বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
সদ্য চালু হওয়া মালিবাগ-মগবাজার ফ্লাইওভারের নিচের অংশ লোহার বেরা দিয়ে সংরক্ষণ করা হয়েছে। বেরার ভেতরের অংশ এখন মাদকাসক্তদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল। দিনে দুপুরে তারা সেখানে বসে প্রকাশ্যে মাদক সেবন করে। মাদকের ঝাঁঝালো গন্ধে পথচারীদের নাকে মুখে রুমার ব্যবহার করতে হয়। শুধু মাদক সেবন নয়, রাতে কোনো কোনো স্থানে পতিতাদের আড্ডাও জমে। মালিবাগ চৌধুরীপাড়া এলাকায় গতকাল শনিবার দুপুরেও দেখা গেছে কয়েকজন মাদকসেবী প্রকাশ্যে মাদক সেবন করে নাচানাচি করছে। রাজধানী মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের যাত্রাবাড়ী ও ফুলবাড়ী প্রান্তেও একই দৃশ্যের দেখা মেলে। ফ্লাইওভারের নিচ দিয়ে যারা যাতায়াত করেন তাদের জন্য এ দৃশ্য ভীতিকর। মালিবাগের বাসিন্দা রউফ চৌধুরী বলেন, মাদকাসক্তদের হিতাহিত জ্ঞান থাকে না। তারা কখন কি করে বসে তা বোঝা মুশকিল। সে কারনে যতো ভয়। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের চেয়ারম্যান আবু নাসের খান ইনকিলাবকে বলেন, পথচারীদের নিরাপত্তার জন্য রাস্তা, ফুটপাতে অথবা এর আশেপাশে মাদকাসক্তরা যাতে সমবেত হতে না পারে তা দেখার দায়িত্ব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর। মাদকাসক্তরা তাদের চাহিদা পূরণের জন্য ছিনতাই করে। এটা জানার পর একজন পথচারী মাদকাসক্তদের কাছে দিয়ে যেতে ভয় পাবে-এটাই স্বাভাবিক। তিনি বলেন, ফ্লাইওভারের নিচের অংশ বেরা না দিয়ে উন্মুক্ত রাখলেই ভালো থাকতো। খোলা রেখে সেখানে সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ করা যেতো। জানতে চাইলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোঃ কুদরতুল্লাহ ইনকিলাবকে বলেন, মালিবাগ-মগবাজার ফ্লাইওভারটি এলজিইডি এখনও সিটি কর্পোরেশনের কাছে হস্তান্তর করেনি। করলে ফ্লাইওভারের নিচের খালি অংশে কি করা যায় কর্পোরেশন তা ভেবে দেখবে। মালিবাগ-মগবাজার ফ্লাইওভার পুরোপুরি খুলে দেয়া হয়েছে গত মাসে। মালিবাগ থেকে রামপুরার অংশটি খুলে দেয়ার মাধ্যমে এই ফ্লাইওভারটি পুরোপুরি চালু হয়েছে। রাস্তা বাদে ফ্লাইওভারের নিচের অংশ লোহার বেরা দিয়ে সংরক্ষিত করা হয়েছে। এই অংশে অনায়াসে সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য গাছ লাগানোসহ বিভিন্ন রকমের কাজ করা যায়। কিন্তু এরই মধ্যে লোহার বেরা দিয়ে ঘেরা এই অংশ মাদকাসক্তদের নিরাপদ আশ্রয়স্থলে পরিণত হয়েছে। সরেজমিনে মালিবাগ-মগবাজার ফ্লাইওভার এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, মালিবাগ থেকে রামপুরার দিকে যেতে চৌধুরীপাড়া এবং আবুল হোটেলের বিপরীতে লোহার বেরার ভিতরে বসে মাদকাসক্তরা প্রকাশ্যে মাদক সেবন করছে। গতকাল দুপুরে চৌধুরীপাড়া এলাকায় ৪/৫জন মাদকসেবী গাঁজা সেবন করে নাচানাচি করছিল। স্থানীয়রা এ নিয়ে খুবই বিব্রত, বিরক্ত। আবুল হাশেম নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, দিনের বেলায় এমন দৃশ্য দেখে অবাক হচ্ছেন? রাত যতো বাড়ে এদের সমাগম ততোই বাড়ে। রাতে গাঁজার গন্ধে এই এলাকা দিয়ে হাঁটাই যায় না। খিলগাঁওয়ের বাসিন্দা মোনায়েম হোসেন বলেন, সকালে বাচ্চাদের নিয়ে স্কুলে যাওয়ার সময় বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়। মাদকাসক্তরা উলঙ্গ হয়ে শুয়ে থাকে। আবার পতিতাদেরও দেখা যায়। তিনি বলেন, ভাবখানা এমন যেনো ওদের নিরাপত্তার জন্যই এভাবে লোহার বেরা দেয়া হয়েছে।
মালিবাগ আবুল হোটেলের কাছে কয়েকজন মাদকসেবী মিলে মাদক সেবনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলো। কাছে গিয়ে তাদের পরিচয় জানতে চাইলে একজন নিজেকে মালিবাগ এলাকার বাসিন্দা দাবি করে বলে, আমরা কাউকে ডিসটার্ব করি না। এখানে কি করেন? এমন প্রশ্নের জবাবে ২২/২৩ বছরের ওই যুবকের উত্তর, আমরা টুকটাক নেশা করি। বাসায় তো আর নেশা করা যায় না। এলাকার অলিতে গলিতেও মানুষ ডিসটার্ব ফিল করে। তাই আমরা এই জায়গা বেছে নিয়েছি। এখানে মাদক সেবন করলে কেউ বাধা দেয় কি না জানতে চাইলে ওই যুবকের সাফ উত্তর, এখানে বাধা দিবে কে? এটা কি কারো বাপের জায়গা?
এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, মগবাজার মোড়েও ফ্লাইওভারের নিচে মাদকাসক্তদের আড্ডা দিনে রাতে লেগেই থাকে। শুধু তাই নয়, রাতে সেখানে প্রকাশ্যে মাদক বেচাকেনাও চলে। মগবাজার এলাকার এক হোটেল ম্যানেজার জানান, রাতে মাদকসেবীদেরকে কেন্দ্র করে পতিতাদের আনাগোনাও বাড়ে। গভীর রাতে ফ্লাইওভারের নিচ দিয়ে হাঁটার মতো আর কোনো অবস্থা থাকে না। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, সব কিছু হয় পুলিশের চোখের সামনেই। কিন্তু পুলিশ এদেরকে কিছু বলে না কেন বুঝিনা। জানতে চাইলে পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, মাদকসেবীরা আগে পাড়া মহল্লায় অলিতে-গলিতে মাদক সেবন করতো। এখন তারা ফ্লাইওভারের নিচে আশ্রয় নিয়েছে। এতে পথচারীদের সাময়িক অসুবিধা হলেও এলাকার মানুষ নিস্কৃতি পেয়েছে। এদেরকে কেনো ধরা হয় না এমন প্রশ্নের জবাবে ওই কর্মকর্তা বলেন, এদের ধরাও যন্ত্রনা। বাড়তি ঝামেলা। এজন্য পুলিশ এদেরকে এড়িয়ে চলে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।