পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মুসলিমরাই মুসলিম সন্ত্রাসীদের হামলার প্রথম শিকার, শুক্রবার মিসরে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা সর্বশেষ সে কথাই মনে করিয়ে দিয়েছে।
সিনাই উপক‚লে বির আল-আবদ সূফি মসজিদে নামাজরত ২৩৫ জন মুসল্লিকে হত্যার জন্য ইসলামিক স্টেটের (আইএস) স্থানীয় শাখা আনসার বেইত আল-মাকদিসকে দায়ী করা হয়েছে। এ হত্যাকান্ড সুনির্দিষ্টভাবে ঘৃণ্যকাজ। বন্দুকধারীরা প্রথম বিস্ফোরণ ঘটানোর পর অ্যাম্বুলেন্স ও সাহায্যের জন্য আসা লোকদের জন্য অপেক্ষা করে এবং বিস্ফোরণ থেকে বেঁচে যাওয়া লোকজন ও উদ্ধারকারীদের উপর গুলি চালায়। নাম প্রকাশ না করা এক ইমাম নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেন যে হত্যাকারীরা একটি মসজিদে হামলা চালানোয় তিনি মর্মাহত। সিনাইয়ে সন্ত্রাসীরা এর আগে যাদের উপর হামলা চালায় তার মধ্যে রয়েছে কপ্টিক চার্চ ও ২০১৩ সালে একটি রুশ যাত্রীবাহী বিমান। মুসলিম হত্যার এ ঘটনায় কেউ বিস্মিত হননি।
ইরাকে সন্ত্রাসীদের হামলার কথা উল্লেখ করা যায়। সুন্নী সন্ত্রাসীরা ২০০৬ ও ২০০৭ সালে সামারায় আল আকসারি মসজিদে বোমা হামলা চালায়। এটি শিয়াদের অন্যতম পবিত্র স্থান এবং সোনালি গম্বুজের জন্য পরিচিত। ২০০৯ সালে মসজিদটি পুনর্নির্মাণ করা হয়। শিয়ারা এ হামলার গোষ্ঠিগত প্রতিশোধ গ্রহণের শপথ নেয়। আল কায়েদা ও আইএস বাগদাদের জনাকীর্ণ বাজারগুলোতে গাড়ি বোমা হামলা চালিয়ে মুসলিমদের হত্যা করে। শিয়া মিলিশিয়ারা ডেথ স্কোয়াডসহ সুন্নীদের উপর নির্বিচার সন্ত্রাস চালিয়ে এর জবাব দেয়। মুসলিম হত্যা শুধু ইরাকেই সীমাবদ্ধ নেই। লেবানন , সিরিয়া ও ইয়েমেনের গৃহযুদ্ধে ইসলামী উগ্রপন্থীরা ক্রমবর্ধমানভাবে একে অপরের বিরুদ্ধে গর্ত খুঁড়ছে।
কয়েকটি কারণে এটা গুরুত্বপূর্ণ। এ সব সংঘাতের শুরু থেকেই আইএস, আল কায়েদা ও অন্যান্য ইসলামী গ্রæপগুলো যে মিথ্যা মন্ত্র শোনায় তা হচ্ছে তারা পশ্চিমাদের কাছ থেকে ধর্মকে রক্ষা করছে। এ সব গ্রæপ তাদের যুদ্ধক্ষেত্রগুলোকে কসাইখানায় পরিবর্তিত করার জন্য দায়ী। তারা সে গ্রæপকেই হত্যা করছে যাদের তারা রক্ষার দাবি করে।
এটি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দূরদৃষ্টির অভাবের কথা স্মরণ করিয়ে দেয় যিনি বিভিন্ন সময়ে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইকে ইসলাম ও পাশ্চাত্যের মধ্যে লড়াই বলে আখ্যায়িত করেছেন। এটা সত্য যে ইসলামিক স্টেটের মত দুশ্ট গ্রæপ মধ্যপ্রাচ্যে খ্রিস্টান ও ইয়াজিদিদের মত ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের টার্গেট করেছে , কিন্তু তা তাদের নিজ ধর্মের অসংখ্য মানুষকে হত্যা থেকে নিবৃত্ত করেনি। পাশ্চাত্যের বিবাদ রাজনৈতিক ইসলামের উগ্রপন্থী বা সেই ধর্মীয় গোষ্ঠির সাথে যারা অন্যদের উপর ইসলামী আইন চাপিয়ে দিতে চায়, সমগ্র ইসলামের সাথে নয়। বস্তুত মার্কিন সামরিক বাহিনী স্থানীয় মুসলিমদের উপর নির্ভরশীল যারা সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তাদের পাশাপাশি লড়ছে। এটি এক কৌশল যা ট্রাম্প সিরিয়া ও ইরাকে অনুসরণ করছেন।
ইসলামী বিশে^র অনেক সরকারই এ শিক্ষা অনুধাবন করেছে। আজ সউদী আরব, মিসর, জর্দান ও ইউএই আর জিহাদিদের পৃষ্ঠপোষকতার চেষ্টা করে না অথবা তারা নিরপেক্ষ রয়েছে। তারা সুন্নী ও শিয়া উগ্রপন্থী উভয়কেই মোকাবেলা করতে চায়।
এটা ভালো লক্ষণ বটে, তবে রোগের নিরাময় নয়। এটা মিসরের কথা মনে করিয়ে দেয়। বর্তমান নেতা আবদেল ফাতাহ আল সিসি ইসলামী দলের নেতা নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করে ক্ষমতা দখলের পর কঠিন হাতে তার দেশে উগ্রপন্থীদের নির্মূল করার চেষ্টা করেছেন। তবে ইসলামপন্থী, মানবাধিকার গ্রæপ ও মধ্যপন্থী বিরোধীদের বিরুদ্ধে তার দমনাভিযান সন্ত্রাসকে বন্ধ করতে পারেনি। কোনো সন্দেহ নেই যে যতদিন ইসলামপন্থীদের সন্ত্রাস চলবে ততদিন বেসামরিক মুসলিমদের দুর্ভোগ পোহাতে হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।