পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আমজনতার সর্বাধিক কাক্সিক্ষত বিষয় হচ্ছে নির্বাচন। নির্বাচনের মাধ্যমেই তারা পছন্দের নেতাকে দায়িত্ব দেন দেশ পরিচালনার। সেজন্য তাদের কাছে জাতীয় নির্বাচনের গুরুত্ব অনেক বেশি। দেশের সব এলাকার মতো দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের রাজনীতির মাঠে নানামুখী তোড়জোড় জানান দিচ্ছে জাতীয় নির্বাচনের আর বেশি দিন বাকি নেই। কেন্দ্র, জেলা ও উপজেলার এমনকি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতা যারা মাঠে নামতেন না এখন তারা কর্মী ও সমর্থকদের খোঁজখবর নিচ্ছেন। তারা ভোটের মাঠ গোছাতে ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। ঘন ঘন সরাসরি ও মোবাইলে কিংবা প্রতিনিধির মাধ্যমে সালাম পৌঁছে দিচ্ছেন। গ্রাম মাঠের লোকজন একে অপরের সঙ্গে দেখা হলেই বলাবলি করছেন ‘ওরে ভাই ভোট বোধ হয় এসে গেছে, নেতারা কাছে আসছেন, আমাদের মনে হয় একটু আদর-কদরও বাড়ছে। রাজনীতির সাথে জড়িতরা যারা না চেনার ভাব দেখাতেন, তারা এখন একবার না শুনলে দু’বার ডেকে ভালোমন্দ জিজ্ঞেস করছেন। যেসব এমপির বছরে এলাকায় দেখা যেত না, এখন মাসে দুই তিনবার নানা কাজকামের অজুহাতে ঘুরঘুর করছেন।’ বর্তমান পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক দলগুলো ভোটের পস্তুতি নিয়ে মাঠে নেমে পড়েছে। নেতারা হাঁটছেন এখন বেশ জোরকদমে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের বক্তব্য, দক্ষিণ-পশ্চিমের অনেক এলাকায় ক্ষমতাসীন দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক ভিত বর্তমান অবস্থার চেয়ে আরো বেশি শক্তিশালী করার সুযোগ ছিল। ক্ষমতায় থাকার কারণে যে সুযোগ সৃষ্টি হয় তা অনেক আসন এলাকায় যথাযথভাবে কাজে লাগাতে পারেনি। বরং অনেক আসন এলাকায় অভ্যন্তরীণ কোন্দলে সাংগঠনিক অবস্থা বেশ নড়বড়ে। যার জন্য কেন্দীয় নেতারা দফায় দফায় দলের ডেকে ঐক্যবদ্ধ থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। বলেছেন কোন্দল মিটিয়ে ফেলতে। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন যেটি একতরফা নির্বাচন। কষ্ট না করেই এমপি হওয়ার সুবাদে কিছু এমপি নিজেদের ‘আন প্যারালাল’ ভাবতে শুরু করেন। অনেক এমপির কর্মকান্ড দলকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। তারা দল গুছানোর কাজে আসলেই কোনো সময় দেননি। তাছাড়া অনেক এমপির বিরুদ্ধে আখের গোছানোরও অভিযোগ প্রবল। তৃণমূল নেতা ও কর্মীদের বক্তব্য, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে প্রতিদ্ব›িদ্বতাপূর্ণ। তাই যেসব এমপির বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ আছে, তাদের বাদ দিয়ে সত্যিকারের জনদরদী যারা, যাদের জনপ্রিয়তা আছে, দলের স্বার্থে নিবেদিত এবং পরীক্ষিত ও ত্যাগী নেতা তাদের খুঁজে বের করে মনোনয়ন দেয়ার ক্ষেত্রে দল নিশ্চয় ভুল করবে না। ক্ষমতাসীন দলের একজন দায়িত্বশীল নেতা দাবি করেন, বড় দল দ্ব›দ্ব-কোন্দল থাকাটাই স্বাভাবিক। ভোট আসলে ওসব ঠিক হয়ে যাবে। নেতাকর্মী ও সমর্থকরা কষ্ট ব্যথা ভুলে যাবেন, ভোট হবে মার্কায়। আর আওয়ামী লীগ তো গোটা অঞ্চলের জন্য অনেক কিছু উপহার দিয়েছে। জনসাধারণ বিমুখ করবে না।
