Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ম্যাককালাম-গেইলে হতাশ মিরপুর

ইমরান মাহমুদ | প্রকাশের সময় : ১৯ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

শিরোনামটা একটু ঘুরিয়ে দিলে কেমন হয়- ‘গেইল-ম্যাককালামে হতাশ রংপুর’!
পুরো এক সপ্তাহ পর মাঠে নেমেছে রংপুর রাইডার্স। এই বিরতির মধ্যেই দলটি নিজেদের শক্তি বাড়িয়ে নিয়েছে। দলে যোগ দিয়েছেন সারা বিশ্বে টি-টোয়েন্টি ফেরি করে বেড়ানো ব্রেন্ডন ম্যাককালাম ও ক্রিস গেইল। বিস্ফোরক দুই ব্যাটসম্যান আসায় এই মুহূর্তে বিপিএলের পুরো মনোযোগ কেড়ে নিয়েছে রংপুর। গতকাল মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামের উপচে পড়া ভিড় তারই প্রমাণ।
দিনের প্রথম ম্যাচটি ঢাকা ডায়নামাইটস ও রাজশাহী কিংসের ছিল। সেখানে পুরো গ্যালারি ভরেনি। কিন্তু দ্বিতীয় ম্যাচ শুরু হওয়ার আগেই মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়াম কানায় কানায় পরিপূর্ণ। শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনেও এতটা দর্শক আসেনি। কিন্তু এতদিনের খাঁ খাঁ গ্যালারিতে তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না গতকাল। দর্শক-ভক্তদের সেই চাওয়া পূরণ করতে পারলেন না গেইল-ম্যাককালাম। ১৫৪ রানের ‘ছোট্ট’ লক্ষ্যে রেখেও রংপুর হেরেছে ১৪ রানে। টানা চতুর্থ জয়ের স্বাদ পায় কুমিল্লা। পয়েন্ট তালিকাতেও তারা উঠে এসেছে দুইয়ে। ৪ ম্যাচে মাত্র ১ জয়ে তালিকার তলানীতে রংপুর।
রংপুরের হারের দ্বায়টা অবশ্য গেইল-ম্যাককালামের ঘাড়ে পড়ে না। এজন্য ৪৮ বলে রবি বোপারার ৪৮ রানের ইনিংসটি কাঠগড়ায় উঠতে বাধ্য। ইংলিশ অল-রাউন্ডার অবশ্য বলতে পারেন অমন ধ্বংসস্তুপের মধ্যে দাঁড়িয়ে হাত খুলে খেলব কি করে। ঠিকই তো? গেইল-ম্যাককালামের বহুকাঙ্খিত ওপেনিং জুটি ভাঙে পঞ্চম ওভারের শুরুতেই, দলীয় ৩১ রানে। সেখান থেকে দলীয় রান ১ রান না বাড়তেই নেই শীর্ষ চার উইকেট। নিজের প্রথম ওভারেই এক বলের ব্যবধানে গেইল ও কুসল পেরেরাকে তুলে নেন রশিদ খান। পরের ওভারে এক বলের ব্যবধানে ম্যাককালাম ও শাহরিয়ার নাফিসকে সাজঘরে ফেরান মেহেদী হাসান। এরপরই উইকেটে আসেন বোপারা। কিন্তু উইকেট থিতু হওয়ার পরেও যে প্রয়োজনের সময় হাত খুলে ব্যাট চালাননি এই ইংলিশ অল-রাউন্ডার! ৬০ বলে প্রয়োজনীয় ৫৭ রানের পরেও ওয়ানডে সুলভ আচরণ করে বোপারার ব্যাট। অথচ তখনও হাতে ছিল ৬ উইকেট। পরিস্থিতি যেমনই হোক ৪৮ বলে ষাটোর্ধো রানের ইনিংস আশা করা যেতেই পারে। আর সেটা হলে ম্যাচের চিত্রটা ভিন্ন হতে পারত।
