পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
জনবল সঙ্কট, সাড়ে ৭ হাজারের মধ্যে সাড়ে ৪ হাজার পদ শূন্য
মাঠপর্যায়ে ভূমি প্রশাসনে জনবল সঙ্কট চরম আকার ধারণ করেছে। জনবল না থাকায় অধঃস্তন পদের কর্মকর্তারা উচ্চতর দায়িত্ব পালন করছেন। এতে করে ভ‚মি ব্যবস্থাপনায় লেজেগোবরে অবস্থা বিরাজ করছে। জনবলের অভাবে এক দিকে যেমন সুষ্ঠুভাবে কোনো কাজই সম্পন্ন করা যাচ্ছে না, তেমনিভাবে সরকার হারাচ্ছে শত কোটি টাকা ও মূল্যমানের সরকারি সম্পত্তি। সরকার প্রতি বছর পুলিশ ও সরকারি স্কুলগুলোতে যে হারে শিক্ষক নিয়োগ দিচ্ছে সেই তুলনায় ভূমি ব্যবস্থাপনায় জনবল নিয়োগ দিচ্ছে না। ফলে ভ‚মি ব্যবস্থানায় হ-য-ব-র-ল অবস্থা বিরাজ করছে। দেশের আদালতগুলো বিচারধীন মামলার ৮০ ভাগই হচ্ছে ভ‚মি বিরোধ সংক্রান্ত। এখানেই শেষ নয়, বরং দিনে দিনে ভ‚মিসংক্রান্ত মামলার সংখ্যা বেড়েই চলছে। আবার সঠিক কাগজপত্র থাকার পরও জমির মালিকরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রের এ তথ্যে জানা গেছে।
ভ‚মি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আব্দুল জলিল ইনকিলাবকে বলেন, কিছু মামলা থাকার কারণে জনবল নিয়োগে কিছু সমস্যা হচ্ছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় আমাদের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। এগুলো সমাধান হলে জনবল নিয়োগ দেয়া সম্ভব হবে। আমরা দ্রত সমস্যা সমাধানের কাজ করছি।
ভ‚মি রেকর্ড ও জরিপ (ভ‚রেজ) অধিদফতরের মহাপরিচালক শেখ আব্দুল আহাদ ইনকিলাবকে জানান, আমরা জনবল নিয়োগের জন্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছি। আমাদের জনবল না থাকার কারণে সমস্যা হচ্ছে। এর বেশি কিছু বলতে চাই না।
ভ‚মি রেকর্ড ও জরিপ (ভ‚রেজ) অধিদফতরের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, বিপুল সংখ্যক জনবলের পদ শূন্য থাকায় প্রশাসনিক কাজ নানাভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। জনবল নিয়োগের আগে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নেয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সেই অনুসারে এ নিয়ে পাঁচবার অনুমোদন চেয়ে জনপ্রশাসনে ফাইল পাঠিয়েছি। তবে নানা ধরনের কোয়ারি দিয়ে তারা ফাইল ফেরত পাঠিয়েছেন। এ ছাড়া কানুনগো, সাবএসও এবং এএসওদের নিয়োগ মন্ত্রণালয় দিয়ে থাকে। মামলার কারণে ভ‚মি মন্ত্রণালয় ওই পদগুলোতে জনবল নিয়োগ দিতে পারছে না। আশার খবর হচ্ছে কিছুদিনের মধ্যেই সমস্যা সমাধান হবে বলে আশাকরি। নিয়োগ প্রক্রিয়াও শুরু করা যাবে বলেও জানান তিনি। তিনি আরো বলেন, জনবল সঙ্কট থাকার কারণে অনেক জেলায় প্রকৃত জমির মালিকরা রেকর্ড করতে পারছেন না। সে জমিগুলো আবার সরকারি হচ্ছে। এ জন্য অনেক মামলা বাড়ছে।
