পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পদ্মা সেতু এখন দৃশ্যমান। সোয়া কোটি টাকারও বেশি ব্যয়ে খুলনার দু’টি গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের বাস্তবায়ন হচ্ছে। উন্নয়নের পূর্বশর্ত মংলা বন্দরে ক্রমেই গতিশীলতা আসছে। খুলনার দু’টি উপজেলা এখন ঘোষিত অর্থনৈতিক জোন। খুলনা মংলা রেললাইনের কাজ চলছে দ্রæত। আর আধুনিক রেলস্টেশন উদ্বোধনের অপেক্ষায়। খুলনা সাতক্ষীরা শ্যামনগর সুন্দরবন সড়ক এবং খুলনা নলিয়ন সুন্দরবন সড়ক নির্মাণের মাধ্যমে পর্যটন শিল্পকে চাঙ্গা করা হচ্ছে। সব মিলিয়ে বৃহত্তর খুলনাঞ্চল আবারও ঐতিহ্যবাহী শিল্প ও বাণিজ্যের সম্ভাবনাময় জোন হিসেবে নয়া রূপে আত্মপ্রকাশ করছে। বিনিয়োগকারীরা আবারও ফিরে আসছে এ অঞ্চলে। এ জনপদ এখন পদ্মার এপারের এক সম্ভাবনাময় বাণিজ্যের নতুন চালিকা শক্তি। মরা গাছে ফুল ফোটার মতই ভঙ্গুর অর্থনীতি যেন প্রাণ ফিরে পাচ্ছে। পদ্মা সেতুর সফল বাস্তবায়নে এ অঞ্চল হয়ে উঠবে ফুলে ফলে সুশোভিত। এমন ভবিষ্যত বাণী করছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা।
সূত্রমতে, বৃহত্তর খুলনাঞ্চল বিগত বিভিন্ন সরকারের আমলে বিমাতাসুলভ আচারণের শিকার। পাট শিল্প ও শিল্প কারখানা অধ্যুষিত এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক মেরুদন্ড বিভিন্ন সময়ে পরিকল্পিতভাবে ভেঙে দেয়া হয়। গত এক যুগে একের পর এক শিল্প কল কারখানা বন্ধ হতে থাকে। শিল্প সেক্টরে শুরু হয় নৈরাজ্য। কিন্তু বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসে মৃত অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার চেষ্টা চালাচ্ছে। যদিও আমজনতার প্রাপ্তি যথেষ্ট নয়। তথাপি পদ্মাসেতু এখন সূর্যের মত বঞ্চিত এই জনপদকে আলোকবর্তিকা ছড়ানোর অপেক্ষায় যেন অপেক্ষমাণ। খুলনায় দুইটি সংযোগ সড়ক (নিরালা এভিনিউ ও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় এভিনিউ) নির্মাণ প্রকল্পে ১২৮ কোটি ৫৪ লাখ টাকার প্রকল্পটি সম্প্রতি একনেকে অনুমোদন দেয়া হয়।
এ সম্পর্কে একনেকের সভায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন খুলনা শহর যেহেতু দিন দিন বড় হচ্ছে সে জন্য পুরো শহরকে সংযোগ সড়ক প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে। আর উন্নয়নের পূর্বশর্ত মংলাবন্দর ফুলে ফলে সুশোভিত হবে এমন প্রায়সই চলছে। নেপাল ও ভুটান মংলাবন্দর ব্যবহারের মাধ্যমে রেলযোগে পণ্য আমদানি ও রফতানি করতে পারবে। সে লক্ষে শিগগিরি ভারত বাংলাদেশের যৌথ বিনিয়োগে খুলনা-মংলা রেল লাইন নির্মাণ কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হচ্ছে। অন্যদিকে দ্রæতগতিতে চলছে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ। খুলনার বটিয়াঘাটা ও তেরখাদার দু’টি এলাকাকে অর্থনৈতিক জোন হিসেবে ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন। সে লক্ষ্যে কাজও চলছে দ্রæত। এছাড়া শেষ পর্যায়ে খুলনার