পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
খুনিরা রাজনৈতিক কারণে ধরাছোঁয়ার বাইরে নির্বাচনী আবহে সংঘবদ্ধ হচ্ছে সন্ত্রাসীরা
এক সময়কার চরমপন্থী এলাকা বলে খ্যাত বৃহত্তর খুলনাঞ্চল এখন হত্যাযজ্ঞের অভয়ারণ্য। রাজনৈতিক কারণে খুনিরা থাকছে ধরা ছোয়ার বাইরে। নির্বাচনী আবহে সন্ত্রাসীরা চাঙ্গা হয়ে উঠছে। ক্রমশ জনপ্রতিনিধিরা হত্যাকান্ডের শিকার হচ্ছে। সর্বশেষ গত শুক্রবার সকালে খুলনার দিঘলিয়ার গাজীর হাটে নিজ বাড়িতে খুন হন কালিয়ার হামিদপুর ইউপি চেয়ারম্যান নাহিদ হোসেন মোল্লা (৫০)। এ নিয়ে গত দুই যুগে প্রায় ৩ ডজন ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বার ও উপজেলা চেয়ারম্যান খুন হয়েছে। শুধুমাত্র মহানগরী ও খুলনার ১৭ থানায় প্রতিমাসে গড়ে ৮টি খুনের ঘটনা ঘটছে। গত ৯ মাসে কেএমপি’র ৮ থানা ও জেলার ৯ থানায় ৭১ হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়েছে। বৃহত্তর খুলনার ৩ জেলায় গত এক বছরে হত্যাকান্ডের পরিমান শতাধিক। সূত্রমতে, বৃহত্তর খুলনাঞ্চলে নির্বাচনী বাতাস বইতে শুরু করায় সন্ত্রাসীরা সংঘবদ্ধ হচ্ছে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি’র রাজনৈতিক আশ্রয়ে সক্রিয় হওয়ার জন্য বিভিন্ন কলাকৌশলে তারা দৌড় ঝাপ শুরু করেছে। গোয়েন্দা সংস্থা খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরার দাগী কথিত নিষ্ক্রিয় সন্ত্রাসীদের তালিকা তৈরী করে নজরদারি বাড়িয়েছে। কিন্তু মূলত রাজনৈতিক কারণেই হত্যাকান্ডের সংখ্যা যেমন বাড়ছে তেমনি চিহ্নিত খুনীরা থাকছে ধরা ছোয়ার বাইরে। এমন অভিমত অপরাধ বিশেষজ্ঞদের। নির্বাচনের হাতিয়ার হিসেবে এসব সন্ত্রাসীরা এখন রাজনৈতিক নেতাদের কাছে হটকেক। মাঠ গরম করতে বস্তিতে থাকা কিম্বা গ্রাম থেকে উঠে আসা এসব অপরাধীদের ডিমান্ড হাই। রাজপথে মার্কেটে অফিস আদালতে কিম্বা ভোট রাজনীতির মাঠে এরা সন্ত্রাসের বিষ্ফোরণ ঘটায়। আতংকিত করে তোলে নিরীহ জনপদ। অস্ত্রের মহড়ায় প্রকম্পিত করে তোলে নির্বাচনী মাঠ। মহানগর থেকে গ্রাম গ্রামান্তরে সকল শ্রেনী পেশার মানুষ বিশেষ করে সাধারণ জনপ্রতিনিধিরা এদের কাছে জিম্মি। র্যাব, পুলিশ সহ বিভিন্ন আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা সাড়াশি অভিযান চালাচ্ছে। ধরা পড়ছে অস্ত্র সহ এসব সন্ত্রাসীরা। তারপরও থেমে নেই এদের কার্যক্রম। র্যাব, পুলিশ সহ অন্যান্য সংস্থারা দফায় দফায় এ্যাকশন নিচ্ছে চরমপন্থী ও সন্ত্রাসীদের নির্মূলে। আর তার সাথে পাল্লা দিয়ে চলছে রাজনৈতিক শেল্টার। তাই সুযোগ বুঝে সন্ত্রাসীরা অস্ত্রবাজিতে মেতে উঠছে। গত ৬ মাসে বৃহত্তর খুলনায় অর্ধশতাধিক হত্যাকান্ড সহ বেআইনী অস্ত্র ব্যবহারের ঘটনা ঘটেছে।
