Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মার্কিনবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল বিশ্ব

| প্রকাশের সময় : ৮ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ট্রাম্প কর্তৃক জেরুজালেমকে রাজধানীর স্বীকৃতিতে সউদী আরবসহ বিশ্ব নেতৃবৃন্দের ক্ষোভ উদ্বেগ নিন্দা
ইনকিলাব ডেস্ক : আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়কে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে পবিত্র ভূমি জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার প্রতিবাদে ফিলিস্তিনের গাজাসহ বিভিন্ন দেশে উত্তাল হয়ে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী বিক্ষোভ। ট্রাম্পের এ সিদ্ধান্তে মধ্যপ্রাচ্য শান্তি আলোচনা ভেস্তে যাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স। আর এ অঞ্চলে উগ্রবাদ আবারও মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন ফিলিস্তিন প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। খবরে বলা হয়, ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে আন্তর্জাতিক মহলে কড়া সমালোচনা করা হচ্ছে। জেরুজালেম ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র যে ঐতিহাসিক নিরপেক্ষতা বজায় রাখছিল তাও লঙ্ঘন করা হয়েছে। উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্টনিও গুঁতেরা। তিনি বলেছেন, এটা হলো গভীর হতাশার একটি মুহূর্ত। তিনি আরো বলেন, দ্বিরাষ্ট্র ভিত্তিক সমাধানের কোনো বিকল্প নেই। বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে’র মুখপাত্র হতাশা ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এমন সিদ্ধান্ত আঞ্চলিক শান্তি প্রতিষ্ঠায় কোনো সহায়ক হবে না। শুধু আরব ও মুসলিম দুনিয়াই নয়, যুক্তরাষ্ট্রের অনেক মিত্র দেশও ট্রাম্পের এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে নিন্দা জানিয়েছে। এরই মধ্যে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের কনসুলেটের বাইরে বিক্ষোভ প্রতিবাদ হয়েছে। ওদিকে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক সমস্ত মুসলিমকে জেগে উঠার আহŸান জানিয়েছেন। বলেছেন, যেকোনো স্থানের মুসলিমদের এটা পরিষ্কার করে জানিয়ে দিতে হবে যে, আমরা যুক্তরাষ্ট্রের এমন ঘোষণার কড়া নিন্দা জানাচ্ছি। উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মারকেল, ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রন। তারা উভয়েই বলেছেন, ট্রাম্পের এমন সিদ্ধান্তে তাদের সমর্থন নেই। গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের প্রধান কূটনীতিক ফেডেরিকা মঘেরিনি। এদিকে জেরুজালেম ও পশ্চিম তীরে মার্কিন নাগরিকদের পরবর্তী নির্দেশের আগ পর্যন্ত সতর্ক থাকতে বলেছে মার্কিন কনস্যুলেট অফিস। একই সঙ্গে অন্যান্য দেশে মার্কিন দূতাবাসের নিরাপত্তা জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতর। জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে শুরু করে আরব লিগ, কারো আপত্তিই আমলে নিলেন না ডোনাল্ড ট্রাম্প। ফ্রান্স, তুরস্ক সউদী আরবসহ অনেক মিত্র দেশের আহŸানকে তোয়াক্কা না করে জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ১৯৪৮ সালে ইহুদি রাষ্ট্র হিসেবে ইসরাইল প্রতিষ্ঠার পর যুক্তরাষ্ট্রই প্রথম জেরুজালেমকে তাদের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দিল। স্থানীয় সময় গত বুধবার দুপুরে হোয়াইট হাউসে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেন, এ ঘোষণা সময়ের দাবি, আরও আগেই এ স্বীকৃতির প্রয়োজন ছিল। ইসরাইলের মার্কিন দূতাবাস তেলআবিব থেকে জেরুজালেমে স্থানান্তরের ঘোষণাও দেন তিনি। পবিত্র ভূমি জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র স্বীকৃতি দেয়ার পরই বিক্ষোভ শুরু হয়েছে বিভিন্ন মুসলিম দেশে। এ সিদ্ধান্ত মেনে না