আধুনিক রেলস্টেশনের নির্মাণ কাজ। স¤প্রতি খুলনায় সফরকালে শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতলকে দ্রæত পূর্ণতা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। সাথে সাথে এগিয়ে চলছে ওয়াসার আড়াই হাজার কোটি টাকার কাজ। যার ফলে খুলনাঞ্চলের মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে যাবে পানি। সবমিলিয়ে খুলনার ভঙ্গুর অর্থনীতি পুনরুজ্জীবিত হচ্ছে।
সূত্রমতে, খুলনার অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে পদ্মা সেতু হবে ভবিষ্যতের মাইলফলক। সেতুর কাজ এখন দৃশমান। ফলে ব্যবসায়ীদের মনে আশার সঞ্চার হয়েছে। নতুন নতুন শিল্প প্রতিষ্ঠান নির্মাণে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ দেখাচ্ছে। খুলনা মংলা রেল লাইন প্রকল্পের কাজ যাতে যথাসময়ে সমাপ্ত হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখে প্রকল্পকে ৩ ভাগে ভাগ করা হয়েছে। একটি কাজ করতে গিয়ে অন্যটির যাতে কোন ক্ষতি না হয় কিম্বা অযথা সময়ক্ষেপণ না হয় সে দিকটি মাথায় রেখেছে প্রকৌশলীরা। রেল সেতু, রেল লাইন এবং টেলিকমিউনিকেশন ও সিগন্যালিং এই তিনভাগে বিভক্ত করে প্রায় ৭৫০ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। শুধুমাত্র খুলনা থেকেই ৪০১ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া মংলাবন্দর কর্তৃপক্ষের ৭৩ একর এবং বাগেরহাট জেলা থেকে ২৭৫ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়। এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে খুলনা মহানগরীর যানজট অনেকাংশে কমে যাবে। পাশাপাশি যখন পদ্মা সেতুর সফল বাস্তবায়ন হবে তখন এই রেললাইনকে ঘিরে এ অঞ্চল হয়ে উঠবে গুরুত্বপূর্ণ ইকনোমিক জোন।
এদিকে, এক সময়কার শিল্প ও বন্দর নগরী বলে খ্যাত খুলনার জৌলুষ ফিরিয়ে আনতে খুলনায় দু’টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)। বিশেষজ্ঞরা বলছেন এ দু’টি অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিকল্পিতভাবে পরিচালিত করতে পারলে তা আঞ্চলিক ও জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। বেজা এ লক্ষ্যে খুলনার বটিয়াঘাটার তেঁতুলতলা এবং তেরখাদার কোলাকে বেছে নিয়েছে। রফতানি আয় বৃদ্ধি এবং নতুন বিনিয়োগ ছাড়াও এই অঞ্চলে কর্মসংস্থান সৃষ্টিতেও বিশেষ ভূমিকা রাখবে। আর এর সাথে যুক্ত হবে আশীর্বাদ হিসেবে পদ্মা সেতু।
এছাড়া, খুলনার বাগেরহাটে রামপাল উপজেলার ফয়লাহাটে নির্মাণাধীন খানজাহান আলী বিমান বন্দরের উন্নয়ন কাজ শেষ হলে দেশের দ্বিতীয় সমুদ্র বন্দর মংলার উন্নয়নের পাশাপাশি ঘুরে দাঁড়াবে দক্ষিণাঞ্চলসহ দেশের অর্থনীতির চাকা। মংলা বন্দরসহ সারা বছরই গোটা সুন্দরবনও থাকবে দেশি-বিদেশি পর্যটককে মুখরিত। পর্যটন খাতে প্রতিবছর প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আয় হবে জানান এখাতের সাথে সংশ্লিষ্টরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।