পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চট্টগ্রামে সচেতন নাগরিকদের ভাবনা-আলোচনায় সর্বোচ্চ আদালতের রায় পর্যবেক্ষণ নিয়ে আইন-অঙ্গন ও নেতাদের সরগরম কথামালা
‘অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য সারাদেশের জনগণের মাঝে আওয়াজ উঠেছে। মানুষ চায় আগামীতে সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যাপারে ভরসা ও নিশ্চয়তা। জনগণ কোন বিভ্রান্তি চায় না। সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে সর্বোচ্চ আদালতের দেয়া রায়কে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক নেতা-মন্ত্রীসহ বিভিন্নজন বিভিন্ন ধরনের পাল্টাপাল্টি বক্তব্য ও মন্তব্য করে যাচ্ছেন। এরফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে। জনগণ আশা করে আছে আগামী নির্বাচন যেন সুষ্ঠু হয়। অথচ এরমধ্যে আরেক ইস্যুকে সামনে নিয়ে আসা হয়েছে। এর পেছনে জনগণের দৃষ্টিকে ভিন্ন দিকে ফিরিয়ে দেয়া এবং ষড়যত্রমূলক ভিন্ন উদ্দেশ্যও থাকতে পারে। তাছাড়া যারা যেসব কথা এখন বলছেন তারা এতোদিন কোথায় ছিলেন? দেশের স্বার্থের কথা চিন্তা করে তাদের আরও অনেক বেশি দায়িত্বশীল হওয়া উচিৎ। বর্তমান সরকার সবসময়ই বলছে, তারা সাংবিধানিক সরকার এবং গণতান্ত্রিক সরকার। সেই সংবিধান ও গণতন্ত্রকে সমুন্নত রাখতেই হবে। সকল বিভ্রান্তির বেড়াজাল থেকে বেরিয়ে এসে আমাদেরকে একটা গ্রহণযোগ্য ভাল নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে’।
উপরোক্ত মতামত ব্যক্ত করেছেন আমেরিকা প্রবাসী কক্সবাজারের সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান বিশিষ্ট সমাজসেবী মোহাম্মদ আল জোবায়ের মানিক।
দেশের হালচাল সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি গতকাল (মঙ্গলবার) ইনকিলাবের কাছে এসব কথা বলেন। চট্টগ্রামের বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা মোহাম্মদ খালিদ জহির এ প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘রাজনীতি তো এখন রাজনীতির সঠিক জায়গায় নেই। রাজনীতি চলে গেছে চায়ের আড্ডায়। যার কথার জোর বেশি তার জিৎ, অপরের হার। সরকারি দল আওয়ামী লীগ বলি আর মাঠের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি বলি, আরও যারা দায়িত্বশীল পদে আছেন তাদের অনেকেরই এখনকার গরম গরম বক্তব্যগুলো দেশ ও জনগণের জন্য কোনই লাভ বা কল্যাণ বয়ে আনবে না। তারা কি জনগণের স্বার্থের কথা ভাবছেন? বন্যার্ত লাখ লাখ মানুষের অসহায় অবস্থার দিকে তাকাচ্ছেন? আমি মনে করি বিচার বিভাগকে স্বাধীন ভূমিকায় থাকতে দিতে হবে। তবে সবার দায়-দায়িত্ববোধের বিষয়টিও স্মরণ থাকা দরকার’।
বন্দরনগরীর একটি বেসরকারি কলেজ শিক্ষক আনোয়ার হোসেন জানান, ‘ষোড়শ সংশোধনী বাতিলে প্রধান বিচারপতিসহ আপিল বিভাগের প্রদত্ত রায়ের বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক নেতা, মন্ত্রী-এমপি, সাবেক বিচারপতি, আইনজীবীদের কারো কারো বক্তব্য ও মন্তব্য থেকে পাল্টপাল্টি অবস্থান পরিস্কার। এরফলে রাজনীতির পরিবেশ দিন দিন ঘোলাটে হয়ে যাচ্ছে। এ কারণে আগামীতে নির্বাচনী পরিবেশও ঘোলাটে হয়ে যেতে পারে। দেশের জনগণের মাঝে এসব কারণে শঙ্কা সৃষ্টি হচ্ছে। সরকারকে আরও ধৈর্যশীল হতে হবে। অসহিষ্ণু হলে চলবে না’।