নেয়ার ঘোষণাও দেন বিক্ষোভকারীরা। তাৎক্ষণিক বিক্ষোভে যোগ দেন হামাস নেতারাও। এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে পুরো মুসলিম স¤প্রদায়কে কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার আহŸান জানান তারা। তিন দিনের শোক দিবস পালনের ঘোষণাও দেয়া হয়। ট্রাম্পের এ ঘোষণা প্রত্যাখ্যান করে ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস বলেছেন, সহিংসতাকে আরও উসকে দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। বিক্ষোভ হয়েছে তুরস্কেও। এর আগে ট্রাম্পের একতরফা এ সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট। তিনি জানান, মুসলিমরা তাদের দাবি আদায়ে লড়বেন। রাতেই বিক্ষোভ হয় লেবাননে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষণাকে তা অন্যায্য ও দায়িত্বজ্ঞানহীন বলে প্রতিক্রিয়া দিয়েছে সউদী আরব। সউদী রয়াল কোর্টের বিবৃতির বরাত দিয়ে বিবিসি জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপ শান্তি প্রক্রিয়ার প্রচেষ্টাকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে এবং এটি জেরুজালেম প্রশ্নে ঐতিহাসিকভাবে আমেরিকার নিরপেক্ষ অবস্থানের ব্যত্যয়। মাহমুদ আব্বাস বলেন, স্পষ্টতই এটা ইসরাইলের প্রতি একটি পুরস্কার। আর এই স্বীকৃতি যে ফিলিস্তিনের ভূমি ক্রমাগত দখল করতে ইসরাইলকে উৎসাহিত করবে, তা-ও উল্লেখ করেন তিনি। হামাস নেতা ইসমাইল হার্নিয়া আল-জাজিরার কাছে ট্রাম্পের ঘোষণাকে ‘উন্মাদনার আগ্রাসন’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। জর্ডান বলেছে, পূর্ব জেরুজালেমের ওপর ইসরায়েলি দখলদারিত্বকে দৃঢ় করায় ট্রাম্পের পদক্ষেপ ‘আইনি বৈধতা হারিয়েছে’। লেবাননের প্রেসিডেন্ট মিশেল আউন বলেছেন, জেরুজালেমের বিষয়ে ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত সঙ্কট সৃষ্টি করবে এবং মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি প্রচেষ্টার মধ্যস্থতাকারী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্বাসযোগ্যতাকে ঝুঁকির মুখে ফেলবে। এই সিদ্ধান্তে মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতিশীলতা হুমকির মুখে পড়বে আর তাতে বৈশ্বিক স্থিতিশীলতাও ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি।
ইউরোপ ও জাতিসংঘের প্রত্যাখ্যান
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দিলেও তা প্রত্যাখ্যান করেছে আরব ও মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য মুসলিম রাষ্ট্র, ইউরোপ ও জাতিসংঘ। এক প্রতিবেদনে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, বুধবার আরব ও মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য মুসলিম দেশগুলো ট্রাম্পের এ সিদ্ধান্তকে ‘অস্থিরতা কবলিত অঞ্চলটিতে উত্তেজনা আরো বাড়িয়ে দেওয়ার পদক্ষেপ’ আখ্যায়িত করে এর নিন্দা জানিয়েছে। ফিলিস্তিন বলেছে, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে শান্তি আলোচনার মধ্যস্থতাকারী হিসেবে ওয়াশিংটন তার নেতৃত্বদানকারী ভূমিকার জলাঞ্জলি দিয়েছে।
সংবাদ মাধ্যমের তীব্র প্রতিক্রিয়া
ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে গভীর হতাশা, সীমাহীন অস্থিরতা ও বিপর্যয়ের আশঙ্কার কথা উঠে এসেছে। ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির এক বিশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়, অন্য দেশের রাজধানী নির্ধারণে হস্তক্ষেপ খুবই নজিরবিহীন একটি ঘটনা। তবে জেরুজালেমের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা আলাদা। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন বলছে, ট্রাম্পের এই ঘোষণা মধ্যপ্রাচ্য শান্তি প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করবে। ওই অঞ্চলে জন্ম দেবে নতুন অস্থিরতার। প্রভাবশালী ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট লিখেছে, আরব, মুসলিম আর পশ্চিমা মিত্রদের উপেক্ষা করে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে দূতাবাস স্থানান্তরের প্রক্রিয়া শুরু করতে বলেছেন। জেরুজালেমকে ইসরাইলি রাজধানীর স্বীকৃতি দিয়ে তিনি বিক্ষোভ উসকে দিয়েছেন। প্রভাবশালী ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে পিটার বিমন্ট জেরুজালেম থেকে জানিয়েছেন, ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত গভীর উদ্বেগ আর বিভক্তির জন্ম দিয়েছে।
