Inqilab Logo

সোমবার, ০১ জুলাই ২০২৪, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, ২৪ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

ব্রহ্মপুত্র-যমুনা পাড় ফের বন্যার মুখে

বিশেষ সংবাদদাতা, চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

সুরমা-কুশিয়ারা নদীতে বিপদসীমার ওপরে পানি বাড়ছেই
উত্তরের জনপদে ব্যাপক বন্যার ধকল না কাটতেই ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদপাড় ফের বন্যার মুখোমুখি অবস্থায় দাঁড়িয়েছে। গতকাল (রোববার) সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্তে ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা নদের পানিবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। যমুনা সিরাজগঞ্জে বিপদসীমার মাত্র ৬ সেন্টি মিটার, কাজীপুরে ৯ সেমি ও সারিয়াকান্দিতে ১৯ সেমি নিচে অর্থাৎ বিপদসীমা ছুঁইছুঁই অবস্থানে এসে গেছে।
আর ব্রহ্মপুত্র নদেরও পানি বেড়ে গিয়ে বিপদসীমার ৪১ সেমি নিচে রয়েছে চিলমারী পয়েন্টে। অন্যদিকে বৃহত্তর সিলেটের সুরমা ও কুশিয়ারা নদীতে বিপদসীমার উপরে পানি বাড়ছেই। সুরমা নদী একটি পয়েন্টে এবং কুশিয়ারা নদী তিনটি পয়েন্টে বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। পাউবোর বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র সূত্র জানায়, উত্তরের ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা নদ এবং সিলেটের সুরমা নদীর পানির সমতল বৃদ্ধি আগামী ৪৮ ঘণ্টা বা দুই দিনেও অব্যাহত থাকতে পারে। তবে গঙ্গা নদীর পানি হ্রাস পাচ্ছে এবং পদ্মা নদীর পানির সমতল স্থিতিশীল রয়েছে। সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ সূত্রে জানা গেছে, উজানভাগে হিমালয় পাদদেশীয় অঞ্চল চীন তিব্বত, নেপাল ও উত্তর-পূর্ব ভারতের বিভিন্ন এলাকায় মৌসুমি বায়ু সক্রিয় হয়ে ভারী বর্ষণ হচ্ছে। এতে করে উজানভাগের অববাহিকার পানি ভাটিতে বাংলাদেশের দিকে নামছে। এতে করে ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা নদ এবং সিলেটের সুরমা নদীর পানি আবারও বৃদ্ধি পেয়েছে। তাছাড়া সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর কারণে রংপুরসহ উত্তর জনপদ, ময়মনসিংহ, সিলেটসহ বিভিন্ন স্থানে ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণেও এসব নদ-নদীর পানি ফের বেড়ে গিয়ে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে। গতকাল সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয় নেত্রকোণায় ১৩৫ মিলিমিটার। এ সময় রংপুরের রাজারহাটে ১২৮ মিমি, সিলেটে ৯১ মিমি, ময়মনসিংহে ৭৬ মিমি ও ঢাকায় ৫৫ মিমি বৃষ্টিপাত হয়েছে।
এদিকে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের সর্বশেষ তথ্য-উপাত্তে, দেশের নদ-নদীসমূহের ৯০টি পানির সমতল পর্যবেক্ষণ স্টেশনের মধ্যে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছিল ৩৯টি পয়েন্টে এবং হ্রাস পায় ৪৮টিতে, অপরিবর্তিত থাকে তিনটিতে। ৪টি নদ-নদী ৬টি স্টেশনে বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
সুরমা নদী কানাইঘাটে বিপদসীমার ১৩১ সেমি উপরে প্রবাহিত হচ্ছিল। তাছাড় সুরমা সিলেট ও সুনামগঞ্জে মাত্র ৭ ও ৯ সেমি নিচে রয়েছে। কুশিয়ারা নদী অমলশীদে ১৫ সেমি, শেওলায় ৩০ সেমি ও শেরপুর-সিলেটে বিপদসীমার ২ সেমি উপরে রয়েছে। দিরাইয়ে পুরাতন সুরমা ৬ সেমি উপরে এবং খুলনায় পশুর নদী ১৫ সেমি উপরে প্রবাহিত হচ্ছে। নেত্রকোণায় কংস নদীর পানি আবারো বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার মাত্র ১২ সেমি নিচে প্রবাহিত হয়। দেশের নদ-নদীর অববাহিকা এলাকাগুলোতে সকাল পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় সকাল পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে লরেলগড়ে ১৫০ মিলিমিটার, সুনামগঞ্জে ১শ’ মিমি, সিলেটে ৯০ মিমি।
অপরদিকে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের আসাম, মেঘালয়, অরুণাচল অঞ্চলে গতকাল এবং আজ সোমবার বিভিন্ন স্থানে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণের পূর্বাভাস দিয়েছে ভারতের আবহাওয়া বিভাগ। এরফলে উজানের ঢলের পানি আবারও ভাটিতে বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় নামতে পারে এবং এতে বন্যা পরিস্থিতি তৈরির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চট্টগ্রাম


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