ভ‚মি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, দেশে বর্তমানে ভ‚মি প্রশাসন অনুমোদত জবলের পদ হচ্ছে সাত হাজার ৬৩২টি। তার মধ্যে কর্মরত আছেন তিন হাজার ৩৮২ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী। শূন্য রয়েছে চার হাজার ২৫০টি পদ। বছরের পর বছর ধরে এসব পদ শূন্য থাকলেও জনবল নিয়োগের কোনো উদ্যোগ নেই। নেই তদারকির ব্যবস্থাও। ভ‚মি রেকর্ড ও জরিপ (ভ‚রেজ) অধিদফতরের আওতায় জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসারের ১৯টি পদের মধ্যে ১৩টিতে কর্মকর্তা কাজ করছেন। শূন্য রয়েছে ছয়টি। চার্জ অফিসারের ৩৫টি পদের মধ্যে সাতটিতে অফিসার কাজ করছেন। ২৮টি পদে কোনো জনবল নেই। সদর সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসারের ১০টি পদের মধ্যে একটিতেও কোনো জনবল নেই। সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসারের ৪১০টি পদের মধ্যে ৩০৩টিতে কর্মকর্তা আছেন। ১০৭টি পদে কোনো কর্মকর্তা নেই। অর্থাৎ সব মিলিয়ে প্রথম শ্রেণীর ১৫১টি পদে কোনো জনবল নেই।
অধিদফরে প্রশাসনিক কর্মকর্তার একটি পদ। তাও আবার শূন্য। জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসের কারিগরি উপদেষ্টার ১০টি পদের একটিতেও কোনো কর্মকর্তা নেই। অধিদফতর, জোনাল সেটেলমেন্ট অফিস দিয়ারা অপারেশন এবং সেটেলমেন্ট অফিসে কানুনগো, উপ-সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার ও সহকারী প্রেস অফিসারের ৬৬৪টি পদ রয়েছে। তার মধ্যে ১৯১টিতে কর্মকর্তা রয়েছে। ৪৭৩টিতে কোনো জনবল নেই। অর্থাৎ দ্বিতীয় শ্রেণীর ৪৮৪টি পদে কোনো জনবল নেই। অধিদফতরে সহকারী জরিপ অফিসারের আটটি পদের মধ্যে ছয়টিতে কর্মকর্তা কাজ করছেন। দুইটিতে কোনো কর্মকর্তা নেই। অধিদফতরের প্রধান সহকারীর (সাধারণ) একটি মাত্র পদ থাকলেও কোনো জনবল নেই। প্রধান সহকারীর (বাউন্ডারি) একটি মাত্র পদ তাও আবার শূন্য। অধিদফতরে একটি মাত্র হেড ড্রাফটম্যানের পদ থাকলেও তা বছরের পর বছর ধরে শূন্য রয়েছে। ড্রাফটম্যানের ২০টি পদের মধ্যে একটিতে কোনো জনবল নেই। সহকারী রেকর্ড কিপারের দুটি পদের মধ্যে একটিতে কোনো জনবল নেই। অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটরের ২৩টি পদের মধ্যে ছয়টিত কোনো জনবল নেই। সিনিয়র সাব সার্ভেয়ারের পদই মাত্র দুটি। কিন্তু একটিতেও কোনো জনবল নেই। সাব-সার্ভেয়ারের ৩৭টি পদের মধ্যে ১০টি পদে কোনো জনবল নেই। কম্পিউটার অপারেটরের ৪৮টি পদের মধ্যে ১৮টিতে কোনো জনবল নেই। বাউন্ডারি আমিনের ১৮টি পদের মধ্যে পাঁচটিতে কোনো জনবল নেই। জিংক কালেক্টরের ১২টি পদের মধ্যে দুইটিতে কোনো কর্মকর্তা নেই। প্রিন্টারের ২০টি পদের মধ্যে চারটিতে কোনো জনবল নেই। অধিদফতরে মেকানিকের একমাত্র পদের কোনো জনবল নেই এবং কাঠমিস্ত্রির একটি মাত্র পদও শূন্য রয়েছে।