সন্ত্রাসের জননী যুক্তরাষ্ট্র নিপাত যাক
জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোলান্ড ট্রাম্পের ব্যাপক বিতর্কিত ঘোষণার পর গাজা স্ট্রিপজুড়ে তীব্র বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। ট্রাম্পের এই ঘোষণা কয়েক দশকের মার্কিন পররাষ্ট্র নীতিকে চুর্ণবিচূর্ণ করে দিয়েছে এবং একই সঙ্গে ফিলিস্তিনীদের বিক্ষুব্ধ করে তুলেছে। তারা শহরের রাস্তা অবরোধ করে মার্কিন পতাকা ও টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করে এবং গগণবিধারী চিৎকার করে যুক্তরাষ্ট্র বিরোধী শ্লোগান দেন। বিক্ষোভ জর্ডানের রাজধানী আম্মানেও প্যালেস্টাইনী উদ্বাস্তুরা রাস্তায় জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন। আম্মানের সীমান্তবর্তী বাকারা শরণার্থী ক্যাম্পের শত শত লোক রাস্তায় অবস্থান নিয়ে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেন এবং ইসরাইলের সঙ্গে ১৯৯৪ সালের শান্তি চুক্তি বর্জনের জন্য জর্ডানের প্রতি আহŸান জানান। ইন্ডিপেন্ডেন্ট।
আগুন নিয়ে খেলা হচ্ছে : আব্বাস
বিতর্কিত জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একতরফাভাবে যে স্বীকৃতি দিয়েছেন, তা ‘আগুন নিয়ে খেলার’ শামিল বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। তিনি ট্রাম্পের এই ঘোষণাকে ধিক্কার জানিয়ে প্রত্যাখ্যান করেছেন। ‘জেরুজালেমকে ফিলিস্তিনের চিরন্তন রাজধানী’ হিসেবে উল্লেখ করে মাহমুদ আব্বাস আরো বলেন, ‘বুধবারের এই ঘোষণার পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আর ফিলিস্তিন ও ইসরাইলের মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকায় থাকতে পারে না।’ ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের বক্তব্য এমন একটি সময়ে এলো, যখন ট্রাম্প জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতির পাশাপাশি তেলআবিব থেকে নিজেদের দূতাবাস সেখানে সরিয়ে নেওয়ার কথাও ঘোষণা দিয়েছেন। ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস বলেন, স্পষ্টতই এটা ইসরাইলের প্রতি একটি পুরস্কার।’
ইনতিফাদা’র ডাক হামাসের
জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের স্বীকৃতির প্রতিবাদে নতুন করে ইনতিফাদা বা গণ অভ্যুত্থানের ডাক দিয়েছেন ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ সংস্থা হামাস। গতকাল বৃহস্পতিবার ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা থেকে এ ঘোষণা দেন হামাসের প্রধান ইসমাইল হানিয়া। তিনি বলেন, ইহুদিবাদী শত্রæদের বিরুদ্ধে আমাদের ইনতিফাদার ডাক দেয়া উচিত। জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার ঘটনায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কঠোর সমালোচনা করেন ইসমাইল হানিয়া। তিনি বলেন, ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত ফিলিস্তিনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার শামিল। উল্লেখ্য, ওয়াশিংটন সময় গত বুধবার হোয়াইট হাউসে দেয়া এক ভাষণে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে তেলআবিব থেকে মার্কিন দূতাবাস স্থানান্তর করে শিগগিরই জেরুজালেমে আনার জন্য নির্দেশ দেন।
আমি চুপ থাকতে পারি না : পোপ ফ্রান্সিস
