পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কোরবানির পশু হাটের মূল বেচাকেনা হবে আজ (শুক্রবার)। গতকালও হয়েছে, তবে তুলনামূলক কম। গরু রাখা সমস্যাসহ বিভিন্ন কারণে আজই সিংহভাগ গরু ও ছাগল ক্রয় করবেন মানুষ। পশুহাটে শতভাগই দেশী গরু ও ছাগল। একথা ক্রেতা ও বিক্রেতাদের। এবার ভারতীয় করিডোর দিয়ে ব্যাপক গরু ঢুকেছে ঠিকই। কিন্তু ভারতীয় গরু ব্যবসায়ীরা দেশীয় খামারীদের খুব একটা ক্ষতি করতে পারেনি। উল্টো করিডোরে অতিরিক্ত টাকা খরচ করে যে আশায় গরু ব্যবসায়ীরা ভারতীয় গরু আমদানী করেছিল তা পূর্ণ হয়নি। লাভের চেয়ে তাদের লোকসান গুণতে হচ্ছে। কারণ বেশীরভাগ মানুষ কোরবানির পশু ক্রয় করছেন দেশীয়। তাও আবার হাটের চেয়ে বেশী ক্রয় করতে দেখা যাচ্ছে গ্রামে গ্রামে গিয়ে কৃৃষকের লালন পালন করা গরু ও ছাগল।
এই চিত্র সীমান্তবর্তী দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের। ক’দিন আগেও খামারী ও কৃষকের মাথায় হাত উঠেছিল, দুশ্চিন্তায় পড়েছিল ভারতীয় গরু ঢোকার কারণে। সেই চিত্র পাল্টে যাচ্ছে। ভারতীয় গরু আমদানী করা ব্যবসায়ীরা জানান, যে চিন্তা করে ব্যাপক গরু ঢুকিয়েছি সেই মোতাবেক ব্যবসা হচ্ছে না। অনেকেই বলেছেন আর ভারতীয় গরুর ব্যবসা করবো না। ঝুকি নেই, নিরিবিলি দেশী গরুর ব্যবসা করবো। পুঁজি লগ্নি করে নানা ঝামেলা মাথায় নিয়ে গরু ঢুকিয়ে মার খাচ্ছি। লোকসানের পর লোকসান হচ্ছে। দেশী গরু এতো তা কল্পনাও করতে পারিনি। সীমান্তের করিডোর দিয়ে অতিরিক্ত টাকা খরচ করে গরু হাটে তুলে আশানুরুপ মূল্য পাচ্ছি না। চরম হতাশায় পড়েছি। ক্রেতাদের ঝোক বেশী দেশীয় গরুর দিকে। দক্ষিণ-পশ্চিমের পশুহাট যশোর উপশহর, নওযাপাড়া, রাজারহাট, বারীনগর, চৌগাছা, মনিরামপুর খুলনার ফুলতলা, সাতক্ষীরার কলারোয়া, ঝিনাইদহের বারোবাজার, কালীগঞ্জ, মহেশপুর, কোটচাঁদপুর, খালিসপুর, হাটগোপালপুর, ভাটই, গাড়াগঞ্জ, শেখপাড়া ও চুয়াডাঙ্গার জীবননগরসহ বিভিন্নস্থানে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হাট এখন জমজমাট। গতকাল বৃহস্পতিবার বেচাকেনা হয়েছে। তবে আজ শুক্রবার মূল বেচাকেনা হবে। দেশী গরু বিক্রেওতা বারীনগরের হাসমদ আলী বললেন,‘ হাটে তো ভারতীয় গরু দেখছি না। সব দেশী গরু। ওরা (ভারতীয় গরু ব্যবসায়ীরা) আমাদের ক্ষতি করতে চেয়েছিল , পারেনি। মানুষ দেশী গরু খোঁজ করছে আর কিনছে। দেশে এতো গরু থাকতে কেন যে ভারত থেকে গরু ঢোকায় ব্যবসায়ীরা বুঝি না। ওই গরুর গোশতে আঁশ মোটা, স্বাদ কম, আর দেশী গরুর গোশতের স্বাদই আলাদা। প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তরের দায়িত্বশীল সুত্র জানায়, গরু ও ছাগল পালনকারী ব্যক্তি ও পরিবারের সংখ্যা দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে প্রায় ৫লাখ। এর বাইরে ভেড়া ও মহিষ পালনকারী কৃষক রয়েছে অসংখ্য। ভারতীয় গরু ঢোকার কারণে খামারী ও কৃষক পথে বসবে বলে আশংকা করা হয়েছিল। গরু ঢুকেছেও ব্যাপক। কিন্তু তাতে খুব একটা ক্ষতির লক্ষণ নেই। বেচাকেনা এ পর্যন্ত যা হয়েছে তার সিংহভাগই দেশী গরু। উল্টো মার খাচ্ছে ভারতীয় গরু আমদানীকারক ব্যবসায়ীরা। সীমান্ত সুত্র জানায়, আরেকটি বিষয় লক্ষণীয় সীমান্তের করিডোর দিয়ে গরু ঢোকার পর ট্রাকভর্তি হয়ে যাচ্ছে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে। সীমান্তবর্তী দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে ভারত্যীয় গরু বেচাকেনা একেবারেই কম।
ক্রেতা ও বিক্রেতাদের বক্তব্য, সামগ্রিক গ্রামীণ অর্থনীতির মন্দাভাব বিরাজ করছে। তবুও ঈমানী দায়িত্ব পালন করার জন্য মানুষ পশু কোরবানী করেন। যশোর বারীনগর হাটে গরু বিক্রি করতে আসা নিশ্চিন্তপুর গ্রামের লিয়াকত আলী বললেন, স্থানীয় বাজারে ভারতীয় গরু নেই। তাছাড়া এবার গ্রামে বাড়ি বাড়ি গরু ও ছাগল ক্রয় করতে বেশী দেখা যাচ্ছে। কোরবানির রপশুহাটে ব্যাপক আমদানী তবু ক্রেতা খুবই কম। তবে আজ শুক্রবার হাটে বেচাকেনা বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। একাধিক সুত্র জানায়, ভারত থেকে গরু ঢোকা বন্ধ করার ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি উপেক্ষিত হয়েছে। কোরবানির শেষ সময়ে ব্যাপকভাবে সীমান্তের কারিডোর দিয়ে ভারতীয় গরু ঢোকে। অথচ দেশীয় গরু ও ছাগল ছিল পর্যাপ্ত। কারণ গরু ও ছাগল পালন আগের চেয়ে বেড়েছে অনেক। কোরবানীর পশু সংকট হবে না মোটেও একথা জোরেশোরে উচ্চারিত হলেও দেশের খামারীদের স্বার্থে বিষয়টি গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। কোরবানির পশুহাটের ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়ের কথা, দেশী গরু ও ছাগলে চাহিদা যখন পুরণ হচ্ছে, তখন গরু আমদানীর প্রয়োজন হলো কার স্বার্থে। এই বিষয়টি তদন্ত হওয়া উচিত।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।