পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইকোনমিক লাইফ লাইন হিসেবে পরিচিত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা অংশের দুইপাশে সওজ’র (সড়ক ও জনপদ বিভাগ) জায়গা দখল করে গড়ে উঠেছে শত শত অবৈধ স্থাপনা। মহাসড়কের চারলেন প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়ার আগে সওজ’র জায়গা থেকে অবৈধ সব স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। গত বছরের ২ জুলাই চারলেন উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর উদ্বোধনের প্রায় তিন-চার মাসের মধ্যেই সওজ’র জায়গায় অবৈধ স্থাপনা তৈরির প্রতিযোগিতা শুরু হয়। গত এক বছরে মহাসড়কের কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে চৌদ্দগ্রামের শেষ সীমানা মোহাম্মদ আলী পর্যন্ত অন্তত অসংখ্য অবৈধ স্থাপনা ও বাস-সিএনজি ষ্ট্যান্ড গড়ে উঠেছে। প্রভাবশালীরা সওজ’র জায়গা দখল করে অবৈধভাবে স্থাপনা নির্মাণ করে বরাদ্দ দেয়া ও ভাড়া আদায় ঘিরে লাখ লাখ টাকার চাঁদাবাজি করছে। কুমিল্লা সওজ কর্তৃপক্ষ দাবী করেন, অবৈধ স্থাপনার তালিকা তৈরি করে জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে উচ্ছেদ কার্যক্রম চালানো হয়ে থাকে।
কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে ফেনীর কাছাকাছি মোহাম্মদ আলী এলাকা পর্যন্ত ১০৪ কিলোমিটার মহাসড়কের কোনো অংশই ভাঙ্গাচোরা নয়। রাস্তার মাঝখানে সবুজ ঘাস আর ছোট ছোট নানা প্রজাতির গাছের আচ্ছাদিত মিডিয়া মহাসড়ককে করে তুলেছে আকর্ষনীয়। কিন্তু এসব সৌন্দর্য ¤øান হয়ে পড়েছে মহাসড়কের দুইপাশে অবৈধ দখলের স্থাপনা, বাস-সিএনজি ষ্ট্যান্ড ও গাড়ী পার্কিয়ে অনিয়মের কারণে। গতকাল সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, মহাসড়কের দাউদকান্দির গৌরিপুর, ইলিয়টগঞ্জ, মাধাইয়া, চান্দিনা, নিমসার, কোরপাই, কাবিলা, আলেখারচর, ঝাগুরঝুলি, পদুয়ার বাজার, সুয়াগঞ্জ, মিয়ারবাজার ও চৌদ্দগ্রাম পর্যন্ত ৭-৮টি অবৈধ বাস ও সিএনজি স্ট্যান্ড রয়েছে। মহাসড়কের ওপর বাজার বসানো হয়েছে ৪-৫টি স্পটে। আর যাত্রী সমাগম স্থানে রয়েছে অসংখ্য অবৈধ দোকানপাট ও স্থাপনা। বেশিরভাগ ফিলিং ষ্টেশনের সামনে সওজ’র জায়গায় অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে টং দোকান, যানবাহন হাওয়ার দোকান ও মেরামতের স্থাপনা। গাড়ী চালক ও যাত্রীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ওইসব অবৈধ স্থাপনার কারণে যানবাহন ও যাত্রীদের বিড়ম্বনার শিকার হতে হচ্ছে। ঘটছে সড়ক দুর্ঘটনা। প্রাণহানীসহ জানমালের ক্ষতি হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দাউদকান্দি থেকে চৌদ্দগ্রাম পর্যন্ত এলাকাভিত্তিক প্রভাবশালীরা সওজ’র জায়গা দখল করে টাকার বিনিময়ে দ্বিতীয়পক্ষকে বুঝিয়ে দিচ্ছেন। আবার অনেক প্রভাবশালী নিজেরাই স্থাপনা নির্মান করে ভাড়া দিচ্ছেন। আর সাধারণ শ্রেণির অনেকেই নিজের উদ্যোগে দখল নিয়ে স্থাপনা তৈরি করে ব্যবসায় বসলেও দৈনিক বা সপ্তাহহারে চাঁদা নিচ্ছেন