পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বাড়ছে নিরাপত্তার ঝুঁকি : প্রতারিত ভোক্তা ও রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার
অর্থনৈতিক রিপোর্টার
অবৈধভাবে মোটরসাইকেলের আমদানিতে প্রতারিত হচ্ছেন ভোক্তা। আবার আমদানি শুল্ক কম দেখিয়ে আনা এসব মোটরসাইকেলের কারনে রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। আমদানিকৃত এসব মোটরসাইকেলের ফলে নিরাপত্তাও ঝুকির মধ্যে পড়ছে। সম্প্রতি অবৈধ মোটরসাইকেলের এসব তথ্য উঠে এসেছে। তেমনই একটি রাজধানীর বড় মগবাজারের আরএনজে এন্টারপ্রাইজ।
ভারতের ডলফিন মোটরস থেকে জনপ্রিয় একটি ব্রান্ডের দুটি মডেলের ২৪ টি মোটরসাইকেল আমদানি করে। প্রতিটির জন্য যথাক্রমে ৮৫৫ ও ৯৬৫ ডলার আমদানি মূল্য প্রদর্শন করে শুল্ক প্রদান করে। প্রকৃতপক্ষে মোটর সাইকেলের প্রতিটি মূল্য যথাক্রমে ১০৬০ ও ১১৫০ ডলার। ফলে প্রায় ১২ হাজার ডলার রাজস্ব কম দিয়ে দেশের বাজারে প্রবেশ করেছে ২৪ টি মোটরসাইকেল। আবার এই ব্রান্ডের মোটরসাইকেল আমদানির জন্য বৈধ কোন ডিলারও না আরএনজে এন্টারপ্রাইজ। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্যমতে, ২০০৯-১০ ও ২০১০-১১ অর্থ বছরে আড়াই লাখ করে মোটরসাইকলে আমদানি হলে ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে ৪ লাখ ছাড়িয়েছে। বাংলাদেশ মোটরসাইকলে এসেম্বলারস এন্ড ম্যানুফ্যাকচারাস এসোসিয়েশন (বিএমএএমএ) তথ্যে দেখা গেছে, ২০১৬ সালে বিপননকৃত মোটর সাইকেলের প্রায় ৮৬ শতাংশই আমদানিকৃত।
১৪ শতাংশ বাজার দখলে দেশীয় দুটি প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন এবং রানারের। আমদানি মোটরসাইকেলের বাজারে অবৈধ আমদানিকারকদের জন্য বৈধ আমদানিকারকও ক্ষতির শিকার হচ্ছেন বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। এ বিষয়ে বিএমএএমএ এর কোষাধ্যাক্ষ ও টিভিএস মোটরসাইকলের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান টিভিএস অটো বাংলাদেশ লিমিটেডের হেড অব অপারেশন বিপ্লব কুমার রয় বলেন, বৈধ আমদানিকারকরা সঠিক মূল্য প্রদর্শন করে দেড়শ শতাংশের বেশি শুল্ক প্রদান করে একটি মোটরসাইকেল আমদানি করা হয। কিন্তু অবৈধ আমদানিকারকরা কম মূল্য দেখিয়ে সরকারের রাজস্ব ফাকি দিচ্ছে অন্যদিকে ভোক্তাদের প্রতারিত হরছে। তাই মোটরসাইকেল আমদানির শুরুতেই এ ধরনের আমদানি বন্ধ করতে হবে। বিশেষ করে বর্ডার ও শূল্ক প্রক্রিয়াকরনের সময় কাস্টমস কর্তৃপক্ষ শক্তিশালীভাবে যাচাই বাচাই করলে অবৈধভাবে প্রবেশ করতে পারবে না। তাছাড়া দেশের ভিতর অবৈধভাবে প্রবেশকৃত মোটরসাইকেল পুলিশের কাছে ধরা পড়ছে পরবর্তীতে নিলাম করে বৈধতা দেবার যে প্রক্রিয়া রয়েছে প্রথাটিও বাতিল করতে হবে।
খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অবৈধভাবে আমদানিকৃত এসব মোটরসাইকেল কম দাম দেখিয়ে রাজস্ব কম দিচ্ছে। আবার প্রচলিত মডেল না হবার কারনে বাজারে বেশি দামে বিক্রি করছে। এতে প্রতারিক হচ্ছেন ভোক্তারা। প্রথমত বেশি দামে কিনতে হচ্ছে মোটরসাইকেলটি। অন্যদিকে সার্ভিস নেবার সময় সঠিক সময়ে সঠিক সার্ভিসটি পাচ্ছে না। এমনকি প্রচলিত মডেল না হবার কারনে সঠিক যন্ত্রাংশও পাওয়া যাচ্ছে না। কেননা বৈধ ডিলাররা তাদের তাদের সার্ভিস পয়েন্টে আসলে গাড়ির চেসিস ও ইঞ্জিন নাম্বার মিলিয়ে দেখে তারপর সার্ভিস দিয়ে থাকেন। বাংলাদেশে পার্শ্ববর্তী দেশগুলো থেকে অবৈধ পথে আসা এসব গাড়ী নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে দাড়াচ্ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি (ট্রান্সপোর্ট) একেএম হাফিজ আক্তার বলেন, অবৈধ মোটরসাইকেলের আমদানি গত কয়েক বছরে বেশ বেড়েছে। দেশের বিভিন্ন থাকায় এ ধরনের মোটরসাইকেল প্রচুর জব্দ করা হচ্ছে। অনেক সময় অনুমোদনের চেয়ে বেশি গতির মোটরসাইকেলও আনা হচ্ছে। এসব মোটরসাইকেল দিয়ে অপরাধমূলক কাজে বেশি ব্যবহার করা হয। আর পরবর্তীতে অপরাধমূলক কার্যক্রম হলে চিহ্নিত করতে অসুবিধায় পড়তে হয়। এজন্য পুলিশ বাহিনি এ বিষয়ে সবোর্চ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। বিআরটিএ কর্তৃপক্ষের সহায়তা নিয়ে বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে বড় ধরনের অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।
জানা গেছে, আমদানিকৃত মোটরসাইকেল রেজিষ্ট্রি করতে হলে বিল আব এন্ট্রি, এ্যাসেসমেন্টে নোটিশ, গেট পাশ, সিকেডি অনুমোদন, কমার্সিয়াল অনুমোদন ও এলসি কপি সংযুক্ত করতে হয়। ব্যক্তি মালিকানাধিন হলে এর পাশাপাশি ভোটার আইডি, জাতীয় পরিচয়পত্র এবং ঠিকানা প্রমানের জন্য বিদ্যুৎ অথবা গ্যাস বিলের কপি।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) মিরপুর কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. শামসুল কবীর বলেন, সঠিক নিবন্ধন ছাড়া কোন মোটরসাইকেল রাস্তায় চলাটা বেআইনি। এজন্য যাচাই বাছাই করে নিবন্ধন করা হচ্ছে। আমধানিকৃত মোটরসাইকেল রেজিষ্ট্রেশনের ক্ষেত্রে কাষ্টমস কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যৌথভাবে চেসিস নাম্বারসহ অনান্য বিষয়গুলো চেক করা হয়। এতে অনেক সময় অবৈধ আমদানিকারকরা ধরা পড়েন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।