পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির সদস্য এবং সাবেক অর্থমন্ত্রী যশোবন্ত সিনহা
বলেছেন, অর্থমন্ত্রী অরুন জেটলি অর্থনীতির যে বারোটা বাজিয়েছেন, তা নিয়ে এখনো যদি আমি কথা না বলি, তবে আমি আমার জাতীয় কর্তব্য পালন করতে পারব না। এটাও বুঝতে পেরেছি, আমি যা বলতে চাচ্ছি তা বিজেপি এবং অন্যান্য স্থানের বিপুল সংখ্যক লোকের ভাবাবেগ। তবে ওইসব লোক ভয়ে কথাগুলো প্রকাশ করতে পারছে না। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে প্রকাশিত এক নিবন্ধে এসব কথা বলেন যশোবন্ত। অরুন জেটলি এই সরকারের সেরা ও উজ্জ্বলতম হিসেবে বিবেচিত।
২০১৪ সালের নির্বাচনের আগেই জানা গিয়েছিল, তিনি নতুন সরকারের অর্থমন্ত্রী হতে চলেছেন। তবে অমৃতসরে লোকসভা নির্বাচনে তার পরাজয় এই নিযুক্তির পথে বাধা সৃষ্টির কথা ছিল। এ প্রসঙ্গে অটল বিহারি বাজপেয়ীর আমলেও একই ধরনের পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করা যায়। দলে তার ঘনিষ্ঠ সহকর্মী যশোবন্ত সিং এবং প্রমোদ মহাজনকে ১৯৯৮ সালে মন্ত্রিসভায় স্থান দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন। কিন্তু তাকে বেসরকারিকরণ বিভাগসহ অর্থমন্ত্রণালয়ের সাথে প্রতিরক্ষা ও সমবায়বিষয়ক মন্ত্রিত্ব প্রদান করায় তার অপরিহার্যতা আরো প্রবলভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়। চারটি মন্ত্রণালয় ছিল একজনের হাতে। তিনি এগুলোর তিনটি এখনো ধরে রেখেছেন। আমি অর্থ মন্ত্রণালয় চালিয়েছি। তাই জানি, এই একটি মন্ত্রণালয় চালানো কত কঠিন কাজ। সুসময়েও দায়িত্বটি যথাযথভাবে পালন করার জন্য সার্বক্ষণিক মনোযোগের দরকার হয়। আর কঠিন সময়ে এটা ২৪ ঘণ্টার চেয়ে বেশি সময়ের দরকার হয়। স্বাভাবিকভাবেই জেটলির মতো সুপারম্যান তার দায়িত্বের প্রতি সুবিচার করতে পারছেন না। শুরুতে জেটলি ছিলেন সৌভাগ্যবান অর্থমন্ত্রী, স্বাধীনতা-পরবর্তী যেকোনো অর্থমন্ত্রীর চেয়ে ভাগ্যবান। বিশ্ববাজারে তেলের দাম পড়ে যাওয়ায় কোটি কোটি টাকা বেঁচে গিয়েছিল। এই অকল্পনীয় পরিমাণ অর্থ সৃষ্টিশীল উপায়ে ব্যবহার করা যেতে পারত। স্থবির হয়ে থাকা বিভিন্ন প্রকল্প এবং ব্যাংক এনপিএ সন্দেহাতীতভাবে এই সুযোগে আরো ভালোভাবে ব্যবস্থাপনা করা যেত। তেলের দাম কমার এই সুযোগটি নষ্ট করা হয়েছে। আগে থেকে স্তুপ হয়ে থাকা সমস্যাগুলো আর সমাধান হয়নি, সেগুলোর অবস্থা আরো খারাপ হয়েছে। তাহলে ভারতীয় অর্থনীতির বর্তমান চিত্রটি কেমন? বেসরকারি বিনিয়োগ এমনই সঙ্কুচিত হয়ে পড়েছে, যা গত দুই দশকেও দেখা যায়নি। শিল্প উৎপাদন পুরোপুরি ধসে পড়েছে, কৃষি খাত বিপর্যয়ে, শ্রমশক্তির বিরাট খাত নির্মাণশিল্প নির্জীব হয়ে পড়েছে, বাকি পরিষেবা খাতও মন্থরভাবে চলছে, রফতানি কমছে, অর্থনীতির খাতের পর খাত মুখ থুবড়ে পড়ছে। নোট বাতিলকরণ অপ্রশমনযোগ্য অর্থনৈতিক দুর্ভোগের সৃষ্টি করেছে। বাজে ধারণাপ্রসূত ও ত্রুটিপূর্ণভাবে বাস্তবায়িত জিএসটি ব্যবসায়ে মারাত্মক ক্ষতির কারণ হয়েছে, কোটি কোটি লোক চাকরি হারিয়েছে, শ্রম বাজারে নতুন প্রতিষ্ঠান আগমনের সুযোগ কঠিন করে তোলা হয়েছে। কোয়ার্টারের পর কোয়ার্টার ধরে প্রবৃদ্ধি কমতে কমতে চলতি অর্থবছরের প্রথম কোয়ার্টারে ৫.৭ ভাগে নেমে এসেছে। গত তিন বছরে এটাই সর্বনিম্ন। সরকারের মুখপাত্ররা বলছে, এই পতনের জন্য নোটবাতিলকরণ দায়ী নয়। তারা ঠিক কথাই বলছে। পতন শুরু হয়েছে আরো আগে। নোটবাতিলকরণ কেবল আগুনে আরো জ্বালানির ব্যবস্থা করেছে। আরেকটি বিষয় মনে রাখবেন, জিডিপি হিসাবের পদ্ধতি বর্তমান সরকার ২০১৫ সালে পরিবর্তন করেছে। এর ফলে বার্ষিক ভিত্তিতে প্রবৃদ্ধি হার পরিসংখ্যানের আলোকে আগের চেয়ে ২০০ ভাগের বেশি বেড়ে গেছে। আগের হিসাবে করা হলে বর্তমানের ৫.