পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
‘তোয়ারা তোয়ারার কাজ গরো, আই অ্যার গিন গরি (তোমরা তোমাদের কাজ করো, আমি আমারটা করি)’। গতকাল (শনিবার) সকালে বন্দরনগরীর প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী ডিসি হিল পার্কে ঝাড়– দিয়ে ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার করার সময় উৎসুক জনতা ভিড় করলে তাদের উদ্দেশে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় একথা বলেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য চট্টগ্রামের প্রবীণ রাজনীতিবিদ ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন।
নগরীর নন্দনকাননে মন্ত্রীর নিজ বাসভবনের অনতিদূরে ডিসি হিল পার্ক (নজরুল স্কোয়ার)। এটি নগরীর কেন্দ্রে বিনোদনের একমাত্র ঠিকানা। সকাল সোয়া ৮টা থেকে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত সোয়া এক ঘণ্টা ঝাড়– হাতে নিয়ে ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার করেন পূর্তমন্ত্রী মোশাররফ হোসেন। সকালে প্রাতঃভ্রমণ ও ইয়োগা অনুশীলন করা মানুষদের সংগঠন ‘ইয়োগা প্রভাতী’ ডিসি হিল প্রাঙ্গণ পরিষ্কারের উদ্যোগ নেয়। ‘পরিচ্ছন্নতা নিজেরাই করি, কারও জন্য অপেক্ষা নয়’ শীর্ষক এ উদ্যোগে গভীর আন্তরিকতা নিয়ে সাধারণের কাতারে সামিল হন মন্ত্রী মোশাররফ হোসেন। টি-শার্ট, সাদা ট্রাউজার পরিহিত হাতে গøাভসে মুড়িয়ে মন্ত্রী যখন ঝাড়– হাতে নিলেন তখন সূর্য ত্বকপোড়া রোদ ছড়াতে থাকে। গরমে কাজ করায় মন্ত্রীর কপাল বেয়ে অনবরত ঘাম ঝরতে থাকে। তাতেও তিনি দমেননি। রুমাল দিয়ে ঘাম মুছে আবারও ঝাড়– দিয়ে ময়লা পরিষ্কার করতে থাকেন। এ সময় উৎসুক জনতা তার চারপাশে ভিড় করলে তিনি চরম অস্বস্তিবোধ করেন। ক্যামেরার ল্যান্স যখন বারবার তার দিকে তাক করা হচ্ছিল তখন মন্ত্রীর সরল জবাব- ‘ছবি তোলার জন্য আসিনি।’ কাজের ফাঁকে দু’একটা ফোন আসলে মন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী মোবাইল ফোনটা ধরিয়ে দিতেই হাসিমুখে উত্তর দেন আমি এখন সুইপার হয়ে গেছি। সিটি কর্পোরেশনের হয়ে বিনা বেতনে পরিচ্ছন্নতার কাজ করছি। পরে কথা বলবো বলে মোবাইল রেখে দেন। দৃষ্টিনন্দন ও আধুনিক ডিসি হিল পার্ক ঢেলে সাজাতে অতীতে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের অবদান ছিল।
‘প্রভাতী’র ৮১ জন সদস্য ছাড়াও এ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযানে অংশ নেন বেশ কিছু শ্রমিক। ডিসি হিলের দক্ষিণপ্রান্তে বসার জন্য তৈরি সিঁড়ি থেকে কাজ শুরু করেন মন্ত্রী ও অন্যরা। প্রায় এক ঘণ্টা কাজ শেষে উত্তরপ্রান্তের সিঁড়ি পর্যন্ত পরিষ্কার করেন তারা। মন্ত্রী ঢাকায় নিয়মিত প্রাতঃভ্রমণে বের হন রমনা পার্কে। চট্টগ্রাম আসলে ডিসি হিলই তার প্রিয় ঠিকানা। কর্মসূচির শুরুতে একথা বলেন ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। মন্ত্রী বলেন, ২০০১ সালে আমি এখানে হাঁটার জন্য পার্ক করার উদ্যোগ নিই। সেসময় বিভিন্ন জায়গা থেকে অভিযোগ আসছিল। প্রধানমন্ত্রীও আমাকে ফোন করে জানতে চাইলেন-ডিসি হিলে কি করতে চাইছি সে বিষয়ে। তাকে পার্ক করতে চাই বললে তিনি জানতে চান, অন্য কোথাও করা যাবে কিনা। তখন আমি তাকে বলি- অন্য জায়গা আছে, কিন্তু ডিসি হিল তো নেই। এটা চট্টগ্রামের মানুষের আত্মার জায়গা। আর আমরা তো এখানে বাড়িঘর করছি না। হাঁটার জায়গা করছি। তখন প্রধানমন্ত্রী সেটি বুঝতে পেরে আমার উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছিলেন। তিনি বলেন, আমি নিয়মিত রমনা পার্কে প্রাতঃভ্রমণে বের হই। সেখানে আগে ময়লা আবর্জনায় ঠাসা ছিল। দিনভর নানা অনুষ্ঠান হতো। আমি সব বন্ধ করে দিয়েছি। কিন্তু ডিসি হিলে যখনই আসছি তখনই দেখছি নোংরা। ইয়োগার মুখের অনুশীলন টেনে তিনি হাসতে হাসতে বললেন, সবাই হা হা করে অনুশীলন করি। কিন্তু সেই সময় তো মুখে ময়লা ঢুকে যাবে! তাই নিজেদের সুরক্ষায় নিজেদেরই এ অঙ্গন পরিষ্কার রাখতে হবে। কর্মসূচিতে মন্ত্রী চাপাফুল ও কাঠবাদামসহ পাঁচটি চারাগাছ রোপণ করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।