Inqilab Logo

বুধবার ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ২৯ কার্তিক ১৪৩১, ১১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আদালতের রায় নিয়ে বাকযুদ্ধ ঘোলাটে হচ্ছে রাজনীতি

দক্ষিণ-পশ্চিমের বিভিন্ন শ্রেণী ও পেশার মানুষের ভাবনা

| প্রকাশের সময় : ১৫ আগস্ট, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মিজানুর রহমান তোতা : কোনো সঙ্কট কি সামনে অপেক্ষা করছে-আদালতের রায় নিয়ে দায়িত্বশীলদের বাকযুদ্ধ তেমন আশঙ্কাই বদ্ধমূল হচ্ছে। রাজনীতিতে ঘুরপাক খাচ্ছে নানা প্রশ্ন। ক্রমাগত এর ডালপালা গজাচ্ছে। নির্বাহী বিভাগ ও বিচার বিভাগ এবং প্রধান দু’টি রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে বাড়ছে বিশ্বাস ও আস্থার চরম সঙ্কট। কান পাতলে শোনা যাচ্ছে নানা গুঞ্জন।
জল্পনা কল্পনায় এখন মশগুল রাজনীতির মাঠ। অথচ ক’দিন আগেও মাঠ সরগরম ছিল জাতীয় নির্বাচনী আলোচনায়। এখনো আছে, তবে আলোচনায় প্রাধান্য পাচ্ছে ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়। শহর, বন্দর, গ্রামে, চায়ের দোকানে ও মোড়ে মোড়ে রাত অবধি আড্ডা ও আলোচনায় উঠে আসছে রায় নিয়ে জনপ্রতিনিধি ও দায়িত্বশীলদের পাল্টাপাল্টি বক্তব্য ও তর্কবিতর্ক।
অধিকাংশেরই কথা সর্বোচ্চ আদালতের রায় নিয়ে দায়িত্বশীলদের বাকযুদ্ধ রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে ঘোলাটে করছে। সবখানে সমানতালে এটি হয়েছে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। গত দু’দিন দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মাঠ রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ এবং বিভিন্ন শ্রেণী ও পেশার মানুষের সাথে আলোচনায় এই চিত্র ফুটে উঠেছে। শুধু সাধারণ মানুষ নয়, রাজনৈতিক নেতা, কর্মী ও সমর্থক এবং বিভিন্ন শ্রেণী ও পেশার মানুষের মধ্যেও কেন যেন নানা প্রশ্ন জেঁকে বসছে। রাজনীতি সচেতন মানুষ সামগ্রিক বিষয়ে গভীরভাবে পর্যালোচনা, পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ করছেন। বলছেন শীর্ষপর্যায়ের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের বাকযুদ্ধ মোটেও সুখকর নয়।
সচেতন ও পর্যবেক্ষক মহলের মতে, ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়কে কেন্দ্র করে রাজনীতির মাঠ হঠাৎ গরম হয়ে উঠেছে। এতে সাধারণ মানুষের ভাবনার অন্ত নেই। তাদের কথা, রায় নিয়ে নানা বক্তব্যে রাজনৈতিক সংস্কৃতি, শিষ্টাচার, সহনশীলতা দারুষভাবে অনুপস্থিত। নানামুখী বাকবিতন্ডায় নিঃসন্দেহে বিনষ্ট হচ্ছে রাজনৈতিক ও আদালত অঙ্গনের সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ। বিশেষ করে সর্বোচ্চ আদালতের রায়কে বিদ্বেষতাড়িত, আপত্তিকর অসিংবিধানিক বলা, বঙ্গবন্ধু আইনজীবী পরিষদের প্রধান বিচারপতির পদত্যাগ দাবি ও বিষোদগার করা এবং কোর্টে আইনজীবীদের উত্তেজনা, মাঠে দুইপক্ষের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচী দেখেশুনে লোকজন বলাবলি করছেন এসব মোটেও ভালো লক্ষণ নয়। একে অপরের বোঝাপড়ার রসায়ন যুক্তিযুক্ত হওয়া বাঞ্ছনীয়। এতে পরস্পরের দূরত্বকে আরো বাড়িয়ে তুলছে। মাঠ রাজনীতির বিশ্লেষকদের বক্তব্য, আদালতের রায় নিয়ে পাল্টাপাল্টি বক্তব্যের চেয়ে আদালতেই মতামত উপস্থাপন করা যেত। আদালতের বিষয় মাঠে আনা যুক্তিসঙ্গত হয়নি। এখন আদালত এবং বিভাজিত রাজনীতি এই ত্রিশঙ্কু অবস্থার মধ্যে পড়েছে পুরো বিষয়টি। এই তর্ক বিতর্কের শেষ কোথায় গিয়ে ঠেকবে-এমন ভাবনার অন্ত নেই সর্বমহলে।
খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম কমিটির সভাপতি শেখ অশরাফ উজ জামান মন্তব্য করেন, গঠণমূলক সমালোচনা সবার কাছ থেকেই কাম্য। সর্বোচ্চ আদালতের রায় নিয়ে বিতর্ক সমালোচনা একেবারেই অযৌক্তিক বলে মনে করি। দুই দলই রাজনীতি ঘোলা করছে। এতে তিক্ততা বাড়ছে। পরিস্থিতি হচ্ছে টালমাটাল। আমাদের সবারই মাথায় রাখতে হবে আমরা যাই কিছু করি না কেন অস্থিরতার জন্ম দেয়া যাবে না। এভাবে ঠেলাঠেলি করলে অশান্তি বাড়ে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের রাজনৈতিক, সামাজিক নেতা, শিক্ষক, সাংবাদিক, আইনজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণী ও পেশার অনেকেই ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেছেন, আদালতের রায় নিয়ে মেঠো ঝগড়ায় রূপ দেওয়া ঠিক নয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রাজনীতি

২৩ ডিসেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