নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস : ১১৩.২ ওভারে ৩০৫
অস্ট্রেলিয়া ১ম ইনিংস: ৬৪ ওভারে ২২৫/২
দ্বিতীয় দিন শেষে
দিনের খেলা বাকি আর মাত্র ৭ ওভার। ৫৬ ওভার শেষে অস্ট্রেলিয়া ২ উইকেটে ২০১। উইকেটের সংখ্যা তিন হতে পারতো অনায়াসেই। নিজের ১৭তম ওভারটি করতে এসেছিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ওভারের প্রথম বলটিই বুঝতে ভুল করেছিলেন ডেভিড ওয়ার্নার। এই স্পিনারের ঘূর্ণির যাদুকরি বলটি ততক্ষণে অজি সহ-সেনাপতিকে পেরিয়ে পৌঁছে গেছে উইকেটের পেছনে থাকা মুশফিকুর রহিমের নাগালে। তবে সেটি কিছুটা নিচু হওয়ায় গøাভসবন্দী করতে ব্যর্থ বাংলাদেশ অধিনায়ক। অনেকটা এগিয়ে গিয়েও প্রাণে বেঁচে যান ওয়ার্নার। ঘটনার আকস্মিকতায় এতটাই হকচকিয়ে গিয়েছিলেন, সেই ওভারে আর কোন রানের চেষ্টাই করতে দেখা যায়নি এই ওপোনরেক। মিরাজের মেডেন ওভারটি হতে পারতো মেডেন উইকেট, হলো না। এর আগেও ৫২ রানে একবার বেঁচে গিয়েছিলেন ওয়ার্নার। সেবার তার ক্যাচ ছেড়েছিলেন মুমিনুল হক। ৩৯তম ওভারে তাইজুল ইসলামের বলে শর্ট লেগে বাঁহাতি উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানের ক্যাচ শর্ট লেগে মুঠোয় নিতে পারেননি ২ ম্যাচ পর টেস্টে ফেরা এই অলরাউন্ডার।
দুটি জীবন পেয়ে বাংলাদেশি বোলারদের জীবনই দুর্বিসহ করে তুলেছেন ওয়ার্নার। তার সঙ্গে যোগ হয়েছে পিটার হ্যান্ডসকম্বের যুগপদ সহযোগ। নির্ভিক হয়ে সমান তালে লড়েছেন সাকিব-মিরাজ-তাইজুল-মুস্তাফিজদের। যার খেসারত দিনশেষে দিতে হয়েছে বাংলাদেশকে। এই দুজনের ব্যাটে দ্বিতীয় দিন শেষে সেই ২ উইকেট হারানো অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ৬৪ ওভারে ২২৫। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের চেয়ে এখনও ৮০ রানে পিছিয়ে অস্ট্রেলিয়া। ঢাকা টেস্টে একমাত্র সেঞ্চুরি পাওয়া ওয়ার্নার আছেন টানা দ্বিতীয় শতক থেকে ১৩ রান দূরে (৮৮)। ছক্কাহীন ১৭০ বলে তার ২৬৬ মিনিটের ধৈর্য্যশীল ইনিংসটি শুধুমাত্র চারটি চারে সাজানো। আর তাকে সঙ্গ দিয়ে আজও ব্যাবধানটা কমানোর জন্য নামবেন ৬৯ রান করা হ্যান্ডসকম্ব। ১১৩ বলে তারও আছে ৫টি চার।
এর আগে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় দিনের খেলা শুরু করে বাংলাদেশ। উইকেটে অধিনায়ক, খেলছিলেন দারুণ। আরেক প্রান্তে দুই বছর পর টেস্ট দলে ফেরা নাসিরের ব্যাটেও ছিল ভালো কিছুর আভাস। আশা ছিল তাই বড় কিছুর। হলো উল্টো। চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৩০৫ রানে অলআউট হয়েছে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় দিন সকালেই মুখ থুবড়ে পড়ল বাংলাদেশের ব্যাটিং। ৬২ রানে দিন শুরু করা মুশফিক ফিরেছেন শুরুতেই, আর মাত্র ৬ রান যোগ করে (৬৮) পরিনত লায়নের আরেক শিকারে। ১৯ রানে থাকা নাসিরও দেখাচ্ছিলেন ব্যাটে ঝলক। তবে ফিরেছের ফিফটির খুব কাছ থেকে, ৪৫ করে। বলের হিসেবে ভালোই খেলছিলেন মিরাজও, তবে সঙ্গীর অভাবে ৫৮ বলে ১১ রানেই থেমেছেন এই অলরাউন্ডারও। তাইজুলের ব্যাট থেকে এলো ৯ রান। সব মিলিয়ে কোনো রকমে তিনশ ছাড়িয়েই শেষ বাংলাদেশ। শেষ চার উইকেট নিয়ে দ্বিতীয় দিন সকালে আর মাত্র ৫২ রান যোগ করতে পেরেছে দল। আগের দিনের ৫ উইকেটের সঙ্গে ন্যাথান লায়ন যোগ করেছেন আরও দুটি। শেষ করলেন ৯৪ রানে ৭ উইকেট নিয়ে। তার ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেরা বোলিং এটি।
অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিংয়ের শুরুতেই (দলীয় ১৫ রানে) ম্যাট রেনশকে ফিরিয়ে প্রথম ধাক্কাটি দিয়েছিলেন মুস্তাফিজুর রহমান। স্পিনারদের জয়জয়াকার এই সিরিজে তুরুপের তাস হিসেবে এদিন বাংলাদেশের বোলিংয়ের শুরুটা করেন কাটার মাস্টার। এই পেসারের লেগ স্টাম্পের ওপর পড়া একটি বল ফ্লিক করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন রেনশ। মুশফিকের নেওয়া ক্যাচটিও ছিল অনবদ্য। কৃতিত্বটা কার বেশি, এটা নিয়ে কথা উঠতে পারে। তবে রেকর্ড বইয়ে নাম লেখা হবে দুজনেরই। মুস্তাফিজের ব্যক্তিগত হিসাবে যোগ হবে আরও একটি উইকেট, মুশফিকেরও ডিসমিসাল রেকর্ডে একটি ক্যাচ। তবে মুশফিক যেভাবে ডান দিকে ঝাঁপিয়ে ক্যাচটি নিলেন, তাতে কৃতিত্বে বাংলাদেশ অধিনায়ককে একটু এগিয়ে রাখতে হচ্ছেই।
এর পর ভয়ঙ্কার হয়ে ওঠা ওয়ানার-স্মিথ জুটি ভাঙ্গেন তাইজুর রহমান। নিজের প্রথম বলে এই স্পিনারের দুর্দান্ত এক ঘূর্ণির যাদু বুঝতে না পেরে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন স্মিথ। ফিফটি তুলে অধিনায়ক থামেন ৫৮ রানে। সেই সঙ্গে রানের গতিতে কিছুটা বাধ দিতে পারে বাংলাদেশ। দ্বাদশ ওভারে পঞ্চাশ ছোঁয়া অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ তিন অঙ্কে গেছে ৩১তম ওভারে। দীর্ঘক্ষণ নিজেকে গুটিয়ে রাখেন ওয়ার্নার। ৯৬ বলে মাত্র দুটি চারে টেস্টে ২৫তম অর্ধশতকে পৌঁছান দলের বিস্ফোরক এই ব্যাটসম্যান। এর চেয়ে মন্থর ফিফটি আছে আর মোটে তিনটি। ৪৬তম ওভারে এসে ৭৪ বল পর বাউন্ডারির দেখা পান ওয়ার্নার। পিটার হ্যান্ডসকম্বও ছিলেন ইনিংসের শুরুতে সতর্ক।
সেখান থেকে বাংলাদেশের সঙ্গে ব্যবধান ক্রমশ কমিয়ে আনেন ওয়ার্নার। টানা দুটি অর্ধশত রানের জুটিও পায় অস্ট্রেলিয়া। স্মিথের পর হ্যান্ডসমকম্বের সঙ্গেও পঞ্চাশ রানের জুটি গড়েন মারমুখী এই ব্যাটসম্যান। স্মিথ, ওয়ার্নারের পর অস্ট্রেলিয়ার তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে অর্ধশতক করেন হ্যান্ডসকম্বও। ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান পঞ্চাশ স্পর্শ করেন ৭৪ বলে। ৯ বছর পর এশিয়ায় চারজন টপঅর্ডারের মধ্যে তিনজনই ফিফটির দেখা পেল অস্ট্রেলিয়ার। এর আগে ২০০৮ সালের অক্টোবরে ভারত সফরে দিল্লি টেস্টে এমন কীর্তি গড়েছিল অজিরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।