বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
এস এম উমেদ আলী, মৌলভীবাজার থেকে : গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার মনুনদী ও কমলগঞ্জের ধলাইনদীতে নতুন ও পুরাতন মিলে ৮টি স্থান দিয়ে বন্যার পানি প্রবেশ করে আবারও ৫ম দফা আকস্মিক বন্যা দেখা দিয়েছে। বন্যার পানিতে তলিয়ে বাড়ি-ঘর, ধান সহ সবজী ক্ষেতের ব্যপক ক্ষতি হয়েছে। পানি বন্ধি হয়ে পড়েছে দুই উপজেলার ৩০ গ্রামের প্রায় ৪৫ হাজার মানুষ। বাড়ি-ঘড় তলিয়ে যাওয়ায় আশ্রয় নিয়েছেন অনেকেই উঁচু স্থানে।
স্থানীয় নদী ও হাওরগুলোতে হঠাৎ পানি বেড়ে তীরবর্তী এলাকার ক্ষেতকৃষি আবারও গ্রাস করেছে বন্যা। হঠাৎ এমন আকস্মিক বন্যায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে আগাম শীতকালী সবজি ও আমন ধানের। তাছাড়া শীতকালীন সবজির জন্য প্রস্তুতকৃত জমি টানা দুদিনের বৃষ্টির পানি ডুবিয়ে দিয়েছে। এবছর বার বার বন্যা আর অতিবৃষ্টির কারনে ব্যাপক ফসল হানিতে দিশেহারা জেলার কৃষককূল।
জানা যায়, টানা ভারী বৃষ্টিতে মনু নদীর দুটি স্থানে প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙ্গে কুলাউড়া উপজেলার শরীফপুরে চাতলা সেতু সংলগ্ন এলাকা এবং উপজেলার টিলাগাও এলাকায় আরও একটি বাঁধ ভেঙ্গে দ্রæত গতিতে ঢলের পানি প্রবেশ করে ফসলি জমি ও নদী তীরবর্তী কয়েকটি গ্রাম নিমজ্জিত করছে। হঠাৎ নতুন করে মনু নদীর তীরবর্তী কুলাউড়া উপজেলার শরীফপুর, টিলাগাও ও হাজিপুর ইউনিয়নের প্রায় ১৬টি গ্রামের প্রায় ২৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। শরীফপুর ইউনিয়নের কালারায়েরচর, ইটারঘাট ও চারিয়ারঘাট এই তিনটি গ্রামের লোকজন ঘরবাড়ি ছেড়ে এখন আশ্রয় নিয়েছেন বেড়িবাধঁ এলাকায়। এই তিনটি গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে হানা দিয়েছে বানের পানি। ইতিমধ্যেই বানের পানির ¯্রােতের তোড়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে চাতলাপুর সেতুর। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন বৃষ্টি আর এরকম ¯্রােত অব্যাহত থাকলে সেতুটির বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারে এমন আশংকায় উদ্বিগ্ন তারা।
কুলাউড়া উপজেলা চেয়ারম্যান আ.স.ম.কামরুল ইসলাম বিকেলে মুঠোফোনে রিপোর্টারকে জানান, কুলাউড়া উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নের চাতলাপুর বিজিবি ক্যাম্প সংলগ্ন মনু নদের বাঁধ ভেঙ্গে দ্রæত ঢলের পানি প্রবেশ করে তার ইউনিয়নের প্রায় ১০টি গ্রাম বন্যা আক্রান্ত হয়েছে। ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ ৩টি গ্রামের লোকজন ইতিমধ্যে বেড়ি বাধে আশ্রয় নিয়েছেন।
কুলাউড়া উপজেলার টিলাগাও ইউনিয়নের আশ্রয় গ্রাম এলাকায় মনু প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙ্গে ইতিমধ্যেই ইউছুব পুর, বালিয়া, চানপুর আংশিকসহ প্রায় ৬ টি গ্রামে পানি প্রবেশ করেছ। একই ভাবে বানের পানি প্রবেশ করছে হাজিপুর ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামেও। এদিকে কমলগঞ্জ পৌরসভার আলেপুর গ্রামের ও আদমপুর ইউনিয়নের বনগাঁও গ্রামের নতুন ভাঙ্গন এবং ইসলামপুর ইউনিয়নের শ্রীপুর, মাধবপুর ইউনিয়নের শিমুলতলা,বাঘবাড়ি, গোবিন্দ বাড়ি ও মাঝেরগাঁও ও কমলগঞ্জ সদর ইউনিয়নের চৈতন্যগঞ্জ গ্রাম এলাকার ধলাই প্রতিরক্ষা বাঁধের পুরাতন ভাঙ্গন দিয়ে নেমে আসা উজানের ঢলের পানি প্রবেশ করে ১৪ টি গ্রামের ২০ হাজার মানুষ পানিবন্ধি হয়ে পড়েছে। এ সব এলাকার ফসলি জমি ও গ্রাম্য রাস্তা নিমজ্জিত করে। ক্ষতিগ্রস্থ গ্রামগলো হচ্ছে ইসলামপুর ইউনিয়নের কালারায় বিল, শ্রীপুর, পাথারী গাঁও, কানাইদাশী। কমলগঞ্জ সদর ইউনিয়নের চৈতন্যগঞ্জ, নারায়নপুর। মাধবপুর ইউনিয়নের শিমুলতলা, মাছেল গাঁও। কমলগঞ্জ পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের কুশালপুর, আলেপুর ও দক্ষিণ কুমড়া কাপন, পতনউষার ইউনিয়নের কেওলার হাওর, মুন্সীবাজার ইউনিয়নের রুপশপুর, শমশেরনগর ইউনিয়নের শিরাউলী।
কমলগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসের সহকারী উপজেলা কৃষি অফিসার পূর্ণ কুমার সিংহ বলেন, প্লাবনের পানিতে ইসলামপুর ইউনিয়নে ২০০ হেক্টর জমির রোপিত আমন ফসল নিমজ্জিত হয়েছে। শ্রীপুর এলাকার ধলাই নদের পুরাতন ভাঙ্গন দিয়ে দ্রæত ঢলের পানি প্রবেশ করছে গ্রামে। কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাহমুদুল হক দুই দিনের টানা বৃষ্টিতে উজান থেকে নেমে আসা ভারতীয় ঢলের পানিতে কমলগঞ্জে নদী ও পাহাড়ি ছড়ার পানি বৃদ্ধি পেয়ে এবং ধলাই নদের প্রতিরক্ষা বাঁধের নতুন ও পুরাতন ভাঙ্গন দিয়ে পানি প্রবেশ করে গ্রাম্য রাস্তা ও জমির আমন ফসল নিমজ্জিত হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।