এদিকে, নিহত ইউপি চেয়ারম্যানের তালিকায় রয়েছেন খুলনার ফুলতলা উপজেলার দামোদর ইউপি চেয়ারম্যান সরদার আবু সাঈদ বাদল, খুলনার তেরখাদার সাচিয়াদহ ইউপি চেয়ারম্যান চান মিয়া শিকদার, পাইকগাছার দেলুটি ইউপি চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ মন্ডল, বাগেরহাটের জাহিদ হাসান, বুড়িরডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান পার্থ প্রতীম পিন্টু, ডেমা ইউপির আক্তার হোসেন তরফদার, কালুবাড়িয়ার ইউপি চেয়ারম্যান আতিয়ার রহমান, মোরেলগঞ্জের রামচাঁদপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আবদুর রশিদ খাঁ, তেলিগাতি ইউপি চেয়ারম্যান খান সাদেকুল ইসলাম সাদু খাঁ, ফকিরহাটের মানসা বাহিরদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আতর আলী, রামপালের বাইনতলী ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান, সাতক্ষীরার গহর আলী ও মিজানুর রহমান, ডুমুরিয়া সদরের আবদুল মজিদ, কবিরুল ইসলাম, মাগুরখালির অতুল সাহা, ফুলতলার দামোদর ইউপি চেয়ারম্যান সরদার আবুল কাশেম, আটরার শেখ সিরাজুল ইসলাম, শেখ আবদুর রউফ, কয়লাঘাট ইউপি চেয়ারম্যান এন্তাজ আলি, ফুলবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান রুহুল আমিন, রূপসার নৈহাটি ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম ফারুক, শ্রীফলতলার আবুল হোসেন, বটিয়াঘাটার সুরখালি ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তফা মোহাম্মদ হাবিব, শেখ জাহান আলী, ভান্ডরকোট ইউনিয়নের ইউসুফ মোল্লা, আমীর আজম খান, দৌলতপুরের আবু গাজী, হাবিবুর রহমান, দিঘলিয়ার আবদুল গফুর, ফুলবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান ইমরান গাজী প্রমুখ।
এছাড়া সম্প্রতি রাজনৈতিক কিছু খুনের মধ্যে উল্লেখযোগ্যগুলো হচ্ছে গত ১১ জুলাই নগরীর জোড়াগেট এলাকায় সাইদুর রহমান হাওলাদার (২৫) নামে এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। গত ৮ জুলাই নগরীর শের এ বাংলা রোডের আমতলা এলাকার নর্থ খাল ব্যাংক রোডে হারুনুর রশীদ (৩০) নামে এক যুবলীগ কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা। চাঁদাবাজিতে বাধা দেওয়ায় প্রতিপক্ষের সন্ত্রাসীরা ২০ জুন রাত ১০ টার দিকে নগরীর দৌলতপুরস্থ দেয়ানার নিজ বাড়ির সামনে দুর্বৃত্তরা ছাত্রদল কর্মী আবদুলাহ আল ফয়সাল শিপলু মোলাকে কুপিয়ে হত্যা করে। অস্ত্রধারীদের গুলিতে নিহত হয়েছে আওয়ামী লীগ নেতা ও মুক্তিযোদ্ধা শাহাদাৎ হোসেন মোল্যা (৬৫)। গুলিবিদ্ধ হয় ৫ জন। গত ২ জুন রাত ৮টার দিকে দৌলতপুর আঞ্জুমান রোডের একটি মসজিদের অদূরে ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের দৌলতপুর থানার ৫ নম্বর ওয়ার্ড সভাপতি ইকবাল সরোয়ারকে (৪৮) গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। এছাড়া খুলনা জেলা বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক ফুলতলা উপজেলা চেয়ারম্যান আরিফুজ্জামান মিঠু জোড়া হত্যাকান্ড।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।