পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ধীর লয়ে শীত নামছে। আর বান বর্ষণের ঝাপটাকে সয়ে বাজারে চলে এসেছে আগাম লাগানো শীতকালীন শাক-সবজি। যদিও এখন বছর জুড়েই সব ধরনের শাক-সবজির দেখা মেলে, তারপরও শীতকালীন শাক-সবজির স্বাদই আলাদা। শীত মওসুম শুরু হবার সাথে বাজারে ভরে উঠেছে শীতকালীন শাক-সবজিতে। নামে শীতকালীন হলেও বাজারে এর মূল্য উত্তাপ ছড়াচ্ছে। বরাবরই বেশী লাভের আসায় আগাম জাতের শাক-সবজি চাষ করে কৃষক। কারণ ভরা মওসুমে এসব শাক-সবজির দাম এতো পড়ে পড়ে যায় যে তা নিয়ে দুঃশ্চিন্তার ভাঁজ পড়ে কৃষকের কপালে। এবার বান আর ভারী বর্ষণে আবাদের ছন্দপতন ঘটালেও উৎপাদন কিন্তু মন্দ হয়নি। বাজার ভরা শাক-সবজির আমদানী সে কথা বলে দেয়। আগাম লাগানো শাক-সবজির আমদানী ভাল হলেও দামে স্বস্তি মিলছেনা। প্রায় শাক-সবজির দামই কেজি প্রতি পঞ্চাশ টাকার উপরে। এক সময়ের মূল্যহীন মূলার দামও পঞ্চাশ টাকা। গ্রীস্মকালীন ফসল পটলের বাজারও চড়া। তেতো স্বাদের করল্লা একশ’ টাকা কেজিতে উঠায় ভোক্তার কাছে এর স্বাদ আরো তেতো হয়ে উঠেছে। দুধ সাদা ফুলকপি কেজিতে পঞ্চাশ টাকা। ছোট আকারের পাতাকপির দামও কম নয়। সীম বরবটি কোনটায় একশ’ টাকা কেজির নীচে নয়। চারশ’ টাকা কেজিতে উঠে সবচেয়ে রেকর্ড ছাড়িয়েছে সজনে ডাটা। বেগুনের বাজারেও আগুন কম নয় সত্তর টাকা কেজিতে ক্রেতাদের পোড়া বেগুনের মত পোড়াচ্ছে। প্রতি পিস লাউ কুমড়ো চল্লিশ টাকা। ঢেঁড়স বিক্রি হচ্ছে পয়তাল্লিশ টাকায়। পালংশাক উঠেছে ষাট টাকা আর লাল শাক ত্রিশ টাকা কেজিতে। প্রবাদ রয়েছে খাও কচু থাকবে কিছু। অর্থাৎ কচুর কম দামের কারনে কিছু সস্তায় হবে এমনটি বলা হয়েছে। কিন্তু সেই কচুর দামও প্রকার ভেদে ত্রিশ টাকা কেজির নীচে নয়। সব -সবজির সাথে আলু মিলে যায় বলে ব্যাঙ্গ করে গোল আলু বলা হয়। সেই আলুর এবার শনির দশা চলছে। ব্যাপকভাবে মজুদ করার কারনে এখন শেষ সময়ে এসেও হিমাগার খালি হয়নি। অথচ নতুন করে শুরু হচ্ছে আলু লাগানোর মওসুম। আগের হাজার হাজার টন আলু পড়ে আছে। ব্যবসায়ীরা হায় হায় করছে। হিমাগারে আট টাকা কেজি হলেও বাজারে প্রকারভেদে ষোল টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। শাক-সবজির বাজারে এখন সবচেয়ে কম দাম হলো আলুর।
শাক-সবজির মাঠ আর হাট বাজার ঘুরে সংশ্লিষ্টদের সাথে আলাপকালে জানা যায়, আগাম লাগানো শাক-সবজির উৎপাদন মোটেই কম নয়। মোটামুটি দামও পাচ্ছে উৎপাদকরা। তবে শহরে বাজারে যে দামে বিক্রি হচ্ছে তার চেয়ে অনেক কম দামই মিলছে তাদের। উৎপাদক আর ভোক্তার মাঝে ভাগ বসাচ্ছে মধ্যস্বত্ত ভোগীরা। তারা মাঠে হাটে গিয়ে এসব শাক-সবজি কিনছে সিন্ডিকেট করে। পণ্যের মূল্য তারা ঠিক করছে। হাতের কাছে পেয়ে দাম একটু কম পেলেও নানা ঝামেলা পোহানোর হাত থেকে রক্ষা পেতে কৃষক ওদের হাতে তুলে দিচ্ছে ঘাম ঝরানো ফসল। শীতকালীন-সবজির উঠতি মওসুমে এর দাম বেশী হওয়ায় ভোক্তাদের বেশী টাকা খরচ করতে হচ্ছে। এই বাড়তি টাকার যতটা না যাচ্ছে কৃষকের হাতে। তার চেয়ে বেশী যাচ্ছে মধ্যস্বত্ত ভোগীদের পকেটে। মাঠ থেকে ধাপে ধাপে বাড়ানো হচ্ছে দাম।
শীতের আরেকটি পণ্য খেজুরের গুড় বাজারে আসতে শুরু করেছে। শুরু হয়েছে আমন ধান কাটা। নতুন চাল আর নতুন খেজুরের গুড়ের মন মাতানো স্বাদ আর সৌরভই আলাদা। বাজারে খেজুর গুড় বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি নব্বই হতে একশো টাকায়। শীতকালীন পন্যের এমন দামে ক্রেতারা রয়েছেন অস্বস্তিতে। ভোক্তারা অভিযোগ করে বলেন, মধ্যস্বত্ত ভোগীদের এমন কারবারী নিয়ন্ত্রনের প্রয়োজন কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার না করাকে। এরা শুধু প্রতিদিনের বাজার দর সংগ্রহ করে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দায়িত্ব শেষ করে। রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চলতি রবি মওসুমে এখানে সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে বারো হাজার হেক্টর। এখন পর্যন্ত আবাদ হয়েছে আট হাজার হেক্টরের মত জমিতে। চাষাবাদ চলছে। পুরোদমে ফসল ওঠা শুরু করলে দাম কমবে। ক্রেতারাও স্বস্তি পাবেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।