জানা গেছে, ভ‚মি রেকর্ড ও জরিপ ভ‚রেজ অধিদফতরের সেটেলমেন্ট প্রেস অফিসের বিভিন্ন ক্যাটগরির ২৭টি পদে কোনো জনবল নেই। তার মধ্যে সুপারিনটেনডেন্ট একটি, প্রধান সহকারীর একটি, ফাইনাল চেকিং কিপারের একটি, হিসাব রক্ষকের একটি, পেশকারের একটি, স্টোর কিপারের একটি, রেকর্ড কিপারের একটি, সহকারী স্টোর কিপারের একটি, মোহরার টু প্রেস সুপার ও সটিং পেশকারের একটি করে পদে ওইসব পদে কোনো জনবল নেই। মিসটেক পাসারের চারটি পদের মধ্যে তিনটি, চেকারের ২১টি পদের মধ্যে ছয়টি, প্রæফ রিডারের ২০টি পদের মধ্যে ৯টি, সহকারী প্রæফ রিডারের ১৫টি পদের মধ্যে দুইটি, বিল ক্লার্কের পাঁচটি পদের মধ্যে তিনটি, কম্পোজিটরের ২১০টি পদের মধ্যে ৯২টি এবং মেকানিকের একটি পদে কোনো লোকবল নেই। এ ছাড়া আটজন প্রিন্টারের মধ্যে তিনজনই নেই। সর্টারের সাতটি পদের মধ্যে তিনটি শূন্য রয়েছে। বøক-কালেক্টরের পাঁচটি পদের মধ্যে তিনটি শূন্য। চার্ট রাইটরের তিনটি পদের মধ্যে দুইটি শূন্য রয়েছে। বøক চেকারের একটিমাত্র পদ হলেও তাতে কেউ কাজ করছে না। অর্থাৎ ওই পদে কোনো লোকবল নেই। মনোটাইপ সুপার কাস্টার অপারেটরের একটি এবং কার্পেন্টারের একটি করে পদ থাকলেও তাতে কোনো লোকবল নেই। এসব পদ বছরের পর বছর শূন্য রয়েছে। কিন্তু তা পূরণে কর্তৃপক্ষের কোনো নজর নেই।
ভ‚রেজ অধিদফতরের দিয়ারা সেটেলমেন্টে তৃতীয় শ্রেণীর ৪৯টি পদের মধ্যে ২৪টিতে কোনো জনবল নেই। তার মধ্যে প্রধান সহকারীর তিনটি, নাজির কাম ক্যাশিয়ারের চারটি, অফিস সহকারীর দুইটি, হেডড্রাপ্টম্যানের দুইটি, হেডক্লার্কের একটি, ড্রাপ্টম্যানের একটি, হেড এসিসটেন্টের তিনটি, এলডিএ-কাম টাইপিস্টের দুইটি, যাঁচ মোহরারের একটি, বদর আমিনের একটি, ড্রাইভারের একটি, সহকারী রেকর্ড কিপারের একটি এবং সাঁট কিপারের দুইটি পদে কোনো জনবল নেই। ভ‚রেজ অধিদফতরের জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসে তৃতীয় শ্রেণীর তিন হাজার ৮৬১টি পদের মধ্যে দুই হাজার ৩৫৬টিতে কোনো জনবল নেই। তার মধ্যে স্টোনোগ্রাফারের ১০টির মধ্যে তিনটি, প্রধান সহকারী তথ্য হিসাব রক্ষকের ১৯টির মধ্যে ১৫টি, নাজির কাম ক্যাশিয়ারের ১৯টির মধ্যে ১৯টি, সহকারী কম্পিউটার অপারেটরের ২৯টির মধ্যে ১৪টি, পেশকারের ৪২৮টির মধ্যে ৩৫৩টি, কপিস্টের ১০টির মধ্যে একটি, টাভার্স সার্ভেয়ারের ১৬টির মধ্যে আটটি, কম্পিউটার আপারেটরের ২০টির মধ্যে পাঁচটি, ড্রাইভারের ২০টির মধ্যে দুইটি, ড্রাফসম্যান কাম এরিয়া এস্টিমেটর কাম সিট কিপারের ৪০৯টির মধ্যে ১৭৪টি, রেকর্ড কিপারের ৪০৯টির মধ্যে ২২টি, সার্ভেয়ারের ৬১৮টির মধ্যে ১৪০টি, খারিজ সহকারীর ৬১৮টির মধ্যে ৪৪৮টি, যাঁচ মোহরার ৬১৮টির মধ্যে ৫৪৮টি এবং কপিস্ট কাম বেঞ্চ সহকারীর ৬১৮টির মধ্যে ৩৬০টিতে কোনো লোকবল নেই। অর্থাৎ এ পদগুলো দীর্ঘ দিন ধরে শূন্য রয়েছে। ভ‚রেজ অধিদফতরে বিভিন্ন পর্যায়ে চতুর্থ শ্রেণীর এক হাজার ৩৭৪টি পদের মধ্যে ৪১৬ টিতে কোনো জনবল নেই। তার মধ্যে অধিদফতরের ফ্রেম ক্যারিয়ারের একটি, ডিন্ডিলের একটি, প্রেসম্যানের ১৮টি, ইংকম্যানের ২১টি, গেলিবয়ের ২৩টি, প্রসেস সার্ভারের ১৬২টি, এমএলএসএসের আটটি, গার্ডের পাঁচটি, সুইপারের তিনটি এবং চেইনম্যানের ১৭২টি পদে কোনো লোকবল নেই। অর্থাৎ পদগুলো বছরের পর বছর শূন্য রয়েছে। এছাড়া ড্রাইভারের ৯টি, প্রসেস সার্ভারের ২০০টি, এমএলএসএসের ২০৯টি এবং চেইনম্যানের ২০০টি পদ শূন্য রয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।