সদ্য এমবিএ পাস মেধাবী ছাত্রী শাহ্রিন জাহির তানি তার মতামতে ইনকিলাবকে জানান, মাথা গরম করে পাল্টাপাল্টি মন্তব্য আর বক্তব্য দিয়ে দেশের তো কোন লাভ নেই। কারণ এসব নিয়ে যতই বাড়াবাড়ি হবে ততই দেশ অশান্তি ও অরাজকতার দিকে যেতে পারে। যা কারও কাম্য নয়। জনগণ চায় আগামীতে একটি সুষ্ঠু শান্তিপূর্ণ নির্বাচন। বিচার বিভাগ যেহেতু পৃথকীকরণ ও স্বাধীন করা হয়েছে তার স্বাধীনতা বজায় থাকতে দেয়া উচিৎ। এক্ষেত্রে সরকারের হস্তক্ষেপ কাম্য নয়। তবে কোন ধরনের আপত্তি থাকলে তা যথাযথ আইন-বিধি অনুযায়ী আদালতের কাছে উত্থাপন করতে হবে এবং এর মাধ্যমেই সমাধান খুঁজতে হবে। অন্যকোন পন্থা কিংবা চাপ প্রয়োগ করে নয়’।
এদিকে বন্দরনগরীসহ বৃহত্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলজুড়ে কিছুদিন ধরে রাজনীতির বাতাস পাল্টে গেছে। ভোটের রাজনীতি নিয়ে আলোচনার স্থানটি এখন দখল করে নিয়েছে সর্বোচ্চ আদালতপাড়াকে ঘিরে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্নজনের ‘গরম’ বাহাস। কয়েক মাস যাবত চট্টগ্রামে নির্বাচনমুখী রাজনীতির হাওয়া জোরালো হচ্ছিল। গেল পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে প্রধান দুই দল আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির বাঘা বাঘা নেতা-মন্ত্রী-এমপি সাবেক মন্ত্রী এমপি এবং মনোনয়ন প্রত্যাশী নতুন মুখের নয়া নেতারা চাটগাঁর ঐতিহ্যবাহী ও শানদার ‘মেজ্জান’ (মেজবান) আয়োজন করে ভোটের পলিটিক্সে জোর কদমে নেমে পড়েন। এরফলে তৃণমূলে রাজনীতি চাঙ্গা হয়ে উঠে। নেতা-কর্মীরা নিজ নিজ এলাকায় জনসাধারণের আরো কাছাকাছি যাওয়ার চেষ্টায় তৎপর হয়ে উঠেন। এভাবে রাজনীতির অঙ্গনে দীর্ঘ ভাটা কেটে গিয়ে গতিশীলতা সৃষ্টি হয়। সামনে আসছে পবিত্র ঈদুল আযহা। কিন্তু এর আগেই বদলে গেছে মাঠ রাজনীতির কিছুদিন আগের দৃশ্যপট।
আন্দোলন-সংগ্রাম-রাজনীতির সূতিকাগার বলা হয় চট্টগ্রামকে। চট্টগ্রাম অঞ্চলের মানুষ সেই ব্রিটিশ আমল থেকেই অতিমাত্রায় রাজনীতি সচেতন। এখন চাটগাঁবাসীর মাঝে এখানে-সেখানে আলাপচারিতায় হরেক বিষয়ই ঘুরপাক খাচ্ছে। কেননা গত ১ আগস্ট সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী সর্বোচ্চ আদালতের আপিল বিভাগের রায়ে বাতিল হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে দেশের দুই প্রধান রাজনৈতিক শিবিরের শীর্ষ নেতা-মন্ত্রী-এমপি থেকে শুরু করে বিভিন্ন স্তরের নেতা ছাড়াও সাবেক বিচারক, আইনজীবী, বুদ্ধিজীবী, সুশীল সমাজের ব্যক্তিবর্গ বিভিন্ন ধরনের বক্তব্য আর পাল্টা বক্তব্য দিয়েই চলেছেন। আদালতের রায়ের পর্যবেক্ষণ নিয়ে আইন-অঙ্গন ও নেতাদের সরগরম কথামালায় দিন দিন জটিল থেকে জটিলতর হয়ে উঠছে রাজনীতির পরিবেশ মাঠ পর্যায় পর্যন্ত। নির্বাচনমুখী রাজনীতির দৌঁড়ঝাঁপ এখন বলতে গেলে থমকে গেছে। বিশেষ করে চট্টগ্রামের খুব সচেতন নাগরিকদের ভাবনা-আলোচনায় কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে আসছে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, আইনজীবী ও সুশীল সমাজের বাহাস আর কতদিন এভাবে চলতে থাকবে? কোথাকার পানি কোথায় গিয়ে গড়াবে? মিলছে না এ ধরনের হরেক প্রশ্নের জবাব। আর সেই সাথে সচেতন-সতর্ক জনগণের মনে নানামুখী উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা, শঙ্কা-সংশয় ভর করছে নিকট অতীতের তিক্ত অভিজ্ঞতায়। বেড়েই চলেছে বিভ্রান্তি কিংবা বিভ্রাট।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।