রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
কোরবানির ঈদের ঠিক পূর্ব মূহূর্তে সিলেটের করিডোরগুলো উন্মুক্ত করে দেওয়ায় অবাধে আসছে ভারতীয় গরু। বৈধ পথের পাশাপাশি আসছে অবৈধপথেও। সীমান্তবর্তী এলাকা সিলেটের কোরবানির হাটগুলো এখন ভারতীয় গরুর দখলে। অবাদে আমদানির ফলে গরুর দাম কমে গিয়ে লোকসানের আশঙ্কায় পড়েছেন ব্যবসায়ীরা।
কাস্টমস ও ভ্যাট কমিশনরেট, সিলেট কার্যালয় থেকে জানা যায়, চলতি মাসে সিলেট বিভাগে নতুন করে তিনটি করিডোর উন্মুক্ত করেছে রাজস্ব বিভাগ। সিলেট ভোলাগঞ্জের মাঝেরগাও, হদিবগঞ্জের বাল্লা ও সুনামগঞ্জের ছাতকের এসব করিডোর দিয়ে চলতি মাসের শুরু থেকেই ভারত থেকে গরু আসা শুরু হয়। এছাড়া পুরনো করিডর মৌলভীবাজারের শরিফপুর দিয়েও আসছে গরু।
গরু আমদানি প্রসঙ্গে কাস্টমস ও ভ্যাট কমিশনরেট, সিলেট কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার আহমেদুর রেজা বলেন, ভারত বৈধভাবে গরু রপ্তানি করে না। কিন্তু সেখানকার ব্যবসায়ীরা ঈদের মৌসুমে অবৈধভাবে গরু বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে। অবৈধভাবেভাবে আসা এসব গরু সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের সময় বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি আটক করে। তারা গরু নিয়ে আসে কাস্টমস অফিসে। কাস্টমস কর্মকর্তা নির্ধারিত অংকের জরিমানা আদায় করে গরুর গায়ে একটি সিল মেরে বৈধতা প্রদান করেন। এভাবে গরু আসার বিষয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায় অবগত আছে এবং তাদের অনুমোদন আছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমদানীকৃত গরু প্রতি জরিমানা বাবদ ৫০০ টাকা আদায় করা হয়। আহমেদুর বলেন, সবচেয়ে বেশি গরু আসছে ভোলাগঞ্জের মাঝেরগাও দিয়ে। এই করিডর দিয়ে প্রতিদিন গড়ে ৫০০টি করে গরু আসে। তবে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এই চার করিডর ছাড়াও সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার বিছনাকান্দি, বিয়ানীবাজার উপজেলার সুতারকান্দি, সুনামগঞ্জের বড়ছড়াসহ আরো কয়েকটি সীমান্ত দিয়ে শুল্ক গোয়েন্দাদের চোখ ফাঁকি দিয়েই আমদানি হচ্ছে গরু। এই চোরাচালানে সীমান্তরক্ষী বাহিনী স¤পৃক্ত থাকারও অভিযোগ রয়েছে।
সিলেট প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তার দপ্তর সূত্রে জানা যায়, সিলেট বিভাগে গত বছর ঈদুল আযহায় কোরবানি দেওয়া হয় ৫ লক্ষ ৪২ হাজার ৪৮৭টি পশু। এরমধ্যে গরু ছাড়াও ছাগল এবং মহিষ রয়েছে। চলতি বছরে প্রায় সাড়ে ৫ লাখ পশু কোরবানি হবে বলে ধারণা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের।
প্রাণীসম্পদ দপ্তরের সিলেট বিভাগীয় উপ-পরিচালক মো. গিয়াস উদ্দিনের বলেন, সিলেটে যে পরিমান পশু রয়েছে, তা কোরবানির চাহিদার তুলনায় অধিক। ফলে ভারত থেকে গরু আমদানি করার প্রয়োজন নেই। তবু দেদারছে গরু আসছে। এতে দেশীয় খামারিরা নিরুৎসাহিত হবেন। এদিকে নগরীল প্রধানতম গরুর হাট কাজিরবাজারে গিয়ে দেখাযায়, ভারতীয় গরুর দখলে পুরো বাজার।
বাজারে ভারতীয় গরু নিয়ে আসা বিক্রেতা পাখি মিয়া বলেন, আমরা গরু আমদানি করি না। যারা আমদানি করে তাদের কাছ থেকে কিনে নিয়ে আসি। ফলে কোনটা বৈধ পথে আর কোনটা অবৈধপথে আসে তা বলতে পারবো না। বিক্রেতা আজমল হোসেন বলেন, বাজারে ভারতীয়, অস্ট্রেলিয়ান ও নেপালী গরুই বেশি। দেশী গরুর তুলনায় এগুলোর দাম অপেক্ষাকৃত কম হওয়ায় এসব গরুর প্রতি ক্রেতাদের আগ্রহও বেশি।
স্থানীয় খামারি মখলিছুর রহমান বলেন, গত বছরও ভারতীয় গরুর কারণে প্রায় ৮০ লাখ টাকা লোকসান গুণতে হয়েছে। এবছর যেভাবে ভারতীয় গরু আসছে তাতে দাম আরো কমে যাবে। ফলে এবছরও দাম লোকসানে পড়তে হবে। আগামীতে আর এই ব্যবসায় বিনিয়োগ করবেন না জানিয়ে কামরান বলেন, এমনটি হলে কেউই আর দেশীয় গরু মোটাতাজাকরণে এগিয়ে আসবেন না।
এ ব্যাপারে সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গণমাধ্যম) সুজ্ঞান চাকমা বলেন, ভারত থেকে গরু আসা আমাদের পক্ষে ঠেকানো সম্ভব না। তবে কেউ যাতে অবৈধভাবে আনা গরু বাজারে তুলতে না পারে এ ব্যাপারে আমরা তৎপর রয়েছি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।