গেইল-ম্যাককালাম দুজনেই শুরুটা করেন দেখেশুনে। যদিও মেহেদী হাসানের করা প্রথম ওভারেই আউট হতে পারতেন গেইল। কিন্তু তার লেগ বিফোর দ্য উইকেটের আবেদনে সাড়া দেননি আম্পায়ার। এ নিয়ে আম্বায়ার-তামিমে কিছু সময় বাক্য বিনিময়ও হয়। হাসান আলীর করা চতুর্থ ওভারের প্রথম বলে আকাশে উঠা ক্যাচ নিতে ব্যর্থ হন উইকেটরক্ষক লিটন দাস। কুল্লিা দর্শকদের তখন মাথায় হাত। ওই ওভারেই টানা তিন বাউন্ডারি হাঁকিয়ে কেবল শুরু করেছিলেন গেইল। তখনই বল হাতে আসেন রশিদ। দ্বিতীয় বলেই গেইলকে (১৩ বলে ১৭) ফেরান এলবিডবিøউয়ের ফাঁদে ফেলে। এজন্য অবশ্য আম্পায়রকেও একটা ধন্যবাদ দিতে পারেন কুমিল্লার দর্শকরা। লেগ স্টামের বাইরের বলে অমন সিদ্ধান্ত না দিলেও পারতেন আম্পায়র। অবশ্য এক্ষেত্রে প্রথম ওভারের প্রসঙ্গ টানতে পারেন কুমিল্লা সমর্থকরা। সেবার মেহেদী হাসানের বলে জোরালো আবেদনে সাড়া দেননি আম্পায়ার। রিপ্লেতে দেখা যায় বল লাইনেই ছিল। গেইল ফেরার পর ওই ৩১ রানে দাঁড়িয়েই তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে ফেরেন ম্যাককালাম (১৪ বলে ১৩)।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ৬ উইকেট হারানো কুমিল্লাকে নির্ধারিত ২০ ওভারে ১৫৩ রানে বেধে ফেলে রংপুর। টি-২০তে ‘ছোট্ট’ এই পুঁজিতে আটকে ফেলার কারিগর মাশরাফি (২/২২) ও পেরেরা (২/২৬)। ¯্রােতের বীপররিতে কিছুটা স্বচ্ছন্দ ব্যাটিং করেছেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার তামিম ইকবাল (১৯ বলে ৪ চারে ২১) ও ইমরুল কায়েস। ৩২ বলে ৪ চার ও ২ ছয়ে ৪৭ রান করে ৬ষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসেবে বিপিএলের হাজারী ক্লাবে নাম লেখালেন জাতীয় দলের এই ওপেনার। তার সঙ্গে ক্যারিবীয়ান তারকা মারলন স্যামুয়েলসের ৩৪ বলে ৪ চার ও এক ছক্কায় ৪১ রানের ইনিংসে চড়েই লড়াকু পুঁজি গড়ে কুমিল্লা।
২০০৯ সালে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) ৬ ম্যাচ পর এবারই একসঙ্গে খেলছেন গেইল-ম্যাককালাম। তাদের ঝড়ো ব্যাটিং ক্রিকেট বিশ্ব দেখেছে অনেকবার। বিপিএলে তাদের ঝড় দেখার অপেক্ষাটা আরেকটু বাড়লো।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স : ২০ ওভারে ১৫৩/৬ (তামিম ২২, ইমরুল ৪৭, স্যামুয়েলস ৪১, সাউফউদ্দিন ১৬*; মাশরাফি ২/২২, পেরেরা ২/২৬)।
রংপুর রাইডার্স : ২০ ওভারে ১৩৯/৭ (গেইল ১৭, মিথুন ৩১, বোপারা ৪৮, মাশরাফি ১৭; মেহেদী হাসান ২/১৫, আল-আমিন ১/৩৩, হাসান আলী ১/৩৯, রশিদ খান ২/১৯)।
ফল : কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ১৪ রানে জয়ী।
ম্যাচ সেরা : মেহেদী হাসান (কুমিল্লা)।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মিরপুর

১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