Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯ আশ্বিন ১৪৩১, ২০ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

প্রতিবেশী দমিয়ে রাখার সেকেলে মানসিকতা বর্তমান যুগে অচল

ভারতকে আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করার আহ্বান গ্লোবাল টাইমস’র

| প্রকাশের সময় : ১৮ আগস্ট, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : প্রতিবেশী ছোট দেশগুলোকে নিয়ন্ত্রণ ও তাদের সার্বভৌমত্ব দমিয়ে রাখার জন্য ভারতের সেকেলে মানসিকতা এই যুগে অচল। ভারতকে আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করতে হবে। চীনা কমিউনিস্ট সরকার নিয়ন্ত্রিত সংবাদপত্র গেøাবাল টাইমস-এ ভারতকে এমন পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এতে বলা হয়, চীনের সফররত ভাইস-প্রিমিয়ার ওয়াং ইয়াং সম্প্রতি নেপালের উপ-প্রধানমন্ত্রী বিজয় কুমার গাচ্ছাদরের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন। চীন ও নেপালের মধ্যে বিচক্ষণ সহযোগিতা এগিয়ে নিতে যৌথ প্রচেষ্টা চালানোর ব্যাপারে তারা একমত হন এবং দু’দেশের মধ্যে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি সই হয়। পশ্চিমা সংবাদ মাধ্যমে ওয়াং-এর সফরের অর্জন তুলে ধরার পাশাপাশি এ নিয়ে ভারতের উদ্বেগের কথাও জানিয়েছে। ফিনানশিয়াল টাইমসের চীনা সংস্করণের এক নিবন্ধে বলা হয়েছে যে চীনের সঙ্গে নেপালের ঘনিষ্ঠতা ভারতকে বিচলিত করে তুলেছে। অন্য বৃহৎ শক্তিগুলোর সঙ্গে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সম্পর্ক উন্নয়ন নিয়ে নয়া দিল্লির উদ্বেগ আসলে একটি বিকৃত ধারণা। দক্ষিণ এশিয়ার ব্যাপারে তাদের ধারণা এই আধুনিক যুগের উপযোগী নয়। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শক্তি চলে যাওয়ার পর এই অঞ্চলে ভারত একটি প্রভাবশালী দেশ হিসেবে আবির্ভূত হয়। স্নায়ুযুদ্ধের সময় বড় শক্তিগুলো অন্য অঞ্চল নিয়ে ব্যস্ত ছিলো। ভারতের আঞ্চলিক আধিপত্যবাদের দিকে নজর দেয়ার সময় তাদের ছিলো না। এখন বিশ্বায়নের যুগ, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো নতুন করে জেগে উঠছে। প্রতিবেশী ছোট দেশগুলোকে নিয়ন্ত্রণ ও তাদের সার্বভৌমত্ব দমিয়ে রাখার জন্য ভারতের সেকেলে মানসিকতা এই যুগে অচল। সব রাষ্ট্রের একটি মৌলিক স্বার্থ হলো অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন। আর বৈদেশিক সম্পর্ক বিস্তৃত করা ওই উন্নয়নের পূর্বশর্ত। আন্তর্জাতিক সম্পর্কে ভূ-রাজনীতির অপ্রতিরোধ্য তাৎপর্য এখন আর আগের মতো নেই। আন্তঃরাষ্ট্র সম্পর্কের বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এখন আর এটি প্রাথমিক উদ্বেগ বা বিবেচনা হিসেবে কাজ করছে না। ভারতের প্রতিবেশী ছোট দেশগুলো সদিচ্ছা থেকে চীনের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলছে। এতে কোনো তৃতীয় দেশকেও টার্গেট করছে না বেইজিং। কিন্তু ভারতের পুরনো ধাঁচের মানসিকতা এই অরাজনৈতিক সম্পর্কটিকে ভূ-রাজনীতির দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করছে। ভারত জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচটি স্থায়ী সদস্য দেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনে ভুটানকে অনুমতি দেয়নি। বিশ্বমঞ্চে এই স্বেচ্ছাচারিতার আদৌ কোনো যুক্তি নেই। ভুটান বা নেপালÑ কেউই ভারতের এই অস্বাভাবিক নিয়ন্ত্রণ মেনে নিতে ইচ্ছুক নয়। ভারতকে তার স্নায়ুযুদ্ধকালীন ও আঞ্চলিক আধিপত্যবাদী মানসিকতা পরিহার করতে হবে। তাহলে তারা দ্রæত উন্নয়নশীল চীনকে হুমকির বদলে বহুসংখ্যক সুযোগ হিসেবে দেখতে পাবে। তাহলে চীন সীমান্তে একটি সড়ক নির্মাণে দেশটির মনে সংকটে পড়ার অনুভূতি সৃষ্টি হবে না। তখন চীনের নির্মাণ কাজে বাধা দিতে সেনাও পাঠাতে হবে না। ভারতের মানসিকতা এতাটাই হীন যে সীমান্তের একটি সড়ক চীন ও ভারতের মধ্যে কৌশলগত দৃশ্যপট বদলে দেবে বলে তারা ভাবছে। দক্ষিণ এশিয়ার ছোট দেশগুলোকে নিজের বাড়ির পেছনের আঙ্গিনা বলে ভারত মনে করে। এটা কোনো বৈশ্বিক দৃষ্টিভঙ্গী নয়। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রও ল্যাটিন আমেরিকার দেশগুলোকে বহির্বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে বাধা দেয় না। সাবেক সোভিয়েত প্রজাতন্ত্রগুলোর বৈশ্বিক কূটনৈতিক তৎপরতায় বাধা দিতে রাশিয়া এগিয়ে আসে না। দক্ষিণ এশিয়ার ক্ষুদ্র দেশগুলো ও বাইরের দুনিয়ার ব্যাপারে মনোভাব বদলাতে হবে ভারতকে। দুনিয়া বিপদ আর চ্যালেঞ্জে পরিপূর্ণ এমন মনোভাব পরিহার করে দেশটিকে উদার মানসিকতা গ্রহণ করতে হবে। গেøাবাল টাইমস।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