প্রভাবশালীদের লোকজন। মহাসড়কের কুমিল্লার সাদাত জুট মিল সংলগ্ন কোরপাই মিলগেইট বাজার এলাকায় সড়ক ও জনপথের প্রায় এক একর জায়গা স্থানীয় প্রভাবশালীরা দখল করে দোকান-পাট গড়ে তোলে ভাড়া দিয়ে আসছে। ইতিপূর্বে কুমিল্লা সড়ক ও জনপথ বিভাগ এবং জেলা প্রশাসন উচ্ছেদের মাধ্যমে জায়গাটি দখলমুক্ত করলেও এখানে ফের বসেছে প্রায় ৫০টি দোকান ও হাট-বাজার। প্রভাবশালী লোকজন এসব দোকানের কোনটি থেকে এক থেকে দেড় লাখ লাখ টাকা সালামী নিয়েছেন। আর কোনটি থেকে প্রতিদিন একশো থেকে দেড়শো টাকা হারে অর্ধলক্ষাধিক টাকা ভাড়া আদায় হচ্ছে। কুমিল্লার বিশিষ্টজনরা জানান, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনি-চট্টগ্রাম অংশের ন্যায় কুমিল্লা অংশেও সড়ক ও জনপদ বিভাগের জায়গা দখল করে অবৈধ দোকান-পাট, অবৈধ বাস ও সিএনজি ষ্ট্যান্ড গড়ে তুলে একদিকে লাখ লাখ টাকার চাঁদাবাজি চলছে। অন্যদিকে সুষ্ঠুভাবে যানবাহন চলাচলে বিঘœ সৃষ্টি করা হচ্ছে। আর এসব কারণে ফোরলেনের সুফল যথাযথভাবে মিলছে না। বিভিন্ন সময় জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে সওজ কর্তৃপক্ষ উচ্ছেদাভিযান পরিচালনা করলেও কয়েকদিন না যেতেই দখলদাররা আবার স্থাপনা ঘেরে বসে। এসব দখলদারদের তালিকা করে তাদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা গেলে দখলবাজি কমে আসবে।
জানতে চাইলে সড়ক ও জনপদ বিভাগ কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী মোফাজ্জল হায়দার বলেন, ‘মহাসড়কের দুই পাশে সড়ক ও জনপদ বিভাগের জায়গায় নির্মিত সব অবৈধ স্থাপনার তালিকা তৈরির কাজ চলছে। আমি প্রায় দেড়মাস হবে এখানে যোগদান করেছি। ইতোপূর্বে মহাসড়ক এলাকা থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদাভিযান পরিচালিত হয়েছে। আমরা তালিকা করে জেলা প্রশাসনে পাঠাই। সেখান থেকে সময়-সুযোগ করে ম্যাজিষ্ট্রেট নিয়োগের মাধ্যমে উচ্ছেদের অভিযান পরিচালনা হয়ে থাকে। আশা করি জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় খুব সহসাই মহাসড়কের কুমিল্লা অংশে সড়ক ও জনপদের জায়গাগুলো অবৈধ দখলদার মুক্ত করার অভিযান চালানো হবে। আর মহাসড়কের পাশে দোকান-পাট, হাট-বাজার গড়ে তোলার জন্য সড়ক ও জনপদ বিভাগের জায়গা লীজ দেয়া হয়না।’
উল্লেখ্য, কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে চট্টগ্রামের সিটিগেইট পর্যন্ত ৩ হাজার ৮১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৯২ কিলোমিটার দীর্ঘ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক চারলেনে উন্নীত করা হয়। গত বছরের ২ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের প্রথম চারলেন মহাসড়কের উদ্বোধন করেন। ৬০ হাজার যান চলাচল সক্ষমতাসম্পন্ন এ মহাসড়কে প্রতিদিন ৪০ হাজারের বেশি যানবাহন চলাচল করে। রফতানি পণ্যের প্রায় ৮০ভাগ পরিবহন হওয়ায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অর্থনীতির লাইফ লাইন হিসেবে পরিচিত।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।