৭ ভাগ প্রবৃদ্ধি দাঁড়াত মাত্র ৩.৭ ভাগ কিংবা এর চেয়েও কম। এমনকি ভারতের বৃহত্তম সরকারি খাতের ব্যাংক এসবিআই সাধারণ নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়ে বলেছে, স্থবিরতা অস্থায়ী বা ‘টেকনিক্যাল’ নয়, বরং তা থেকে যাবে এবং চাহিদার মন্থরতা পরিস্থিতির আরো অবনতি ঘটাচ্ছে। মাত্র কয়েক দিন আগে বিজেপি সভাপতির ‘টেকনিক্যাল’ কারণে স্থবিরতার সৃষ্টি হয়েছে এবং শিগগিরই এর অবসান হবে বলে যে মন্তব্য করেছিলেন, এই বক্তব্য তার বিপরীত। এসবিআইয়ের চেয়ারম্যানের ভাষ্যানুযায়ী, বিপাকে পড়া খাতগুলোতে নতুনভাবে যুক্ত হওয়া খাত হলো টেলিকম খাত। এই পতন হঠাৎ করে সৃষ্টি হয়নি। সমস্যা পঞ্জীভূত হওয়ার সুযোগ দেয়া হয়েছে। তার ফলেই এই সঙ্কটের সৃষ্টি হয়েছে। সমস্যাগুলো অনুমান করে সেগুলো সুরাহা করার ব্যবস্থা গ্রহণ কঠিন ছিল না। তবে সেজন্য দরকার ছিল কাজে মনোযোগী হওয়া, গুরুত্ব অনুধাবন করে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং পরিকল্পনা অনুযায়ী সমাধানের দিকে এগুনো। এত বেশি অতিরিক্ত দায়দায়িত্ব বহনকারী লোকের কাছ থেকে এমনটা প্রত্যাশা করা ঠিক নয়। এতে কী ফল হয়েছে, তা সবাই দেখতে পাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী উদ্বিগ্ন। অর্থমন্ত্রী এবং তার কর্মকর্তাদের সাথে প্রধানমন্ত্রীর ডাকা একটি বৈঠক অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। প্রবৃদ্ধি চাঙ্গা করার জন্য একটি প্যাকেজের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। আমরা দম বন্ধ করে ওই প্যাকেজের অপেক্ষা করছিলাম। তবে এখন পর্যন্ত তা আসেনি। একমাত্র যে জিনিসটির আবির্ভাব ঘটেছে তা হলো প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা পরিষদের পুনর্গঠন। পঞ্চ পান্ডবের মতো তারা আমাদের হয়ে নতুন মহাভারত যুদ্ধ জয় করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। চলতি বছরের বর্ষার পরিস্থিতিও ভালো ছিল না। অতিবর্ষণ গ্রামীণ সমস্যা তীব্র করেছে। কৃষকরা ব্যাপক ঋণ মওকুফ সুবিধা পাচ্ছে। কোনো কোনো রাজ্য এক পয়সা থেকে কয়েক রুপি পর্যন্ত ছাড় দিচ্ছে। দেশের শীর্ষস্থানীয় ৪০টি কোম্পানি দেউলিয়া হওয়ার প্রক্রিয়ায় রয়েছে। আরো কয়েকটি এই তালিকায় যুক্ত হতে পারে। এসএমই খাত নজিরবিহীন অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়েছে। জিএসটি বেশ বড় ধরনের সমস্যায় ফেলেছে। যারা বড় সমস্যার দাবি করেছে, তাদের পেছনে লাগার জন্য আয়কর বিভাগকে বলেছে সরকার। অর্থনীতি নির্মাণের চেয়ে অনেক সহজে ধ্বংস করা হয়েছে। ’৯০-এর দশকের শেষ দিকে এবং ২০০০-এর প্রথম দিকে চার বছরের অনেক যন্ত্রণা ও কঠোর পরিশ্রমে আমরা ১৯৯৮ সালে যে অর্থনীতি পেয়েছিলাম, সেটিকে চাঙ্গা করেছিলাম। কারো কাছেই এমন কোনো জাদুর কাঠি নেই, যার বলে রাতারাতি অর্থনীতিকে উন্নত করে ফেলবে। এখন পদক্ষেপ নিয়ে ফল ফলতে নির্ধারিত সময় নেবে। ফলে পরবর্তী লোকসভা নির্বাচনের আগে অর্থনীতি চাঙ্গা করার সম্ভাবনা একেবারেই ক্ষীণ। নির্বাচনে জয়ের জন্য ফাঁকা বুলি বেশ কাজে দেয়, কিন্তু বাস্তবতার মুখে সেটা হাওয়া হয়ে যায়। প্রধানমন্ত্রী দাবি করেছেন, তিনি খুব কাছ থেকে দারিদ্র্য দেখেছেন। ভারতের সব লোকও যাতে একই রকমভাবে খুব কাছ থেকে সেটা দেখতে পায়, তা নিশ্চিত করার জন্য তার অর্থমন্ত্রীও সর্বক্ষণ অতিরিক্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।