Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পাশে থাকার প্রমাণ দিতে মিয়ানমারকে সমরাস্ত্র দিতে আগ্রহী ভারত

ইনকিলাব ডেস্ক: | প্রকাশের সময় : ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

রোহিঙ্গা মুসলিমদের জাতিগত নিধনে অভিযুক্ত মিয়ানমারকে দৃঢ় সমর্থনের প্রমাণ হিসেবে সমরাস্ত্র সরবরাহের করতে আগ্রহী প্রতিবেশী ভারত। নয়াদিল্লির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মিয়ানমারের নৌবাহিনী প্রধানের ভারত সফরে এসব অস্ত্র সরবরাহের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। ভারতের অভিজাত প্রতিরক্ষা প্রতিষ্ঠানে মিয়ানমারের নৌবাহিনীর কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের বিষয়েও উভয় দেশ আলোচনা করেছে।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের সঙ্গে সামরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির আলোচনাটি এই অঞ্চলে চীনা কর্তৃত্বের মোকাবিলায় ভারতের পাল্টা পদক্ষেপ। সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহের বিষয়টি এমন সময়ে আলোচনায় এসেছে যখন পশ্চিমা দেশগুলো রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর সহিংসতায় মিয়ানমার সরকারের সমালোচনা করছে।
মিয়ানমার এসব অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছে, দেশটির সেনাবাহিনী আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) বিদ্রোহ মোকাবিলা করছে। দেশটির দাবি, আরসার সদস্যরা রোহিঙ্গা গ্রামে আগুন দিচ্ছে এবং বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা করছে।
গত বুধবার মিয়ানমার নৌবাহিনীর কমান্ডার-ইন-চিফ অ্যাডমিরাল টিন অং সান ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সিতারাম এবং ভারতের সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর প্রধানের সঙ্গে বৈঠক করেন। এক সামরিক কর্মকর্তা জানান, এসব বৈঠকে উভয় পক্ষ সাগরে টহল নৌকা সরবরাহের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। মিয়ানমারের নৌবাহিনী প্রধান চারদিনের সফরে মুম্বাইয়ে ভারতের নৌবাহিনীর শিপ ইয়ার্ড পরিদর্শন করেছেন।
ওই কর্মকর্তার ভাষায়, ‘আমাদের (ভারত) ‘লুক ইস্ট’ নীতির অন্যতম স্তম্ভ হচ্ছে মিয়ানমার এবং দুই দেশের সম্পর্কের বড় অংশ হচ্ছে প্রতিরক্ষা’।
২০১৩ সালে মিয়ানমার সেনাবাহিনীকে ভারত আর্টিলারি গান, রাডার ও নাইট ভিশন ডিভাইসের মতো সামরিক সরঞ্জাম প্রদানের প্রস্তাব দিয়েছিল। এরপর থেকে দুই দেশের প্রতিরক্ষা সহযোগিতার ক্ষেত্রে নৌবাহিনী মূলকেন্দ্রে চলে আসে। এ অঞ্চলে চীনের প্রভাবকে মোকাবিলায় ভারতের পাল্টা পদক্ষেপের অংশ হিসেবেই সহযোগিতার ক্ষেত্র পরিবর্তিত হয়।
বঙ্গোপসাগরে উভয় দেশ সমন্বিত টহল বৃদ্ধি করতে পারে ধারণা করা হচ্ছে। নয়াদিল্লিভিত্তিক অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের মিয়ানমারের নীতি বিশ্লেষক কে. ইয়োম বলেন, যখন আন্তর্জাতিক স¤প্রদায় মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সমালোচনা করে একটি ইঙ্গিত দিচ্ছে তখন ভারত সরকার দেশটির উচ্চ পর্যায়ের সামরিক কর্মকর্তাদের স্বাগত জানাচ্ছে। এর অর্থ হচ্ছে রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে যতই উদ্বেগ থাকুক না কেন মিয়ানমারের পাশে থাকবে ভারত।
আগস্ট মাসের শেষ দিকে রাখাইনে সহিংসতা ও সঙ্কট শুরু হওয়ার পর মিয়ানমারের ডি ফ্যাক্টো নেতা অং সান সু চির প্রতি সমর্থন জানিয়েছে ভারত। নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্যদের ওপর বিদ্রোহীদের হামলার নিন্দা করেছে নয়াদিল্লি। এই হামলার পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে মিয়ানমার সেনাবাহিনী রাখাইনে রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকায় তথাকথিত ক্লিয়ারেন্স অপারেশন পরিচালনা করছে। অভিযান শুরুর এ পর্যন্ত ৪ লাখ ২০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়ের সমালোচনা যখন বাড়তে থাকে তখন ভারত কয়েক লাখ রোহিঙ্গার বাংলাদেশে পালিয়ে যাওয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। চীনও মিয়ানমার সরকারের পাশে দাঁড়িয়েছে। চলতি সপ্তাহে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইয়ি জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্থনিও গুতেরেজকে জানান, মিয়ানমারের জাতীয় নিরাপত্তা সুরক্ষার উদ্যোগকে সমর্থন এবং রাখাইনে সহিংস হামলার বিরোধিতা করে বেইজিং। সূত্র : রয়টার্স।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