জেরুজালেমকে মুসলিম-খ্রিস্টান ও ইহুদীদের পবিত্র ভূমি উল্লেখ করে পোপ ফ্রান্সিস বলেছেন, সেখানকার সা¤প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে তিনি চুপ থাকতে পারেন না। মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউ ইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। বুধবার হোয়াইট হাউজের কূটনৈতিক অভ্যর্থনা কক্ষে দেওয়া ভাষণে জেরুজালেমকে আনুষ্ঠানিকভাবে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতির ঘোষণা দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। একইসঙ্গে তিনি তেল আবিব থেকে মার্কিন দূতাবাসকে জেরুজালেমে স্থানান্তরের পরিকল্পনার কথাও জানিয়েছেন। এতে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে জেরুজালেম।
আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন : পাকিস্তান
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শহিদ খাকান আব্বাসী বলেছেন, তার দেশ যুক্তরাষ্ট্রের জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান এবং সেখানে দেশটির দূতাবাস সরিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্তের ঘোর বিরোধী। এই বিষয়ে পাকিস্তান আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়ের সঙ্গে রয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওই স্বীকৃতি প্রদানের ঘোষণার পরপরই বুধবার রাতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী এই বিবৃতি দেন। ট্রাম্পের ওই ঘোষণার পর বিশ্বব্যাপী তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এটা অত্যন্ত দুঃখজনক যে বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন দেশের অনুরোধ সত্তে¡ও আল-কুদস আল-শরীফ জেরুজালেম) এর বৈধ ও ঐতিহাসিক গুরুত্বকে উপেক্ষা করা হয়েছে।’ প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক আইনের মারাত্মক লংঘন এবং জেরুজালেমের অবস্থান সম্পর্কে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবনার পরিপন্থী।
উত্তেজনা উস্কে দিতে পারে : চীন
চীন বুধবার সতর্ক করে বলেছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনান্ড ট্রাম্পের জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানীর স্বীকৃতি দেয়ার পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে ওই অঞ্চলে উত্তেজনা বেড়ে যেতে পারে। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জেং শুয়াং নিউজ ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘আমরা ওই অঞ্চলে সম্ভাব্য উত্তেজনা বেড়ে যাওয়া নিয়ে উদ্বিগ্ন।’
ওআইসি ও আরব লীগের জরুরি বৈঠক
যুক্তরাষ্ট্র জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানীর স্বীকৃতি দেয়ায় আরব লীগের জরুরি বৈঠক আহŸান করেছে জর্ডান ও ফিলিস্তিন। গত বুধবারই তারা এমন আহŸান জানায়। এতে বলা হয়, জেরুজালেমে অবস্থিত আল কুদস-এর বিষয়ে কি সিদ্ধান্ত নেয়া হবে তা আলোচনা হবে ওই বৈঠকে। কূটনৈতিক সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে সউদী গেজেট বলেছে, শনিবার ওই বৈঠক আহŸান করা হয়েছে। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়্যিপ এরদোগান ১৩ ডিসেম্বর ইস্তাম্বুলে অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশনের (ওআইসি) জরুরি বৈঠক আহŸান করেছেন। এ কথা জানিয়েছেন তার মুখপাত্র ইব্রাহিম কলিন। তিনি আঙ্কারা থেকে সাংবাদিকদের বলেন, জেরুজালেমের মর্যাদা নিয়ে যে স্পর্শকাতরতা সৃষ্টি হয়েছে তার প্রেক্ষিতে প্রেসিডেন্ট ওআইসির নেতাদের ওই বৈঠক আহŸান করেছেন। এতে ইসলামিক দেশগুলো যৌথভাবে কি করণীয় তা নিয়ে আলোচনা হবে। রয়টার্স, বিবিসি, এপি, এএফপি, আল জাজিরা, ইন্ডিপেন্ডেন্ট।



 

Show all comments
  • Mustafizur Rahman ৮ ডিসেম্বর, ২০১৭, ৭:৫৭ এএম says : 0
    Citizen of USA elected a desparate person as a head of state. We all muslim must avoid all USAproducts and all head of muslim state discard diplometic relation with USA.
