Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

গুজরাটের নির্বাচনী দৃশ্যপটে নেই মুসলিমরা

ইনকিলাব ডেস্ক: | প্রকাশের সময় : ৭ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

গুজরাটের নির্বাচনী দৃশ্যপট থেকে হারিয়ে গেছে মুসলিমরা। বিরাজমান পরিস্থিতিতে মনে হচ্ছে- চুপ চুপ, এই উগ্র জাতীয়তাবাদী সময়ে মুসলিমদের নিয়ে কোনো কথা বলো না। নির্বাচনমুখী গুজরাটে বার্তাটি প্রচন্ডভাবে প্রতিধ্বনিত হচ্ছে এবং স্পষ্টভাবেই। রাজ্যটির মুসলিমদের ব্যাপারে সব রাজনৈতিক দলই একসঙ্গে ‘মৌনব্রত’ পালন করছে। সর্ব গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য বিধান সভা নির্বাচন এগিয়ে আসার প্রেক্ষাপটে মুসলিম সংখ্যালঘু স¤প্রদায়ের ইস্যু, চ্যালেঞ্জ এবং আকাঙ্খা প্রশ্নে অবিচল নীরবতা বজায় রেখেই ‘স্বস্তিতে’ রয়েছে। গুজরাটের রাজ্য বিধান সভার নির্বাচন হওয়ার কথা ৯ ও ১৪ ডিসেম্বর। ভোট গণনা হবে ১৮ ডিসেম্বর। পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্যটিতে ‘এম’ শব্দটি রাজনৈতিক এবং সামাজিক উভয় দিক থেকেই প্রায় অপবিত্র বিবেচিত। গুজরাটে কেউই মুসলিমদের আকাক্সক্ষা, উদ্বেগ, সমস্যা নিয়ে কথা বলে না। মনে হয়, বিজেপি শাসিত রাজ্যটিতে ‘নির্যাতিত’ স¤প্রদায়টির কোনো অস্তিত্বই নেই। মনে হচ্ছে, কোনো জাদুকর তার লাঠি দিয়ে নির্বাচনের মওসুমে গুজরাট থেকে ‘মুসলিম ফ্যাক্টরটি’ মুছে দিয়েছেন। গুজরাটে বিশেষ করে বিজেপির জন্য মুসলিমরা সবসময়ই ‘অচ্ছ্যুৎ’। ২০০২ সালের ভয়াবহ দাঙ্গার পর থেকে মুসলিমদের সাথে অনেক দূরবর্তীও কোনো সম্পর্ক আছে, এমন সবকিছু থেকে দূরে থাকছে বিজেপি। তবে মুসলিমদের অবজ্ঞা করার কংগ্রেসের ‘নতুন কৌশল’ অনেককে অবাক করেছে। মুসলিম তোষণের জন্য নিন্দিত কংগ্রেস ভিন্ন কৌশল গ্রহণ করে নির্বাচনী মওসুমে বিজেপির মতো গুজরাটের বৃহত্তর স¤প্রদায় হিন্দু ভোটের দিকে নজর দিয়েছে। এ কারণেই কংগ্রেসের সহ-সভাপতি রাহুল গান্ধীকে সেপ্টেম্বরে রাজ্যটিতে সফরের সময় একের পর এক মন্দিরে যেতে দেখা গেলেও তাকে রাজ্যের কোনো মুসলিম বস্তি বা গ্রামে যাত্রাবিরতি করতে দেখা যায়নি। হিন্দু জাতীয়তাবাদী পার্টি বিজেপির কাছে মুসলিম ভোটাররা কোনো ব্যাপার নয়। আর কংগ্রেস এবার সংখ্যাগুরু হিন্দু স¤প্রদায়ের কাছে পৌঁছার চেষ্টা করছে। এক কংগ্রেস নেতা বলেছেন, স্বাধীনতার পর থেকেই মুসলিমরা কংগ্রেসের অনুগত। গুজরাটে তারা কংগ্রেসকেই ভোট দেবে। তিনি বলেন, এবার হিন্দু ভোটারদের পেতে কংগ্রেস প্রকাশ্যে চেষ্টা করছে। মুসলিম ভোটারদের তোষণ করার জন্য আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে। এটা ভিত্তিহীন অভিযোগ। বিষয়টা এমন নয় যে গুজরাটে মুসলিমরা নেই। তারা মোট জনসংখ্যার ৯.৬৭ ভাগ। এদের মধ্যে ৫.৯১ ভাগ থাকে গুজরাটের গ্রামীণ এলাকায়, ১৪.৭৫ ভাগ থাকে শহর এলাকায়। গুজরাটে মুসলিমদের জন্য সামাজিক ও অর্থনৈতিক বয়কটের পাশাপাশি নির্বাচন থেকেও বয়কট চলছে। ১৮২ আসনবিশিষ্ট গুজরাট বিধান সভার জন্য কংগ্রেস মুসলিম প্রার্থী দিয়েছে মাত্র ৬ জন। মুসলিম, ধর্ম ও দাঙ্গার বদলে রাজনৈতিক দলগুলো কথা বলছে পতিদার স¤প্রদায়ের বিক্ষোভ, দলতিদের হতাশা, ওবিসিদের দাবি এবং নোট বাতিলকরণ ও জিএসটির ব্যাপারে ব্যবসায়ী স¤প্রদায়ের ক্রোধ নিয়ে। ইকোনমিক টাইমসের লেখক-সাংবাদিক নিলাঞ্জন মুখোপাধ্যায় বলেন, চলমান নির্বাচনী ধারা থেকে গুজরাটের মুসলিমরা একেবারে হারিয়ে গেছে। অথচ গুজরাটে প্রতি ১০ জনের একজন মুসলিম। তিনি বলেন, তাদেরকে যে কেবল প্রার্থী করা হয়নি, তা-ই নয়, তাদের ইস্যুগুলো পর্যন্ত আলোচনায় আসছে না। সামাজিক বিভাজন প্রকটভাবে দৃষ্টিগোচর হচ্ছে। এমনকি সিনেমা হলেও কেউ মুসলিমদের আসনের পাশে বসতে চায় না। কোনো দলই মুসলিম প্রাধান্যবিশিষ্ট এলাকায় ভোট প্রার্থনাকে গুরুত্ব দিচ্ছে না। ওয়েবসাইট।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নির্বাচনী

৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