পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী এম কে আনোয়ার আর নেই। তিনি গত সোমবার রাত ১টা ২০ মিনিটে এলিফ্যান্ট রোডের বাসভবনে ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাইহির রাজিউন)। সাবেক এই ক্যাবিনেট সচিব বেশকিছু দিন ধরেই বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর। প্রবীণ এই রাজনীতিবিদের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফসহ বিএনপি ঢাকা মহানগর উত্তর, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ, স্বেচ্ছাসেবক দল, যুবদল, শ্রমিক দল, ছাত্রদলসহ বিএনপির অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
এম কে আনোয়ারের পরিবারের সদস্যরা জানান, গতকাল সকাল ১০টায় তার প্রথম জানাযা অনুষ্ঠিত হয় সকাল ১০টায় কাঁটাবন মসজিদে, দুপুর ১২টায় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এবং যোহরের নামাজের পর জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায়। এরপর গতকাল রাতে তার লাশ রাখা হয় বারডেম হাসপাতালের হিমঘরে। তার ছোট ছেলে মাসুদ আনোয়ার ও মেয়ে খাদিজা আনোয়ার আজ ভোরে যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে ফেরার পর সড়ক পথে লাশ নিয়ে যাওয়া হবে এম কে আনোয়ারের নির্বাচনী এলাকা কুমিল্লার হোমনায়। পথে দাউদকান্দির তিতাসে বাদ জোহর এবং হোমনায় বাদ আসর জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে এই রাজনীতিবিদকে দাফন করা হবে।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ১৯৫৩ সালে সিএসপি কর্মকর্তা হিসেবে সরকারি চাকরিতে যোগ দেন এম কে আনোয়ার। পাকিস্তান ও বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্বপালন করেন তিনি। এম কে আনোয়ার ১৯৯০ সালে রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ কর্মকর্তা ক্যাবিনেট সচিব হিসেবে অবসরে যান। চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার পর ১৯৯১ সালে বিএনপির রাজনীতিতে যোগ দেন তিনি। কুমিল্লার হোমনা আসন থেকে এই নেতা একাধিক বার জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। দুইবার মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বপালন করেন।
বিএনপির শ্রদ্ধা নিবেদন: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এম কে আনোয়ারের মৃত্যুতে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছে বিএনপির নেতাকর্মীরা। প্রবীণ এই রাজনীতিবিদের মৃত্যুর সংবাদ পাওয়ার পরপরই রাতে তার এলিফ্যান্ট রোডের বাসভবনে ছুটে যান দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সেখানে তিনি মরহুমের পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়স্বজনদের প্রতি সমবেদনা জানান।
গতকাল বেলা ১২টায় নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মরহুম এম কে আনোয়ারের লাশ নিয়ে আসা হলে বিএনপি মহাসচিবসহ স্থায়ী কমিটির সদস্যরা তার কফিন দলীয় পতাকায় ঢেকে দেন। সেখানে জানাযা শেষে কফিনে ফুল দিয়ে নীরবে কিছুসময় দাঁড়িয়ে শ্রদ্ধা জানান। এসময় উপস্থিত ছিলেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, বিএনপির সিনিয়র নেতা আবদুল্লাহ আল নোমান, হাফিজউদ্দিন আহমেদ, শাহজাহান ওমর, মোহাম্মদ শাহজাহান, খন্দকার মাহবুব হোসেন, শামসুজ্জামান দুদু, জয়নাল আবেদীন, আহমেদ আজম খান, আবদুল হালিম, আমানউল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, আবদুল কাইয়ুম, শাহজাদা মিয়া, রুহুল কবির রিজভী, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, আবুল হাই, রেজাউল করীম, হাবিবুল ইসলাম হাবিব, ওবায়দুল ইসলাম, আবদুস সালাম আজাদ, তাইফুল ইসলাম টিপু, মুনির হোসেন, বেলাল আহমেদ, রফিক শিকদারসহ সহা¯্রাধিক নেতা-কর্মী ওই জানাজায় অংশ নেন। এছাড়া অঙ্গ সংগঠনের নেতাদের মধ্যে ছিলেন সাইফুল আলম নীরব, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, মোরতাজুল করীম বাদরু, কাজী আবুল বাশার, শফিউল বারী বাবু, আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েল, ইয়াসীন আলী, আনোয়ার হোসেইন, নুরুল ইসলাম খান নাসিম, ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, রাজীব আহসান, আকরামুল হাসান, এম এ মালেক ও শাহ নেসারুল হক। এম কে আনোয়ারের বড় ছেলে মাহমুদ আনোয়ারও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
জানাজার আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, এই সরকারের নির্যাতন এম কে আনোয়ারকে পিছু হটতে দেয়নি। তিনি গণতন্ত্রের যে আদর্শে বিশ্বাস করতেন, সেই আদর্শকে সমুন্নত রাখার জন্য সব সময় ত্যাগ স্বীকার করেছেন এবং জনগণকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি বলেন, আজকে তার এই চলে যাওয়া শুধু তার পরিবারের জন্য নয়, আমাদের বিএনপির জন্য শুধু নয়, সমগ্র দেশের জন্য একটা অপূরনীয় ক্ষতি হয়ে গেল। এরকম নির্ভিক, সৎ মানুষ আমাদের মাঝে আজকাল বিরল।
স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আমরা একজন সৎ, নিষ্ঠাবান রাজনীতিবিদকে হারালাম। দেশবাসীকে অনুরোধ করব, তারা যেন এম কে আনোয়ারের জন্য দোয়া করেন। আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ একজন সৎ, যোগ্য, নিষ্ঠাবান রাজনীতিবিদ এবং একজন ভদ্রলোককে হারিয়েছে।
এদিকে যোহরের নামাজের পর জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় অনুষ্ঠিত জানাযায় উপস্থিত ছিলেন, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, বাণিজ্য মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, সংসদের প্রধান হুইপ আ স ম ফিরোজ, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ, চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, আবদুল মান্নান, শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানীসহ সাংসদের কর্মকর্তারা।
এম কে আনোয়ারের মৃত্যুতে মঙ্গলবার শোক পালন করছে বিএনপি। সকাল থেকেই দলীয় কার্যালয়ে দলীয় পতাকা অধনমিত রাখা হয়েছে। পাশাপাশি উত্তোলন করা হয়েছে কালো পতাকা। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, মঙ্গলবার (গতকাল) সকাল থেকে এই শোক পালন হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।