বিএনপিও গোটা এলাকায় নির্বাচনী মাঠ তৈরি করছে। নেতাকর্মীদের মাঠে নামিয়ে দেয়া হয়েছে। তাদের সম্ভাব্য প্রার্থীরাও বসে নেই। আওয়ামী লীগর মতো বিএনপির প্রার্থিতা নিয়ে দ্ব›দ্ব ফ্যাসাদ একেবারে নেই তা নয়। তবে তুলনামূলক কম। তবে বেশকিছু আসনে মনোনয়ন নিয়ে দ্ব›দ্ব প্রকট। তাছাড়া দল গুছানো ও সাংগঠনিক ভিত শক্তিশালী করার খুব একটা সুযোগ পায়নি বিএনপি। দীর্ঘদিন তারা দৌড়ের ওপর ছিল। বিএনপির একজন দায়িত্বশীল নেতা জানান, হামলা-মামলা, প্রশাসনিক হয়রানি, জেল-জুলুম হুলিয়ায় চুপ থাকলেও নেতা ও কর্মীরা এখন চাঙা। আমাদের জনসমর্থন আছে কি নেই তা সুষ্ঠু নির্বাচন হলে দেখবেন। নির্বাচনী হাওয়ার পর তাদের কথাবার্তায় বেশ বলিষ্ঠভাব দেখা যাচ্ছে। বিএনপি বলেছে, নির্বাচনে শক্তভাবেই মাঠে নামার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। শুধু আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নয়, রাজনৈতিক দলগুলোর মনোনয়ন প্রত্যাশীরা পাঁচ-ছয় মাস আগে থেকে টুকটাক মাঠে নামলেও গত কয়েকদিন হলো একাদশ জাতীয় নির্বাচনের জন্য গোটা দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে অতিমাত্রায় সরব হয়ে উঠেছেন। ঘন ঘন এলাকায় ঘুরছেন, আলাপ করছেন লোকজনের সাথে।
প্রত্যেকটি আসন এলাকায় সম্ভাব্য প্রার্থীদের পুরোপুরি নির্বাচনী তৎপরতা চলছে। বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিশেষ করে প্রধান দুটি রাজনৈতিক দল এবার ভিন্ন কৌশলে মাঠের তথ্য সংগ্রহ করছে। এলাকায় অপরিচিত লোককে আসনভিত্তিক নামিয়ে তাদের মাধ্যমে গোয়েন্দাগিরি করে প্রকৃত তথ্য সংগ্রহ করছেন। কোন আসনে এবার কার অবস্থান ভালো হবে, কে কে মৌসুমী পাখি, কে ক্ষমতায় গিয়ে জনকল্যাণের চেয়ে নিজের পরিবারের কল্যাণ করেছেন বা করেননি, প্রতিপক্ষ কোন প্রার্থীর অবস্থান কেমন, কে প্রার্থী হলে ভালো হয় ইত্যাদি। এসব কারণে বলা যায়, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সার্বিক হিসাব-নিকাশ শুরু হয়ে গেছে। কোন আসনের কি চিত্র তা সংগ্রহ করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও প্রধান বিরোধীদল বিএনপি চুলচেরা বিশ্লেষণ করছে। কেন্দ্র থেকে দফায় দফায় নানা তথ্য সংগ্রহ করছে প্রধান দু’টি রাজনৈতিক দল। কোন কোন আসন জোটের শরিক দলকে ছেড়ে দেয়া যায়, ছেড়ে দিলে কি হতে পারে, কোন আসনে বর্তমান এমপির জনপ্রিয়তা কি, বিরোধী দল শক্তিশালী প্রার্থী দিলে তার বিপরীতে টিকে থাকা যাবে কাকে মনোনয়ন দিলে এসব গভীরভাবে পর্যালোচনা করছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। একইভাবে বিএনপি নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তথ্য সংগ্রহ করে বিশ্লেষণ করছে। তারা দশম সংসদ নির্বাচনের কে প্রার্থী ছিল আর কে না ছিল সেদিকে দৃষ্টি দিচ্ছে না। কারণ ওটি একতরফা নির্বাচন হওয়ায় কোনো হিসাবেই ধরা হচ্ছে না। তুমুল প্রতিদ্ব›িদ্বতাপূর্ণ নির্বাচন ছিল নবম সংসদ নির্বাচন। তারই আলোকে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের কথা, ভোট রাজনীতিতে ঘটেনি কোনো মৌলিক ও গুণগত পরিবর্তন। অনেকটাই গতানুগতিক। দক্ষিণ-পশ্চিমের ভোট রাজনীতির মাঠে একটি বিষয় জোর আলোচনা হচ্ছে, ক্ষমতাসীন দলের এমপিদের অনেকে এবার বাদ পড়তে পারেন। তারা কারা, কি অবস্থা তাদের তা নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। এ অঞ্চলের ৩৬টি সংসদীয় আসনের মধ্যে খুলনায়-২, যশোরে-৩, ঝিনাইদহ-২, সাতক্ষীরায়-২, চুয়াডাঙ্গায়-১, নড়াইলে-১, মাগুরায়-১ ও কুষ্টিয়া-১ এই মোট ১৩টি আসনে প্রার্থী পরিবর্তনের কথা বিভিন্ন মহলে আলোচনা হচ্ছে। এসব স্থানে নতুন মুখ আসছে। গোয়েন্দা সূত্রও বলছে, এ অঞ্চলের ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন এমপি একাদশ সংসদ নির্বাচনে জনবিচ্ছিন্ন হওয়ার কারণে মনোনয়ন পাবেন না। যারা জনগণের সাথে মেলবন্ধনে ব্যর্থ হয়েছেন। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের একাধিক সূত্র জানায়, আমরা তৃণমূলে নির্বাচনের মাঠ গুছাচ্ছি। কারণ আসলেই তো সময় খুব কম।
অপরদিকে বিএনপির বেশ কয়েকজন সাবেক এমপি এবার মনোনয়ন পাবেন না বলে জানা গেছে। তারা বয়সের ভারে ন্যুজ কিংবা অতীতের কর্মকান্ডে হয় প্রশ্নবিদ্ধ। সেসব স্থানে সম্ভাব্য নতুনদের আনাগোনা দেখা যাচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।