স্বামীর সম্পতি তার দখলে থাকলে স্বামীর অন্যান্য উত্তরাধিকারীরা তাদের নিজ নিজ অংশের দখল উদ্ধার করতে পারবে। একজন মুসলমান এক বিধবা এক পুুুত্র ও দু কন্যা রেখে মারা যায়। বিধবা ৩২০০ টাকার দেনমোহর ঋন পাবার অধিকারী। পুত্রের প্রাপ্য অংশ হল ৭/১৬ এবং সে ৭/১৬ এর ৩২০০ = ১৪০০ টাকা দিতে বাধ্য, এবং বিধবার দখলে স্বামীর সম্পত্তি থাকলে পুত্র ১৪০০ টাকা পরিশোধ করে বিধবার থেকে নিজ অংশ নিবে। প্রত্যেক কন্যার প্রাপ্য অংশ হল ৭/৩২ এবং সে বিধবাকে ৭/৩২ এর ৩২০০= ৭০০ টাকা প্রদান করার পর নিজ অংশ পাবে।
ইসলামে নারী-পুরুষ উভয়কে মিরাস প্রাপ্তির অধিকার দিয়েছে এবং তাদের জন্য আল্লাহ কর্তৃক নির্ধরিত অংশ রয়েছে। আল্লাহ তাআলা আরো ইরশাদ করেন,- পিতার সম্পত্তিতে কন্যার অংশ রয়েছে , ভাইয়ের সম্পত্তিতে বোনের অংশ রয়েছে, সন্তানের সম্পত্তিতে মায়ের অংশ রয়েছে, তদ্রæপ মৃত স্বামীর সম্পত্তিতে ও স্ত্রীর নির্ধারিত অংশ রয়েছে। পিতার সম্পত্তিতে কন্যার অংশ- সন্তানের সম্পত্তিতে মাতার অংশ- স্বামীর সম্পত্তিতে স্ত্রীর অংশ-ভাইয়ের সম্পত্তিতে বোনের অংশ- এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, স্ত্রীদের জন্য এক-চতুর্থাংশ হবে ঐ সম্পত্তির, যা তোমরা ছেড়ে যাও যদি তোমাদের কোন সন্তান না থাকে। আর যদি তোমাদের সন্তান থাকে, তবে তাদের জন্য হবে ঐ সম্পত্তির আট ভাগের এক ভাগ। আলোচ্য আয়াত নাযিলের প্রেক্ষাপট সম্পর্কে হাদীসে উল্লেখ করা হয়েছে, জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, একবার রুসূলুল্লাহ স.- এর সাথে বেরিয়ে আল-আসওয়াফ নামক স্থানে এক আনসারী মহিলার নিকট উপস্থিত হই। তখন ঐ মহিলা তার দুটি মেয়েকে নিয়ে রাসুলুল্লাহ স.-এর নিকট এসে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! এরা সাবিত ইবনু কায়িস রা.-এ কন্যা। এদের বাবা আপনার সাথে ওহুদের যৃদ্ধে গিয়ে শাহাদত বরন করেছেন। এদের চাচা এদের সমস্ত সম্পদ আত্য্রসাৎ করে নিয়ে গেছে। এদের জন্য কোন কিছু রাখেনি। সম্পদ ছাড়া তো এদের বিয়ে দেওয়া যাবে না। (অর্থ্যাৎ সহায়- সম্পত্তিহীন এ মেয়েদেরকে কেউ বিয়ে করবে না।) রাসূলুল্লাহ স.বললেন: আল্লাহ এ ব্যাপারে ফয়সালা করবেন। তখন মিরাসের আয়াত নাযিল হয়। মিরাসের আয়াত নাযিল হলে রাসূলুল্লাহ স. মেয়েদের চাচার কাছে লোক পাঠিয়ে বলেন : সাবিতের মেয়েদের তার সম্পদের তিন ভাগের দু‘ভাগ দিয়ে দাও এবং তাদের মাকে আট ভাগের এক ভাগ দাও। আর বাকী অংশ তোমার। ইমাম আবূ দাউদ রহ. বলেন, বর্ণনাকারী বিশর ভুল করেছেন। আসলে মেয়ে দু’টি সা’দ ইবনু রবী রা. এর কন্যা। কারন সাবিত ইবনু কায়িস রা. শহীদ হন ইয়ামামার যুদ্ধে।
মতামত প্রকাশের অধিকার ঃ ইসলাম একটি সহজাত ধর্ম। কোন নারীর স্বামী মৃত্যুবরন করলে স্বভাবতই সে মানসিকভাবে বিপর্যস্থ হয়ে পড়ে এবং নিজের মতামত প্রকাশের আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। এই সুযোগে অনেকেই তাদেরকে অধিকার থেকে বঞ্চিত করে। তাই ইসলাম বিধবাদের অধিকার সমুন্নত রাখার জন্য তাদেরত্তামতের উপর গুরুত্ব দিয়েছে। স্বামীর মৃত্যুর পর বিধবা নারী ইদ্দত পালনের মাধ্যমে তার গর্ভে সন্তানের অস্থিত্ব নিশ্চিত করে থাকে। কিন্তু বিধবা নারীর ঐ সময়ের মনসিক অবস্থার কথা বিবেচনা করে ইসলাম ইদ্দত পালনের স্থান নির্বাচনে তার মতামতের উপর অধিক গুরুত্ব দিয়েছে। এপ্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, অতঃপর যদি সে স্ত্রী নিজ থেকে বেরিয়ে যায়, তাহলে সে নারী নিজের ব্যাপারে কোন উত্তম ব্যবস্থা করে, তবে তাতে তোমাদের উপর কোন পাপ নেই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।