Inqilab Logo

রোববার, ০৭ জুলাই ২০২৪, ২৩ আষাঢ় ১৪৩১, ৩০ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

দুর্ভোগের ঈদযাত্রা প্রতিদিন গড়ে ৮ জন নিহত

নৌ সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম


ঈদুল আজহায় ঘরমুখি যাত্রীদের দুর্ভোগ বেশি হয়েছে। বিশেষ করে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ২১ জেলার মানুষ চরম ভোগান্তির শিকার হয়েছে। ঈদে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ও ছাদে যাত্রী বহন ঠেকাতে পারেনি প্রশাসন। ঈদযাত্রার প্রথমদিন ২৮ আগস্ট থেকে ৫ সেপ্টেম্বর (ঈদের ছুটির পর দ্বিতীয় কর্মদিবস) পর্যন্ত ৯ দিনে সারাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় ৭২ জন নিহত ও ১৫৫ জন আহত হয়েছে। অর্থাৎ এবার ঈদুল আজহায় দৈনিক গড়ে ৮জন নিহত ও ১৭ জন আহত হয়েছে। আর ঈদুল ফিতরে গড়ে দৈনিক নিহত ও আহত হয়েছেন যথাক্রমে ১৫ ও ২৮ জন। ওই সময়ে আটদিনে সারা দেশে ১২০ জন নিহত ও ২২৬ জন আহত হয়েছে। নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির (এনসিপিএসআরআর) এর পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সারাদেশে অনেক মহাসড়কের বেহাল দশার কারণে বিভিন্ন স্থানে যানবাহনের ধীরগতি এবং ৩০ আগস্ট ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ১ সেপ্টেম্বর ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে দীর্ঘ যানজটের কারণে ঘরমুখো মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, দূরপাল্লার অধিকাংশ বাস ও লঞ্চ সার্ভিস ৩১ আগস্ট ও ১ সেপ্টেম্বর যাত্রীদের কাছ থেকে প্রায় দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করেছে। ঈদের দিন নিকটবর্তী দূরত্বের সাধারণ বাস ও লেগুনার মতো ক্ষুদ্র যানবাহনগুলো আদায় করেছে তিনগুণ ভাড়া। এ ছাড়া এ তিনদিন অনেক বাস সার্ভিসসহ সকল লঞ্চ ও ট্রেনের ছাদে এবং খোলা ট্রাকে যাত্রী বহন করা হয়েছে। একইভাবে ঈদ শেষে কর্মস্থলমুখী যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের পাশাপাশি বাস, লঞ্চ ও ট্রেনের ছাদে এবং পণ্যবাহী ট্রাকে যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে।
পদ্মায় আকষ্মিক প্রবল স্রোত ও তীব্র নাব্যতা সংকটের কারণে শিমুলিয়া-কাঠালবাড়ি নৌপথে ফেরি চলাচল সীমিত হয়ে যানবাহন পারাপারে অচলাবস্থা সৃষ্টি হওয়ায় সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছে সড়কপথে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার ঘর-ফেরত যাত্রীরা। পর্যবেক্ষণে উল্লেখ করা হয়, বিকল্প দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথের দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে চরম অব্যবস্থাপনা ও তী ব্র যানজটের কারণে ঢাকামুখী বাসগুলো পারাপারের অপেক্ষায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকায় যাত্রীদের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
জাতীয় কমিটির পর্যবেক্ষণে আরো বলা হয়, শিমুলিয়া-কাঠালবাড়ি নৌপথে ফেরি পারাপারে অচলাবস্থার কারণে বৃহত্তর বরিশাল অঞ্চলের হাজার হাজার মানুষ সড়কের বিকল্প হিসেবে নৌপথে ঢাকাসহ বিভিন্ন কর্মস্থলে ফিরছেন। এই সুযোগে বরিশালসহ উপকূলীয় জেলাগুলোর সকল লঞ্চ সার্ভিস ধারণ ক্ষমতার ৩-৪ গুণ যাত্রী বহন এবং দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করছে।
গতকাল বুধবার ঈদ পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন সম্পর্কে নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দে জানান, ২৮ আগস্ট থেকে ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ঢাকার কমলাপুর ও সেনানিবাস রেলস্টেশন, সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল, শিমুলিয়া ও পাটুরিয়া ফেরিঘাটসহ রাজধানীর সকল বাস টার্মিনালের ওপর পর্যবেক্ষণ চালিয়ে এবং বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেল, অনলাইন নিউজপোর্টাল, জাতীয় দৈনিক ও আঞ্চলিক পত্রিকার অনলাইন ও মুদ্রিত সংস্করণে প্রকাশিত তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। এবারের ঈদে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল, কমলাপুর রেলস্টেশন ও সবগুলো বাস টার্মিনালসহ রাজধানীর সর্বত্র এবং মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ফেরিঘাটের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সন্তোষজনক ছিল বলেও জানিয়েছে নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটি।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নিহত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