Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পদ্মা সেতুর পাথর খালাসে বিপত্তি

অবৈধ দখলদারের দৌরাত্মের মুখে ফরিদপুর রেল স্টেশন

ফরিদপুর জেলা সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ৮ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

অবৈধ দখলদারের দৌরাত্মে বেদখল হয়ে আছে ফরিদপুর রেল স্টেশনের আশেপাশের বিশাল এলাকা। ফলে ইয়ার্ড নির্মাণ করতে না পারায় ব্যাহত হচ্ছে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজের পাথর খালাস ও সরবরাহ। শহরের লক্ষিপুর ও আলীপুর এলাকার একটি বড় অংশ জুড়ে রয়েছে রেলের বিভিন্ন স্থাপনা। বৃটিশ আমল থেকে গড়ে ওঠা এসব স্থাপনা ও জায়গার সিংহ ভাগই বেদখল হয়ে যায় এই অঞ্চলে রেল বন্ধ হয়ে যাবার পর থেকে। গত তিন বছর যাবৎ সেই রেল যোগাযোগ পুনরায় চালু হলেও এখনো উদ্ধার করা যায়নি স্থানীয় প্রভাবশালীদের কবল থেকে রেলের সেই জমি।
ফরিদপুর পৌরসভার স্থানীয় ওয়ার্ড কমিশনার নাফিজুল ইসলাম তাপস বলেন, দীর্ঘ দিন পরে হলেও ফরিদপুরের ঐহিত্যবাহী এই রেল স্টেশন বর্তমান সরকার চালু করে। তিনি বলেন, স্টেশনে জায়গার অভাবে যেখানে ইয়ার্ড নির্মাণ করা যাচ্ছে না, অথচ একশ’একরের বেশী সম্পত্তি রেল বিভাগের বেহাত হয়ে রয়েছে, যা পুনরুদ্ধারের কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি এখনো। তিনি দাবি করে বলেন, রেল বিভাগের সম্পত্তি দখলদারদের হাত থেকে উদ্ধার করে সরকারি প্রয়োজনে তা ব্যবহার করবে।
ফরিদপুর রেল স্টেশনের পাথর আনলোডিংয়ের কাজে নিয়েজিত মো. উজ্জল শেখ জানান, পাথরবাহী ট্রেন এখন কম আসায় আমরা বেকার হয়ে আছি, এক মাসের বেশি সময় হলো এই স্টেশনে পাথরবাহী ট্রেন ৬টি এসেছে, যেখানে আগে আসতো ২০টির বেশি।
ফরিদপুর চেম্বর অব কর্মাস এন্ড ইন্ড্রাটিজের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও পাথর আমদানি কারক মো. সিদ্দিকুর রহমান জানান, পদ্মা সেতুর এ্যাপ্রোচ রোড এবং পায়রা বন্দরের নির্মাণ কাজের পাথর ভারত থেকে রেল পথে ফরিদপুর আসে। এখান থেকে সড়ক পথে পৌঁছানো হয় কর্মস্থলে। কিন্তু সম্প্রতি ফরিদপুরে রেললাইন সম্প্রসারণের কাজ শুরু হওয়ায় ও বিভিন্ন স্থানে রেল লাইনে মাটি সরে যাওয়ায় পাথর আমদানি ও আনলোডিং কাজে স্থবিরতা নেমে এসেছে। তিনি বলেন, দুবছর যাবৎ প্রতিমাসে গড়ে ৪২ ওয়াগনের ২০ র‌্যাক করে পাথর খালাস করেছেন আমদানী কারকরা। সেখানে রেল স্টেশনের সমস্যার কারনে গত এক মাসে তিনটি কোম্পানি পাথর আমদানী করেছেন মাত্র ৭ র‌্যাক। একারণে একদিকে যেমন ব্যাহত হচ্ছে জনগুরুত্বপূর্ণ কাজের পাথর সরবরাহ, তেমনি সরকার হারাচ্ছে বিপুল পরিমান রাজস্ব।
ফরিদপুর রেল স্টেশনের স্টেশন মাষ্টার মাসুদ রানা রনি জানান, প্রতি র‌্যাক পাথরের জন্য আমদানীকারকরা রেলকে ১৫ লাখ টাকা ভাড়া, ১৭ লাখ টাকা ডিউটি ট্যাক্স ও ৪০ হাজার টাকা আনলোডিং এর জায়গার ভাড়া পরিশোধ করতে হয়। তিনি বলেন, সম্প্রতি কিছু সমস্যা হয়েছে, আমরা বিষয়টি রেল কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। ইতিমধ্যে রেল বিভাগের কয়েকজন উদ্ধর্তন কর্মকর্তা সরেজমিন এসে দেখে গেছেন। এই রেল স্টেশন মাষ্টার আশাবাদ ব্যাক্ত করে বলেন, অল্প সময়ের মধ্যে এই সমস্যা থাকবে না।
বাংলাদেশ রেলওয়ের পাকশি অঞ্চলের বিভাগীয় ম্যানেজার অসিম কুমার তালুকদার এ বিষয়ে বলেন, পদ্মা সেতুসহ দেশের সকল বড় উন্নয়ন কাজের পাথর ভারত থেকে রেল পথেই আমদানি করা হয়। তিনি বলেন, আমাদের ইঞ্জিন, জনবল ও স্টেশন আধুনিকায়ন ব্যবস্থা না থাকায় যে ভাবে পাথর আমদানি ও আনলোডিং করা কথা সে ভাবে করতে পারছিনা। তিনি জানান, সরকার চেষ্টা করছে রেল বিভাগের সকল সমস্যা সমাধানের। ফরিদপুরসহ অন্যানো স্টেশনে যে সমস্যা রয়েছে তা সমাধানের জন্য কাজ শুরু হয়েছে। আগামীতে এই সমস্যা আর থাকবে না।



 

Show all comments
  • আরিফ ৮ নভেম্বর, ২০১৭, ৫:৪৭ এএম says : 0
    আশা করি দ্রুত এ সমস্যার সমাধান হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • সাইফুল ইসলাম ৮ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:৪৮ পিএম says : 0
    ব্যক্তিগত শার্থের কারনেই এই অবস্থা। আর সরকার ব্যবস্থাই বা কেমন যে কিছু সিন্ডিকেটের কাছে যেটা জিম্মি হয়ে যায়।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পদ্মা

১১ জানুয়ারি, ২০২৩
৩১ অক্টোবর, ২০২২
৪ অক্টোবর, ২০২২
২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