পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ‘মিথ্যা বলার মধ্যে যদি কেউ চ্যাম্পিয়ন হন, সেটা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এজন্য তিনি নোবেল পুরস্কার পেতেই পারেন। এতে আমাদের কোনো হিংসা নেই।’ গতকাল (বুধবার) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে মিলনায়তনে বাংলাদেশ ডেমোক্রেটিক কাউন্সিল (বিডিসি) আয়োজিত ‘রোহিঙ্গা সমস্য সমাধানে সরকার এবং আন্তর্জাতিক সংস্থা ও বিশ্ব নেতৃবৃন্দের ভূমিকা শীর্ষক’ এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। রোহিঙ্গা ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নোবেল পুরস্কার দেয়ার জন্য সামাজিক মাধ্যমে প্রচারণার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুটি আওয়ামী লীগ নিজের মনে করছে। তারা শেখ হাসিনাকে নোবেল দেয়ার জন্য প্রচারণা চালাচ্ছে। নোবেল কমিটি যদি শেখ হাসিনাকে নোবেল দিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে কলুষিত হতে চায়, হতেই পারে। রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতিগতভাবে এক সুরে কথা বলার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এই সমস্যা সমাধান ক্ষমতাসীন সরকারের একার পক্ষে সম্ভব নয়। এ প্রশ্নে জাতীয় ঐক্য হওয়া প্রয়োজন। তিনি আরো বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে চীন, রাশিয়া, ভারতের পদক্ষেপ বাংলাদেশের জন্য নেতিবাচক। মায়ানমারে সেনা চৌকিতে হামলা সেখানকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সৃষ্টি। অথচ এর দায় রোহিঙ্গাদের ওপর চাপিয়ে তাদের নির্যাতন করা হচ্ছে।
রোহিঙ্গা সঙ্কটের সমাধান করা না গেলে ভবিষ্যতে তা বাংলাদেশের ভেতরেই বিপদের কারণ হবে জানিয়ে গয়েশ্বর চন্দ্র বলেন, রোহিঙ্গাদের স্থায়ী সমাধান অর্থাৎ তাদের নিজ জন্মভূমিতে ফেরত যাওয়ার ব্যবস্থা আমাদের করতে হবে। তা নাহলে এই সমস্যাটা বাংলাদেশের জন্য একসময় স্থায়ী হবে এবং এই সমস্যাকে কেন্দ্র করে দেশে রাজনীতিতে নানা ধরনের উপসর্গ দেখা দিতে পারে। রোহিঙ্গা সঙ্কটের পেছনে অন্য দেশও জড়িত বলে গয়েশ্বর মনে করেন, তবে কোনো দেশের নাম তিনি প্রকাশ করেননি। বিএনপি নেতা বলেন, যেসব বৃহত্তর শক্তি মিয়ানমারের পেছনে কাজ করছে, অস্ত্র দিচ্ছে শক্তি দিচ্ছে, তারাই বলপূর্বক এই রোহিঙ্গাদেরকে বাংলাদেশে আনছে। বাংলাদেশে যে আনছে, এখানে যে শেষ হবে, তা নয়। ওই সব বৃহত্তর শক্তিগুলো পর্দার অন্তরালে থেকে মিয়ানমারকে যেভাবে আজকে অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করছে। আপনারা বিশ্বাস রাখেন যে আজকে আমাদের দেশে যারা অনুপ্রবেশ করেছে বা যাদেরকে আমরা স্থান দিচ্ছি, এক সময় তাদের কাছেও ওই অস্ত্র আসবে। এক সময় এটা একটা মরণপণ যুদ্ধ হবে। সেই যুদ্ধটা মিয়ানমারের বিরুদ্ধে হবে না। আমাদেরকে হুমকির সম্মুখীন হতে হবে। কারণ পৃথিবীজুড়ে অস্ত্র ব্যবসায়ী যারা, তাদের কাজটাই হলো নানা পক্ষের মধ্যে ঝগড়া লাগানো। এই পরিস্থিতিতে সবাইকে সতর্ক থাকার তাগিদ গয়েশ্বর বলেন, আন্তর্জাতিক অনেক সন্ত্রাসী গ্রুপ অথবা অনেক দেশ আছে, যারা আমাদেরকে দুর্বল রাখার জন্য তারা বিভিন্ন ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠির অথবা আগত রোহিঙ্গাদের মাধ্যমে আগামী দিনে স্থায়ী অস্থিতিশীল অবস্থা গড়ে তুলতে পারে।
গয়েশ্বর বর্তমান সরকারের পররাষ্ট্র নীতিরও সমালোচনা করে বলেন, পররাষ্ট্র নীতিতে আমাদের সরকারের ব্যর্থতা এক জায়গায়। অর্থাৎ যে আসে তার সাথেই বলে, মাসি আমি তোমার সাথেই আছি। কিন্তু একদিন না একদিন এটা ধরা পড়ে। দক্ষিণ এশিয়া এবং বঙ্গোপসাগরে কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার দৌড়ে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের পাশাপাশি ভারতও রয়েছে। এই তিন পরাশক্তি একজন আরেকজনকে সহ্য করতে পারছে না। এই বঙ্গোপসাগর ব্যবহার করার আশ্বাস এই সরকার অনেককে দিয়েছিল, শেষ পর্যন্ত কাউকে দিতে পারছে না। এই না দিতে পারার কারণেও আড়ালে এখানে রোহিঙ্গা সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে কি না, সেটাও আমাদের ভাবনার বিষয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমালোচনা করে গয়েশ্বর বলেন, আজকে প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে গেলেন, উনি বললেন আমেরিকার সাহায্যের দরকার নাই। অর্থাৎ উনি কোথাও স্থান পাচ্ছেন না। চীনের সাথে একটা ভালো সম্পর্ক করার চেষ্টা করলেন, রাশিয়ার সাথে পুরনো সম্পর্ক। আমাদের এখানে এত বড় (পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প) রাশিয়াকে দেওয়া হয়েছে, আজকে রাশিয়ার ভূমিকা যদি চীনের পক্ষে হয়, আর চীনের ভূমিকা যদি পর্দার অন্তরালে মিয়ানমারের পক্ষে হয়, তাহলে আমাদের এই ভুখন্ড ও সার্বভৌমত্ব নিয়ে কত কাড়াকাড়ি! একদিন যদি চীন পর্দার অন্তরালে খেলে। দেখলাম ভারত থেকে নরেন্দ্র মোদী প্রকাশ্যে গিয়ে বললেন, আমি আছি। অর্থাৎ আজকে বাংলাদেশের প্রশ্নে, রোহিঙ্গাদের প্রশ্নে ভারত, চীন, রাশিয়া কারও ভূমিকা ইতিবাচক নয়, সবাই নেতিবাচক। রোহিঙ্গাদের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ’ লাঘবে তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে দলমত নির্বিশেষে ‘একসুরে’ কথা বলতে ‘জাতীয় ঐক্য’ সৃষ্টির আহ্বান জানান বিএনপি নেতা। ডেমোক্রেটিক কাউন্সিলের সভাপতি এমএ হালিমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমদ আজম খান, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।