নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
স্পোর্টস রিপোর্টার
৫০ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকা ২২৫, কোন উইকেট না হারিয়ে। দুই ওপেনার সেঞ্চুরির পর তখনও ঠাঁয় দাঁড়িয়ে- এলগার ১১০, মার্করাম ১০৮। রান রেট পাঁচের কোঠায়, ৪.৫৩। এটুকু দেখে অনেকেই ভাবতে পারেন কোন ওয়ানডে ম্যাচের পরিসংখ্যান এটি। ভুলটা ভাঙাতে জানিয়ে রাখি গতকাল বøুমফন্টেইনে শুরু হওয়া বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকার ২য় টেস্টের প্রথম দিনের খÐচিত্র এটি!
একটি পরিবর্তন নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল আগেই। চোটের কারণে ছিটকে গেছেন তামিম ইকবাল। তার বদলে চোট কাটিয়ে ফিরছেন সৌম্য সরকার। বাকি তিনটি পরিবর্তন বোলিং লাইনআপে। প্রথম ম্যাচে বোলারদের বিবর্ণ চেহারা ও প্রকাশ্যে অধিনায়কের কড়া সমালোচনার পর পরির্বতনগুলো অনুমিতই ছিল। প্রথম টেস্টে বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে উজ্জ্বল মুস্তাফিজুর রহমান টিকে গেছেন। বদল এসেছে বাকি তিন বোলারে। জায়গা হারিয়েছে তাসকিন আহমেদ, শফিউল ইসলাম ও মেহেদী হাসান মিরাজ। দলে এসেছেন রুবেল হোসেন, শুভাশিস রায় ও তাইজুল ইসলাম। ২৪ টেস্টে ৭৭.৯৩ গড়ে ৩২ উইকেট নেওয়া রুবেলের জন্য সুযোগ নিজের টেস্ট ক্যারিয়ারে নতুন দম দেওয়ার।
পেসারদের সুবিধার কথা চিন্তা করে পচেফস্ট্রুমের মত এদিনও টস জিতে ফিল্ডিংয়ে মুশফিকুর রহিম। সেদিনের মত এদিনও দুঃস্বপ্নের এক দিন কাটালো বাংলাদেশের বোলাররা, মোটা দাগে বলতে গেলে পেসাররা। ১০ ওভারের বেশি বল করে মুস্তাফিজ, শুভাশিষ, রুবেলরা যেখানে রান দিয়েছেন পাঁচ ছাড়িয়ে, সেখানে চিত্রটা একটু পাল্টালেন কেবল স্পিনার মাহমুদউল্লাহ! ৫ ওভার হাত ঘুরিয়ে দুটি মেইডেনসহ রান দিয়েছেন ‘মাত্র’ ১৪! দিনের শুরুতে যেখানে পেসারদের সুবিধা পাওয়ার স্তুতি শোনা গিয়েছিল, সেটি হলো দিনের শেষে। শুভাশিষ-রুবেলের আঘাতে পর পর তিন রান হারিয়ে ওয়ানডে মেজাজে খেলা প্রোটিয়াদের লাগাম কিছুটা সময় টেনে ধরতে পেরেছিল বাংলাদেশ। তবে দিন শেষে আবারও বড় সংগ্রহের পথ দেখাচ্ছে আমলা-ডু প্লেসির ব্যাট। তিন উইকেট হারানো দক্ষিণ আফ্রিকার সংগ্রহ ৪২৮। অধিনায়ক ডু প্লেসিকে (৬২) নিয়ে ৪র্থ জুটিকে এগিয়ে নিচ্ছেন আমলা (৮৯)।
দিনের প্রায় পুরোটা সময় যখন হাপিত্যেশ করে মরছে বাংলাদেশের বোলিং লাইনআপ তখনই একমাত্র প্রাপ্তিযোগ ডিন এলগারের উইকেটটি। শুভাশিষের বলে বাউন্ডারি লাইন থেকে ঝাঁপিয়ে পড়া মুস্তাফিজের ক্যাচে পরিণত হবার আগে প্রথম টেস্টে মাত্র এক রানে ডাবলের স্বপ্নপূরণ না হওয়া এই ওপেনার থেমেছেন ১১৩ রানে। ১৭ চার মেরে এলগারের আউটে ভাঙল ২৪৩ রানের উদ্বোধনী জুটি। বাংলাদেশের বিপক্ষে যা তৃতীয় সর্বোচ্চ।
এর মাঝে এ বছর প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করে ফেলেন এই প্রোটিয়া। ব্যক্তিগত ১৬ রানের মাথায় ছুঁয়ে ফেলেন টেস্টে হাজার রান। ৮৫১ রান নিয়ে দুইয়ে ভারতের চেতেশ্বর পুজারা। হাশিম আমলা এই টেস্ট শুরু কছেন ৮১০ রান নিয়ে। চা বিরতির আগে আরও একটি উইকেটের সম্ভাবনা জাগিয়েছিল বাংলাদেশ। রিভিউ নেওয়া হয়েছিল আমলার বিরুদ্ধে। তবে শুভাশিসের বলটি পিচ করেছিল অফ স্টাম্পের বাইরে। প্রথম সেশনের তুলনায় তবু খানিকটা স্বস্তিতে শেষ হয়েছে দ্বিতীয় সেশন। ভাঙন ধরানো গেছে উদ্বোধনী জুটিতে। রানের চাকা অবশ্য ঘুরছে বেশ গতিতে। প্রথম সেশনে ২৯ ওভারে উঠেছিল ১২৬ রান, দ্বিতীয় সেশনে ২৭ ওভারে ১৩০।
ফিরে এসেই অপেক্ষা ফুরালো রুবেলেরও। দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে এইডেন মারক্রামকে বোল্ড করেন এই পেসার। ওভরের প্রথম তিন ডেলিভারিই রুবেল করেছিলেন শর্ট বল। পেছনের পায়ে যেতে বাধ্য করেছিলেন মার্করামকে। এরপর দারুণ এক ইয়র্কার। শেষ মুহূর্তে একটু রিভার্স সুইং করে বল ঢোকে ভেতরে। ১৪০.২ কিলোমিটার গতির ডেলিভারিতে উড়ল মার্করামের মিডল স্টাম্প। ততক্ষণে নামের পাশে যোগ হয়েছে ২২ চারের ঝলমলে ১৪৩ রানের এক ইনিংস। রুবেলের উইকেট যেন আরেকটু তাতিয়ে দিয়েছিল শুভাশিষকে। আগের ওভারেই অফ স্টাম্পের বাইরের বলে দারুণ এক কাট শটে চার মেরেছিলেন রুবেলকে। শুভাশিসকেও একই চেষ্টায় আউট হলেন টেম্বা বাভুমা (৭)। ফূল লেংথ বল করার পরই শর্ট অফ লেথ করেছিলেন শুভাশিস। স্টাম্পের বাইরে, তবে একটু বাড়তি বাউন্স। তাতেই সর্বনাশ বাভুমার। ব্যাটের কানা ছুঁয়ে উইকেটকিপার লিটন দাসের হাতে ক্যাচ। দিনের প্রাপ্তি ঐ পর্যন্তই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।