Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৮ জুন ২০২৪, ১৪ আষাঢ় ১৪৩১, ২১ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

ভূমি বাংলাদেশের পরিকল্পনা করে ভারতের কোম্পানি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩০ মে, ২০২২, ১২:০০ এএম

ভূমি বাংলাদেশের অথচ ব্যবহারের পরিকল্পনা করছে ভারতের কোম্পানি। তিস্তার পানি চুক্তি ঝুলিয়ে রেখে ফেনী নদীর পানি চুক্তি করে তুলে নিচ্ছে দেশটি। গত এক যুগে বাংলাদেশ থেকে যা চেয়েছে সবকিছুই পেয়েছে ভারত; অথচ ভারত বাংলাদেশকে তেমন কিছুই দেয়া হয়নি। এবার ভারতের একটি কোম্পানি বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে আসাম থেকে ত্রিপুরায় জ্বালানি পরিবহনের পরিকল্পনা করছে। এ পরিকল্পনা করেছে ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত তেল-গ্যাস অনুসন্ধান ও উৎপাদনকারী কোম্পানি ইন্ডিয়ান অয়েল করপোরেশন (আইওসি)। সাম্প্রতিক বন্যায় আসামে ব্যাপক ভূমিধসের কারণে রেল নেটওয়ার্ক সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিকল্প পথ হিসেবে বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহারের এই পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে কোম্পানিটি। গতকাল রোববার আইওসির কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

এনডিটিভির ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি মাসের শুরুর দিকে আসামের ডিমা হাসাও জেলা ও বরাক উপত্যকা, মিজোরাম, মণিপুর এবং ত্রিপুরার সাথে ভারতের অন্যান্য অঞ্চলের সংযোগকারী একমাত্র রেলপথটি বন্যায় ভেসে যাওয়ায় আইওসি মেঘালয়ের মাধ্যমে সড়কপথে তাদের সব সরবরাহ শুরু করেছে। এতে কোম্পানির পরিবহন ব্যয় দ্বিগুণেরও বেশি হয়েছে।

দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে আইওসির নির্বাহী পরিচালক (ইন্ডিয়ান ওয়েল-এওডি) জি রমেশ বলেছেন, ডিমা হাসাওয়ে ভূমিধসের পর মনিপুর, মিজোরাম, ত্রিপুরা এবং আসামের দক্ষিণাঞ্চলে পৌঁছানোর একমাত্র উপায় সড়কপথ। এই রুটও ভূমিধসপ্রবণ। এই পরিস্থিতিতে উত্তরপূর্ব ভারতের দক্ষিণের এলাকাগুলোতে জ্বালানি সরবরাহের জন্য সরকার এবং কেন্দ্র বিকল্প উপায় খুঁজতে বাধ্য হয়েছে। কোম্পানির উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় শাখা ইন্ডিয়ানঅয়েল-এওডি ২০১৬ সালে বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করে ত্রিপুরায় কয়েকটি চালান পাঠিয়েছিল। সেই সময় আসামের বরাক উপত্যকায় রাস্তার করুণ অবস্থার কারণে সরবরাহে ভয়াবহ ব্যাঘাত ঘটেছিল।
আইওসির এই কর্মকর্তা বলেছেন, আমরা বিকল্প রুট হিসেবে ৬ বছরের পুরোনো নেটওয়ার্কটি পুনরায় সচল করার চেষ্টা করছি। বর্তমানে আমরা কেন্দ্রের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারের সাথে আলোচনা করছি। আমরা আশাবাদী, শিগগিরই ইতিবাচক খবর আসবে।

