পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
অবশেষে আজ চালু হচ্ছে বহুল প্রতীক্ষিত দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকাল ১০টায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল ‘সি-মি-উই-৫’ উদ্বোধন করবেন। সাবমেরিন ক্যাবল ওয়ানের তুলনায় প্রায় আট গুণ বেশি ক্ষমতাসম্পন্ন নতুন এ স্টেশনটি চালু হলে, নিরবিচ্ছন্ন ও দ্রæতগতির ইন্টারনেটের আওতায় আসবে দক্ষিণাঞ্চলসহ পুরো দেশ। কুয়াকাটায় দেশের দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল ল্যান্ডিং স্টেশন চালু হলে দেশে ইন্টারনেটের গতি বাড়বে প্রায় সাত গুণ।
শুধু ইন্টারনেটের গতি নয়, বিশ্বের সঙ্গে দেশের একটি নিবিড় বন্ধনও তৈরি হবে। এছাড়া গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর তথ্য-প্রযুক্তির উন্নতি সাধনের পাশাপাশি টেলিযোগাযোগ খাতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটবে। বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিসিএল) সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ পঞ্চম সাবমেরিন ক্যাবলে (বাংলাদেশের দ্বিতীয়) যুক্ত হওয়ায় নতুন করে আরও ১৫০০ গিগাবাইট ব্যান্ডউইথ পাবে।
নতুন এই ব্যান্ডউইথ যুক্ত হলে বাংলাদেশে বাড়বে ইন্টারনেট সেবার মান এবং মূল্য অনেকাংশেই কমে যাবে বলেও মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। যদিও এর আগেও ইন্টারনেট সেবার খরচ কমাতে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দেয়ার পর ব্যান্ডউইথের দাম কমিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু গ্রাহক পর্যায়ে তা পৌছেনি। বরং ইন্টারনেট সেবার মূল্য ও গতি নিয়ে সব সময় অভিযোগ করে আসছেন গ্রাহকরা। কাক্সিক্ষত মূল্যে ইন্টারনেট সেবা এবং নির্দিষ্ট গতি না দেয়ার জন্য সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান ও অপারেটরদেরই দায়ি করে আসছেন তারা। এর আগে কয়েকদফা ব্যান্ডউইথের দাম কমালেও তা গ্রাহক পর্যায়ে পৌঁছেনি। এবারও তার পূনরাবৃত্তি হবে বলে মনে করছেন তারা। বিএসসিসিএল এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মনোয়ার হোসেন জানান, ১০ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল উদ্বোধনের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। উদ্বোধনের সময় তিনি নিজে কুয়াকাটায় দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবলের ল্যান্ডিং স্টেশনে উপস্থিত থাকবেন। এছাড়াও সেখানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব শ্যাম সুন্দর শিকদারও উপস্থিত থাকবেন। উদ্বোধনের দিন থেকে আমরা ২০০ জিবিপিএস (গিগাবাইট পার সেকেন্ড) ব্যান্ডউইথ পাব। পর্যায়ক্রমে তা ১ হাজার ৫০০ জিবিপিএসে উন্নীত হবে। মো. মনোয়ার হোসেন আরও বলেন, ‘সি-মি-উই-৫ কনসোর্টিয়াম আমাদেরকে ১ হাজার ৫০০ জিবিপিএসই ব্যান্ডউইথ দিয়ে দিচ্ছে। কিন্তু আমাদের বাজার কতটা তৈরি, কতটুকু প্রয়োজন এসব আগে জানতে হবে। কক্সবাজারে প্রথম সাবমেরিন ক্যাবল ল্যান্ডিং স্টেশনের চেয়ে দ্বিতীয় স্টেশন সাত গুণ বেশি ক্ষমতাসম্পন্ন। এটি উদ্বোধনের পর উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন নেটওয়ার্কে ভাসবে গোটা দেশ। দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে উদ্বৃত্ত ব্যান্ডউইথ রফতানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব।
বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল কোম্পানির জেনারেল ম্যানেজার মো. মশিউর রহমান জানান, ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে ল্যান্ডিং স্টেশনের বৈদেশিক সংযোগ স্থাপন করা হয়। চলতি বছরের মার্চ থেকে পরীক্ষামূলকভাবে ৪০ জিবিপিএস পর্যন্ত ব্যান্ডউইথ সুবিধাসহ ইন্টারনেট ব্যবহার করা হয়। স্টেশনটি উদ্বোধনের পর সর্বোচ্চ ১৫০০ জিবিপিএস পর্যন্ত ব্যান্ডউইথ সুবিধাসহ ইন্টারনেট ব্যবহার করা যাবে।
এর আগে ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বলেন, দ্বিতীয় সাবমেরিন কেবলের সাথে যুক্ত হওয়ার ফলে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে ব্যান্ডউইথের দাম আরও একটু কম করা হবে। বরিশাল, খুলনা, ফরিদপুর, পটুয়াখালী, খুলনা, যশোরসহ দক্ষিণাঞ্চলের ইন্টারনেট সেবা আরও স্বল্পমূল্যে দেওয়া যাবে।
২০১৩ সালে ১০ একর জমির উপর এ সাবমেরিন ল্যান্ডিং স্টেশনের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। পরে ২০১৬ সালের ডিসেম্বর মাসে স্টেশনটি যুক্ত হয় সাবমেরিন কেবলের সঙ্গে। গত ২১ ফেব্রæয়ারি তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সি-সি-উই-৫ কনসোর্টিয়ামের উদ্বোধন হয়। গত ১৬ জানুয়ারি হাওয়াইয়ের হনুলুলুতে ২০ হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ এবং ২৪ টেরাবাইট পার সেকেন্ড (টিবি/এস) গতির এই সি-মি-উই-৫ প্রকল্পের উদ্বোধন করা হয়। এই কনসোর্টিয়ামে যুক্ত রয়েছে বাংলাদেশসহ ১৭টি দেশ এবং এই ক্যাবলের মোট ল্যান্ডিং পয়েন্ট রয়েছে ১৮টি। ‘সি-মি-উই-৫’ হলো দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া-মিডল ইস্ট-ওয়েস্টার্ন ইউরোপ-৫-এর সংক্ষিপ্ত রূপ। এই কনসোর্টিয়ামে রয়েছে মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, মিয়ানমার, বাংলাদেশ, ভারত, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান, জিবুতি, ইয়েমেন, সৌদি আরব, মিসর, ইতালি ও ফ্রান্স।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।