Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নতুন করে উত্তেজনা রাখাইনে

| প্রকাশের সময় : ২৬ আগস্ট, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। মিয়ানমার সরকার দাবি করেছে, গত বৃহস্পতিবার বিদ্রোহী রোহিঙ্গারা ২৪টি পুলিশ পোস্টে সমন্বিত হামলা চালানোর পাশাপাশি একটি সেনাঘাঁটিতে ঢুকে পড়ার চেষ্টা করার পর পুলিশের সঙ্গে হামলাকারীদের সংঘর্ষ হয়। রাতভর চলা ওই সংঘর্ষে অন্তত ৭১ জন নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ২১ জন রোহিঙ্গা, ১০ জন পুলিশ এবং ১ জন সেনা সদস্য রয়েছে। এদিকে, ২৪টি পুলিশ পোস্টে হামলার ঘটনায় দায় স্বীকার করেছে দ্য আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (এআরএসএ)। ভবিষ্যতে আরও হামলা হবে বলেও সতর্ক করেছে তারা। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা খবরটি জানিয়েছে। গত বছরের অক্টোবরে পুলিশ ক্যাম্পে হামলার ঘটনায়ও এ সংগঠনটিই দায় স্বীকার করেছিল। এদিকে গত বৃহস্পতিবার রাতে ২৪টি পুলিশ পোস্টে হামলা ও সেনাঘাঁটিতে হামলা প্রচেষ্টাকে কেন্দ্র করে পুলিশ ও সশস্ত্র রোহিঙ্গাদের সংঘর্ষে অন্তত ৩২ জন নিহত হয়েছে। দুই সেনা সূত্রের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। কয়েকটি এলাকায় এখনও সংঘাত চলছে। গতকাল শুক্রবার মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বরাত দিয়ে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থার খবরে বলা হয়, কিছু এলাকায় এখনও লড়াই চলছে। উল্লেখ্য, গত বছরের অক্টোবরে একই ধরনের হামলায় ৯ পুলিশ নিহত হওয়ার পর রাখাইন রাজ্যে বড় আকারের সামরিক অভিযান হয়েছিল। তখন সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে হত্যাকাÐ, ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগ করার অভিযোগ ওঠে। জাতিসংঘ মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকাÐকে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের শামিল বলে উল্লেখ করে। চলতি মাসে রাথেটং শহরে নতুন করে ক্লিয়ারেন্স অপারেশন শুরু করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। এ এলাকায় রাখাইন ও রোহিঙ্গা দুই স¤প্রদায়েরই বসবাস। সেকারণে সেখানে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। আর তার মধ্যেই গত বৃহস্পতিবার নিরাপত্তা বাহিনী ও রোহিঙ্গাদের সংঘর্ষ হলো। মিয়ানমার সরকারের তথ্যবিষয়ক কমিটির এক বিবৃতিতে ২৪টি পুলিশ পোস্ট হামলার শিকার হয়েছে বলে তালিকাবদ্ধ করা হয়েছে। পুলিশ এবং সেনাবাহিনীও বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে লড়াই অব্যাহত রাখে বলে উল্লেখ করা হয় বিবৃতিতে। ওই বিবৃতিতে আরও দাবি করা হয়, প্রায় ১৫০ রোহিঙ্গা একটি সামরিক ঘাঁটিতে ঢুকে পড়ার চেষ্টা করলে সেনাবাহিনী তাদেরকে প্রতিহত করে। সেনাবাহিনী জানায়, বিদ্রোহীদের হামলা এবং পাল্টা অভিযানে এক সেনা সদস্য, ১০ পুলিশ ও ২১ বিদ্রোহী নিহত হয়েছে। দুই সেনা সূত্রের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। রাখাইন রাজ্য নিয়ে জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনানের নেতৃত্বাধীন কমিশনের পক্ষ থেকে এক বছরের তদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার একদিন পরই পুলিশের ওপর হামলা হলো। জাতিসংঘ কমিশনের আশঙ্কা, রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার নিশ্চিত না করা হলে এবং এ স¤প্রদায়টি রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে প্রান্তিক থেকে গেলে উত্তরাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্য জঙ্গিবাদের উর্বর ঘাঁটিতে পরিণত হবে। গত আগস্টে মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চি রাখাইন রাজ্যের অস্থিরতা খতিয়ে দেখতে গঠিত একটি কমিশনের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য কফি আনানকে অনুরোধ করেন। রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে তীব্র আন্তর্জাতিক সমালোচনার মুখে দেশটির ক্ষমতাসীন দলের নেত্রী অং সান সু চি এই কমিশন গঠনে বাধ্য হন। দীর্ঘদিন ধরে সা¤প্রদায়িক তিক্ততা চলে আসছে রাখাইন বৌদ্ধ ও রাজ্যটিতে বসবাসকারী রোহিঙ্গা মুসলিমদের মধ্যে। দেশটিতে প্রায় এক মিলিয়ন রোহিঙ্গার নাগরিকত্ব অস্বীকার করা হয়, এমনকি দেশটির সরকার তাদের প্রাচীন নৃগোষ্ঠী হিসেবেও স্বীকৃতি দেয়নি। মিয়ানমারের জাতীয়তাবাদীরা জোর দিয়ে বলে আসছে, রোহিঙ্গারা বাংলাদেশ থেকে আসা অবৈধ অভিবাসী। তারা রোহিঙ্গাদের ‘রোহিঙ্গা’ না বলে ‘বাঙালি’ বলে থাকে। তিক্ততার ফলে ২০১২ সালে রাখাইনে ভয়াবহ মুসলিমবিরোধী সহিংসতা সংঘটিত হয়। ১ লাখের ও বেশি রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে অবস্থান নিতে বাধ্য হয়। রয়টার্স।



 

Show all comments
  • afzal ২৬ আগস্ট, ২০১৭, ১:৪৭ এএম says : 0
    Home Aun sun suchi got her Nobel price in peach. Her army is killing so many innocent people. no one care about it . I would say Nobel comity will think before very well to give Nobel peace price. She has blood on her hand, Nobel peace winner can't do it . If they do and killing innocent they should take Nobel Peace price back/
    Total Reply(1) Reply
    • আবুল হোসেন ২৬ আগস্ট, ২০১৭, ৪:২৫ পিএম says : 4
      রোহিঙ্গাদেরকে সাহায্য করা উচিত।

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রাখাইনে

১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯
১৫ ডিসেম্বর, ২০১৭

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