ভারতের সরকারি এই কোম্পানি মেঘালয়ের ডাউকি হয়ে বাংলাদেশে জ্বালানি কনভয় পাঠানোর পরিকল্পনা করছে। পরে সেই কনভয় বাংলাদেশ থেকে পুনরায় ভারতের ত্রিপুরার কৈলাশহরে প্রবেশ করবে।
এই বিষয়ে আলোচনা চূড়ান্ত এবং একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হলে ইন্ডিয়ানঅয়েল-এওডি তাদের জ্বালানি প্রাথমিকভাবে গুয়াহাটির বেতকুচি ডিপো থেকে বাংলাদেশের মাধ্যমে ত্রিপুরার ধর্মনগর ডিপোতে পরিবহন করবে। রমেশ বলেছেন, প্রথম ধাপে একটি পূর্ণ কনভয় পাঠানো সম্ভব নাও হতে পারে। আমরা পেট্রোল, ডিজেল এবং এলপিজি বহনকারী একটি পাইলট কনভয় পাঠাতে চাই। আর এই পাইলট চালান কেবল ৮০ থেকে ১২০ কিলোলিটার জ্বালানি পরিবহন করতে পারে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে আইওসির আরেকজন সিনিয়র কর্মকর্তা পিটিআইকে বলেছেন, আইওসি প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করে রেলপথে এক হাজার ৪০০ কিলোলিটার জ্বালানি ৩৪ দশমিক ২২ লাখ রুপির বিপরীতে ৫৭ দশমিক ৭৮ লাখ রুপিতে পরিবহনের পরিকল্পনা করছে।

বিভিন্ন ধরনের জ্বালানি আইওসির বেতকুচি ডিপো থেকে ধর্মনগর ডিপোতে পরিবহনের মোট দূরত্ব হবে ৩৭৬ কিলোমিটার। এর মধ্যে বাংলাদেশের ভেতরে পড়বে ১৩৭ কিলোমিটার। কিন্তু এই সড়কপথের মেঘালয়-বরাক উপত্যকা হয়ে ধর্মনগর ডিপো পর্যন্ত স্বাভাবিক দূরত্ব ৫৭৯ কিলোমিটার।

২০১৬ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ভারতের এই কোম্পানি আসামের জরাজীর্ণ জাতীয় মহাসড়ক এড়াতে প্রথমবারের মতো গুয়াহাটি ডিপো থেকে ৮৪ হাজার লিটার কেরোসিন এবং ডিজেল বহনকারী সাতটি ট্যাঙ্কারকে বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে ত্রিপুরায় পাঠিয়েছিল। রেল সংযোগ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর আইওসির সব জ্বালানি মেঘালয় হয়ে সড়কপথে সরবরাহ করা হয়। ইন্ডিয়ানঅয়েল-এওডির এক মুখপাত্র বলেছেন, এর ফলে কোম্পানির ব্যয় বিপুল পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে।

ইন্ডিয়ানঅয়েল-এওডির ব্যবস্থাপক (কর্পোরেট কমিউনিকেশন) শেখর জ্যোতি দত্ত বলেছেন, রেলপথে বরাক উপত্যকা, মিজোরাম এবং ত্রিপুরায় জ্বালানি পরিবহনের মাসিক ব্যয় ছিল ৪ দশমিক ৭১ কোটি রুপি। কিন্তু বর্তমানে সড়কপথে জ্বালানি সরবরাহ করায় আমাদের ব্যয় বেড়ে মাসে ১০ দশমিক ৫৬ কোটিতে দাঁড়িয়েছে।



 