    Total Reply(0) Reply
  • মো ঃ আাকবার আলী ৮ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১০:০১ এএম says : 0
    প্রিয় মুসলিম ভায়েরা আমাদের এখনি ঐক্য বদ্দ হওয়ার সময়।কারন আমাদের মুসলমানের ৩ নাম্বার মসজিদ হল মসজিদুল আকসা এটা হল আমাদের কলিজার টুকরা। লম্পট, অথর্ব, গাদা, বেয়াদব, কুলাংগার, জানোয়া, ট্রাম্প -ডাম সে আমাদের কলিজা চিডে পেলে দিতে চাচ্চে আমরা তাকে উচিত শিক্কা দেওয়ার জন্য ঐক্য বদ্দ হতে হবে ইনশাহআল্লা হে আল্লা আমাদের কে কবুল করুর আমিন।
    Total Reply(0) Reply
  • shaikh abu hanifa ৮ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:৩০ পিএম says : 0
    আমেরিকা (United States of America) কি এই সুন্দর বিশ্বের বা পৃথিবীর তথা এই দুনিয়া/জগতের শাসক ? তার নির্দেশ/আদেশ বা ইশারা, ইঙ্গিতেই কি এই পৃথিবী চলবে ? নাকি সব দেশের মিলিত সংগঠন জাতিসংঘের (The United Nations) নেওয়া সমাধানের (Resolutions’)উপর ভিওি করে এই পৃথিবী চলবে ??!! ইহুদী রাষ্ট্র ইস্রায়েল (Israel) অবৈধভাবে দখলকরে রাখা জেরুযালেমের তথা ১৯৬৭ সনে অবৈধ যুদ্ধের দ্বারা দখলকরা ভুমিকে নিজের বলে তাহাকে রাজধানী করতে চায়, আর তার দোসর আমেরিকা তাতে হ্যাঁ-সূচক উত্তর দিয়েছে, হ্যাঁ-সূচক উত্তর দিলেই কি তাহা তাদের তথা ইহুদী রাষ্ট্র ইজরাইলের হয়ে গেল ??!! এমনটিতো হতে পারেনা বা হতে দেওয়া যায়না I এর প্রতিরোধে সব দেশের তখা সব দেশের মিলিত সংগঠন জাতিসংঘের করা উচিত ও এগিয়ে আসা উচিত !I আর যদি আমরা এখনি এইটি প্রতিহত না করি বা করতে পারি তবে পুনরায় এই সুন্দর বিশ্বের বা পৃথিবীর অবস্থা বা দশা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগের মতো হবে II!! নব্য হিটলারদের আবির্ভাব ঘটছে বা ঘটেছে যেমন বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু (Benjamin Netanyahu) আর তার দোসর বা বন্ধু ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald Trump) ও নরেন্দ্র মোদি, সৌদি রাজা ইত্যাদি ii!! সতর্ক হোন (Be careful)!!??III
    Total Reply(0) Reply
  • Alamin Sheikh ৮ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:৫৩ পিএম says : 0
    নতুন করে সহিংসতা ছড়ানোই এর মূল লক্ষ্য
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিক্ষোভে


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