Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

লাশ নিয়ে রাজনীতি করছে মিয়ানমার : এইচআরডব্লিউ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মিয়ানমারের রাখাইনে চলমান সহিংসতায় নতুন মাত্রা পেয়েছে হিন্দু গণকবরে ৪৫টি লাশ পাওয়ার পর। মিয়ানমার সরকার ও সেনাবাহিনীর দাবি, আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) এই হিন্দুদের হত্যা করেছে। সরকারের তথ্য কমিটির সরবরাহকৃত ছবিতে দেখা যায়, গণকবরের পাশে লাশগুলো সারিবদ্ধভাবে রাখা হয়েছে।
মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে ধারাবাহিকভাবে প্রচারিত হচ্ছে সেইসব ছবি। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ একে দেখছে লাশের রাজনীতি হিসেবে। তারা বলছে, এ ঘটনায় আরসার ওপর দোষ চাপানো রোহিঙ্গাদের ওপর সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের সুষ্ঠু তদন্তে অনীহার বহিঃপ্রকাশ। গ রোববার রোহিঙ্গা অধ্যুষিত রাখাইন রাজ্যে এক হিন্দু গণকবরের সন্ধান পাওয়ার দাবি করেছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। তাদের দাবি, ওই গণকবরে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ২৮টি লাশ পাওয়া গেছে। পরদিন এক নতুন গণকবরে আরও ১৭ জন হিন্দু রোহিঙ্গার লাশ পাওয়ার দাবি করেছে মিয়ানমার সরকার। সেনাবাহিনী এই ঘটনায় আরাকান আর্মিকে (এআরএসএ) দায়ী করছে। তবে সংগঠনটি তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ নাকচ করে বলছে, এটি মিয়ানমারের উগ্র বৌদ্ধ জাতীয়তাবাদীদের ‘মিথ্যাচার’। এদিকে রাখাইনে সাংবাদিক প্রবেশে বাধানিষেধ থাকায় কোনও সংবাদমাধ্যমের পক্ষে স্বাধীনভাবে এর যাচাইবাছাই করা যায়নি।
তবে বুধবার সেনাবাহিনী ইয়াঙ্গুন থেকে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের কথিত হিন্দুদের গণকবর পরিদর্শনে নিয়ে যায়। রোববার গণকবরের সন্ধান পেলেও বুধবার পর্যন্ত সেগুলোর শেষকৃত্য শেষ করা হয়নি। লাশগুলো গণকবরের পাশে সারিবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। সারিবদ্ধ লাশের ছবি ও ভিডিও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে প্রচারিত হচ্ছে।
গতকাল এক বিবৃতিতে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলছে, আরসার ওপর হিন্দুদের হত্যার দায় চাপিয়ে সরকার বিপুল পরিমাণ রোহিঙ্গা নিধন সংক্রান্ত ঘটনার যথাযথ তদন্তে নিজেদের অনাগ্রহকেই প্রকাশ করেছে।
বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের পোড়া কিংবা ছুরি-বন্দুক কিংবা অন্য কিছু দিয়ে ভয়ঙ্কর জখম করা দেহ, তাদের ওপর যৌন সহিংসতার আলামত বিশ্লেষণ করে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এরইমধ্যে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমারের মানবতোবিরোধী অপরাধ সংঘটনের অভিযোগ এনেছে।
মিয়ানমারকে বার্মা নামে সম্বোধন করে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সরকারের উচিত এর সংখ্যাগরিষ্ঠ বৌদ্ধ জনতার পাশাপাশি হিন্দু-মুসলিমদেরও সুরক্ষা নিশ্চিত করা। নিরাপত্তাজনিত হুমকি মোকাবিলা করা সরকারের দায়িত্ব বটে। তবে আইনের শাসনের সীমার মধ্যে থেকেই তা করা উচিত।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ-এর দাবি, মিয়ানমারের লাশ নিয়ে রাজনীতি বন্ধ করা উচিত। সামরিক নৃশংসতার অবসান ঘটিয়ে জাতিসংঘের তদন্ত দলকে রাখাইনে প্রবেশ করতে দেওয়া উচিত যেন সব ধরনের অপরাধের যথাযথ তদন্ত করা যায়।
হিন্দুদের হত্যার ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছে আরকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (এআরএসএ)। তাদের দাবি, তারা বেসামরিকদের ওপর কোনও হামলা চালায় না এবং কোনও হিন্দুকেও হত্যাও করেনি। সূত্র : ওয়েবসাইট।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: এইচআরডব্লিউ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