Show all comments
  • Md Saidul Islam Bhuyian ৩০ মে, ২০২২, ৬:৫৫ এএম says : 0
    এই চুক্তি বাতিল করা হোক,
    Total Reply(0) Reply
  • Alom Shoeal Morshed ৩০ মে, ২০২২, ৬:৫৬ এএম says : 0
    সবার জন্য বলি মায়া থাকা ভালো মানুষ মানুষের জন্য কিন্তু আপনাকে মনে রাখতে হবে বেশি ভালো, ভালো না।
    Total Reply(0) Reply
  • Humayun Kaber ৩০ মে, ২০২২, ৬:৫৬ এএম says : 0
    বিষয়টি একটু ভালোভাবে চিন্তা করা উচিত যারা উপরোক্ত কর্মকর্তা আছে তাদের এই দায়িত্ব পরে আমার মনে হয়
    Total Reply(0) Reply
  • Khatib Kibria ৩০ মে, ২০২২, ৬:৫৬ এএম says : 0
    শুধু ফেনী নদি নয় সিমান্তের সব নদি থেকে ভারত সুবিধা নিচ্ছে একতরফা ভাবে বাংলাদেশ বনচিত হয় সব জায়গায়!
    Total Reply(0) Reply
  • সাকিল হাসান। সেলিম ৩০ মে, ২০২২, ৮:১৪ পিএম says : 0
    আমি মনে করি এবার যদি ভারতেরসাথে এ রকম। কোনো চুক্তি হয়। তাহলে এদেশের জনগণ কে সেটা প্রতিহত করতে হবে ।আমরা ভারত কে সব কিছু দেব আর আমাদের কিছুই দেবেন না সেটা আর হবেনা ।
    Total Reply(0) Reply
  • Mohiuddin molla ৩০ মে, ২০২২, ৭:১৭ এএম says : 0
    দেশীয় দালালদের ব্যাপারে দেশের জনগণকে সচেতন হতে হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • স্বপন কুমার দেব ৩০ মে, ২০২২, ১১:০২ এএম says : 0
    পাকিস্তান আমলে, বা বিএনপি /এরশাদের আমলে ভারত বাংলাদেশের জমি জ্বালানি সরবরাহের জন্যে ব্যবহার করেনি তাতে কী নর্থ ইষ্ট রাজ্যগুলো মরে গিয়েছিল?ফেনী নদীর উৎপত্তি কোথায়?সেটিও মনে রাখা প্রয়োজন।বাংলাদেশ যে নেপালে, ভুটানে ভারতের জমি ব্যবহার করে রপ্তানি করে সেটার কী হবে?
    Total Reply(1) Reply
    • iqbal ৫ জুন, ২০২২, ৩:৫০ পিএম says : 0
      Selfish india ar chamca toi.Kosai bharoter tarif sara toi r ki bolbi?
  • মোহাম্মদ ৩০ মে, ২০২২, ১১:২৮ এএম says : 0
    নিজেদের সার্বভৌমত্ব সমুন্নত রেখে এবং আত্নমর্যাদা অক্ষুন্ন রেখে সবকিছু করাতে গর্ব আছে কিন্তু বিপরীতে?
    Total Reply(0) Reply
  • jack ali ৩০ মে, ২০২২, ১২:০০ পিএম says : 0
    দেশদ্রোহী আল্লাহদ্রোহী সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য তথাকথিত বন্ধু দেশ আমার দেশের ক্ষমতালোভী শাসকরা ইন্ডিয়ার কাছে সব কিছু বিক্রি করে দিয়েছে বিনা পয়সায় ইন্ডিয়া আমাদের দেশটাকে পুরোপুরি ধ্বংস করে দিয়েছে সব দিক থেকে ও আল্লাহ তুমি আমাদেরকে কোরআন দিয়ে দেশ চালাও তাহলে আমাদের ঘরে কেউ অত্যাচার করতে পারবেনা কেউ আমাদের মাটির ব্যবহার করতে পারবে না কেউ আমাদের দেশটাকে ধ্বংস করতে পারবে না
    Total Reply(0) Reply
  • Dr. Md. Abdur Rashid ১ জুন, ২০২২, ৫:৫২ এএম says : 0
    India is always illegally depriving Bangladesh by withdrawning the water fron Ganges and Tista even floodind Bangladesh by openig the dam suddenly that destrying the crops and hiuses of Bangladesh;India enjoying all facilities as the King upon Bangladesh,the Govt.Bangladesh should think about the interes of of own by maintain the sovereignty.
    Total Reply(0) Reply
  • Bashir Uddin ১ জুন, ২০২২, ১২:৪৮ পিএম says : 0
    ভারত সবসময় অবৈধভাবে বাংলাদেশকে বঞ্চিত করে গঙ্গা ও তিস্তার পানি প্রত্যাহার করে এমনকি বাংলাদেশকে প্লাবিত করে হঠাৎ বাঁধ খুলে দিয়ে বাংলাদেশের ফসল ও জমি নষ্ট করে দিচ্ছে; ভারত বাংলাদেশের রাজা হিসেবে সকল সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছে, বাংলাদেশ সরকারের স্বার্থের কথা ভাবা উচিত। সার্বভৌমত্ব বজায় রাখার দ্বারা নিজস্ব স্বার্থের কথা ভাবা উচিত।
    Total Reply(0) Reply
  • MOHAMMAD IAMAIL MOLLA ৫ জুন, ২০২২, ৭:০২ এএম says : 0
    SOMY HOLE SIKIM VOTAN ER MOTOY HOBE BD
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভূমি বাংলাদেশ
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